বাংলাহান্ট ডেস্ক : মাত্র ক’দিন আগেই কাশফুল দিয়ে বালিশ তৈরির শিল্পের নিদান দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বৃহস্পতিবার বিকেলে সিঙ্গুরের মোটরগাড়ি কারখানা না-হওয়া সেই পরিত্যাক্ত জমি দেখতে আসেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ( Dilip Ghosh)। এখানে এক কাণ্ড করে বসেন তিনি। ফেরার আগে সেই জমি থেকে কাশফুল তুলে একটি বালিশের কভারে ভরে নিয়ে গেলেন। এই কাণ্ড করে আদতে দিলীপ ঘোষ মুখ্যমন্ত্রীকেই কটাক্ষ করতে চাইলেন।
সিঙ্গুর থেকে কাশফুল নিয়ে দিলীপ মুখ্যমন্ত্রীকে কার্যত উপহাস করলেন বলেই ধারণা রাজনৈতিক মহলের। কাশফুল দিয়ে বালিশ তৈরির সম্ভাবনা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দিলীপবাবু বলেন, ‘সেই প্রযুক্তির কথা জানি না। মুখ্যমন্ত্রী বলতে পারবেন। টাটার কারখানা বন্ধ করে দিয়ে, ভোট নিয়ে এখানে সরকার এসেছিল। সেই সরকার এখানে কী করেছে? শিল্পও নেই, কৃষিও নেই। কেবল কাশফুল আছে। সিঙ্গুরের মানুষ সেই কাশফুলের দিকে তাকিয়ে পুজোর দিকে এগোচ্ছেন। যাঁরা শিল্পের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন, তাঁরা ন্যানো শিল্প বন্ধ করে দিয়ে কাশফুল দিয়ে শিল্প করার স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। ঘুগনি-মুড়ি শিল্পের কথা বলছেন। এই দিয়ে বাংলা এগোবে?’
রাজ্যে ক্ষমতায় এলে সিঙ্গুরে শিল্প গড়ার আশ্বাস আগেই দিয়েছিল বিজেপি। এ দিন এই প্রশ্নের জবাবে দিলীপ বলেন, ‘সারা দেশে আমরাই শিল্প করেছি। সিঙ্গুর থেকে ন্যানো চলে গিয়েছে গুজরাতে। সেখানে বিজেপির রাজত্ব ছিল বলে ন্যানো তৈরি হয়েছে। বাংলার মানুষ চড়েছেন। বিজেপিই একমাত্র শিল্প করতে পারে।’
ঠিকমতো বাজার ধরতে না পেরে বন্ধ হয়ে যায় ন্যানো উৎপাদন। তবে, গুজরাতের সানন্দের ওই কারখানা কিন্তু বন্ধ হয়নি। ওই কারখানা থেকেই টাটা মোটর্স ব্যাটারিচালিত গাড়ি তৈরি করছে। এ নিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘এখানেও ন্যানো না হলে, অন্য শিল্প হতে পারত। লোকে আশা করে তিন ফসলি জমি দিয়েছিলেন। চাকরি ও ব্যবসা হবে বলে। কিছুই হল না। জমিটাই নষ্ট হল। ফসল নষ্ট হল। রাজ্য সরকারের দায়িত্ব জমিটার সদ্ব্যবহার করা।’
দিলীপের ঘোষের এই অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক দিলীপ যাদব। তিনি বলেন, ‘সিঙ্গুর নিয়ে বিজেপির না ভাবলেও চলবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওখানকার চাষিদের সঙ্গেই আছেন। রাজ্য জুড়ে যে শিল্পায়নের প্রক্রিয়া চলছে, দিলীপবাবুরা তা দেখতে পাচ্ছেন না।’