বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সিবিআইয়ের (CBI) হাতে গ্রেফতার অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। গরু পাচার মামলায় তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসায় উত্তাল বঙ্গ রাজনীতি। এর মাঝেই গতকাল বীরভূম জেলা সভাপতির রাইস মিলে হানা দিয়ে একাধিক বিলাসবহুল গাড়ির সন্ধান পায় তদন্তকারী অফিসাররা। পরবর্তীতে অনুব্রতর বিরুদ্ধে আবার বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসেন তাঁর ঘনিষ্ঠ দুই ব্যবসায়ী আর এবার এই সকল প্রসঙ্গকে হাতিয়ার করে কটাক্ষ ছুড়ে দিলেন বিজেপির (BJP) সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)।
উল্লেখ্য, গতকাল অনুব্রত মণ্ডলের রাইস মিলে তল্লাশি চালানোর পর একাধিক বিস্ফোরক তথ্য সামনে আসে। এরপরই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে তোপ দেগে বসেন প্রবীর মণ্ডল ও অরূপ চক্রবর্তী নামে তাঁর ঘনিষ্ঠ দুই ব্যবসায়ী। অবশেষে এদিন আসরে নামলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। একটি ফেসবুক পোস্ট করে তিনি বলেন, “আপনি কি এই রাজ্যের বাসিন্দা? আপনি কি সরকারি টেন্ডার পেয়ে ব্যবসার কথা ভাবছেন? তাহলে জেনে রাখুন, বৈধভাবে টেন্ডারের বরাত তো আপনি পাবেন না, এমনকি শাসক দলের নেতাদের কোটি কোটি টাকা দামি গাড়ি উপহার দিয়েও পাবেন কিনা, ঠিক নেই।” পরবর্তীতে বাংলার মানুষকে সতর্ক করে দিলীপবাবু জানান, “আপনাকে প্রাণের ভয় দেখানোর পাশাপাশি গাজার কেস দেওয়া হতে পারে। এর মাধ্যমে তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্নীতির মুকুটে জুড়ল আরো একটি পালক।”
উল্লেখ্য, গতকাল অনুব্রত মণ্ডলের ‘ভোলে বোম’ নামে একটি রাইস মিলে হানা দেয় সিবিআই। প্রথমে ঢুকতে বাধা দেওয়া হলেও পরবর্তীতে দীর্ঘ টালবাহানার পর অবশেষে সেখানে প্রবেশ করতেই হতবাক হয়ে পড়েন তদন্তকারী অফিসাররা। রাইস মিলের ভেতর একাধিক বিলাসবহুল গাড়ি পার্কিং দেখে চমকে যান তারা। এত বিপুল পরিমাণ গাড়ি সেখানে কেন রাখা হয়েছিল কিংবা সেগুলি আদতে কার, সে প্রসঙ্গে একাধিক প্রশ্ন চিহ্ন উঠে পড়েছে। একই সঙ্গে দীর্ঘ ছয় ঘন্টা ধরে তল্লাশির শেষে উঠে আসে আরো এক বিস্ফোরক তথ্য!
সিবিআই সূত্রের খবর, রাইস মিলের ডিরেক্টর পদে নাম রয়েছে অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ির পরিচারকের। গতকাল সিবিআই তল্লাশি মাঝেই আবার অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করে বসেন তাঁর ঘনিষ্ঠ দুই ব্যবসায়ী। গতকাল রাইস মিলের ভেতরে যে সকল গাড়িগুলি পাওয়া গিয়েছে, তার মধ্যে একটি অনুব্রত মণ্ডলকে দিয়েছিলেন বলে দাবি করেন এক ব্যবসায়ী।
পরবর্তীতে তিনি জানেন, “ঠিকাদারের টেন্ডার পাওয়ার জন্য অনুব্রত মণ্ডল প্রায় সব কাজ করে দিয়েছিলেন। কিন্তু তার জন্য উনি দশ কোটি টাকা চেয়ে বসেন। তবে অত টাকা দিতে না পারলেও পরবর্তীতে ৪৬ লক্ষ টাকা দিয়ে একটি গাড়ি কিনে দিয়েছিলাম। এর পাশাপাশি অনুব্রত এবং তাঁর দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকে মোট পাঁচ কোটি টাকারও বেশি অর্থ প্রদান করা হয়। তারপরেও উনি হুমকি দিয়ে জানান, আগে ঠিক কর, গাড়িতে চড়বি নাকি প্রাণে বাঁচবি। এরপর উনি গাঁজার কেস দেওয়ার ভয়ও দেখান।” ফলে সব মিলিয়ে গরু পাচার মামলায় অস্বস্তি ক্রমশ বেড়ে চলেছে তৃণমূল নেতার। এই অবস্থায় দিলীপ ঘোষের কটাক্ষ বর্তমান পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত করে তুলবে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।