বাংলাহান্ট ডেস্ক: সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court of India) বিচারপতি হিসেবে যোগ দিতে চলেছেন আরও এক বঙ্গসন্তান। শীর্ষ আদালতের কলেজিয়ামের সুপারিশের প্রায় আড়াই মাস পর তাঁর বিচারপতি হিসেবে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করল কেন্দ্র। এই সিদ্ধান্তের ফলে কলকাতার ভূমিপুত্র দীপঙ্কর দত্তকে সুপ্রিম কোর্টের অন্যতম বিচারপতি হিসেবে পাবে দেশ।
আরও এক জন বাঙালি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে যোগ দিতে চলেছেন। ইতিমধ্যেই সেখানে কাজ করছেন কলকাতা হাই কোর্ট থেকে আসা বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু। এছাড়াও বিচারপতি হৃষীকেশ রায়ও রয়েছেন। কিন্তু তিনি কাজ শুরু করেছিলেন গুয়াহাটি হাই কোর্টে।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর দীপঙ্কর দত্তকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ করার সুপারিশ করা হয়েছিল। তিনি তখন বম্বে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসেবে কাজ করছিলেন। তাঁর জন্য সুপারিশ করেছিল প্রধান বিচারপতি উদয় উমেশ ললিতের নেতৃত্বে থাকা সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম।
তবে সরকারের সঙ্গে কলেজিয়ামের একটি টানাপোড়েনের জন্য তাঁর নিয়োগে এত দেরি হল। বিচারপতিদের নিয়োগ নিয়ে সরকারের টালবাহার নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিচারবিভাগ। তবে কেন্দ্রের বিজ্ঞপ্তির পর দীপঙ্কর দত্তের বিচারপতি হিসেবে যোগ দেওয়ায় আর কোনও বাধা রইল না।
উল্লেখ্য, ২০৩০ সালের ফেব্রুয়ারিতে দেশের দ্বিতীয় প্রবীণতম বিচারপতি হিসেবে অবসর নেবেন তিনি। প্রসঙ্গত, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ বছরের আইনের কোর্সের প্রথম ব্যাচের স্নাতক ছিলেন বিচারপতি দত্ত। ১৯৮৯ সালে কলকাতা হাই কোর্টে আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করেন।
রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারের কৌঁসুলি হিসেবে সুপ্রিম কোর্টেও ওকালতি করেছেন তিনি। পাশাপাশি, রাজ্যের স্কুল সার্ভিস কমিশন-সহ শিক্ষা জগতের বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের আইনজীবীর দায়িত্ব নিয়েছেন। ২০০৬ সালে কলকাতা হাই কোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হন দীপঙ্কর দত্ত।
এরপর ২০২০ সালে বম্বে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি হন। কলকাতা হাই কোর্ট থেকে বম্বে হাই কোর্টে তাঁর যখন বদলি হয়, তখন করোনা পরিস্থিতি চলছে। তাই বিমান, ট্রেন সব বন্ধ ছিল। এই অবস্থায় গাড়িতে চেপেই প্রায় দু’হাজার কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে মুম্বই পৌঁছেছিলেন।
পাড়ুই মামলায় তৃণমূলের অনুব্রত মণ্ডলের প্রতি পুলিশ পক্ষপাতিত্ব করছে। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি থাকাকালীন এই প্রশ্ন তোলেন দীপঙ্কর দত্ত। বম্বে হাই কোর্টের বিচারপতি হিসেবে কোভিডের সময়ে চিকিৎসা সংক্রান্ত সাহায্য থেকে শুরু করে লকডাউনে সমস্যায় পড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের সুরাহা দেওয়া নিয়ে রায় দিয়েছিলেন।
এছাড়াও সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যু নিয়ে সংবাদমাধ্যমে কাটাছেঁড়া্র মতো গুরুত্বপূর্ণ মামলায় রায় দিয়েছেন তিনি। তাঁর নিয়োগের ফলে সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতিদের ৩৪টি অনুমোদিত পদের মধ্যে বিচারপতিদের সংখ্যা ২৭ থেকে বেড়ে ২৮ জন হতে চলেছে।