যোগ্য অথচ চাকরি নেই! প্রতিবাদে “মৃত” সেজে বিক্ষোভ টেট উত্তীর্ণ চাকরি প্রার্থীদের

বাংলা হান্ট ডেস্ক: তাঁরা প্রত্যেকেই প্রাইমারি টেট পরীক্ষা পাস করেছেন। অর্থাৎ সকলেই যোগ্য চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে দিয়েছিলেন প্রতিশ্রুতিও। কিন্তু, তাও মেলেনি চাকরি! তাই, আত্মহত্যার পথ ছাড়া আর গতি নেই প্রার্থীদের। এই দাবি জানিয়েই এবার “প্রতীকী” মৃতদেহ নিয়ে গত শুক্রবার মেদিনীপুর শহরে বিক্ষোভ দেখালেন ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ বেকার যুবক যুবতীরা।

পাশাপাশি, প্রার্থীরা অভিযোগ জানিয়েছেন যে, দিনের পর দিন চাকরি না-পাওয়াতে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে তাঁদের। বয়স বেড়ে যাওয়ার ফলে অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনাও। এমনকি, সংসার চালাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তাঁরা।

এছাড়াও, বিক্ষোভকারীরা দাবি করেছেন যে, তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন যে, টেট পাস করা বেকার যুবক-যুবতীদের চাকরিতে নিয়োগ করবেন। কিন্তু তিনি ক্ষমতায় আসার পর তাঁর প্রতিশ্রুতি রাখছেন না বলে অভিযোগ জানিয়েছেন প্রার্থীরা।

পাশাপাশি, তাঁরা আরও অভিযোগ করেছেন যে, মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি মতো রাজ্যে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মাধ্যমে যেখানে মহিলাদের ৫০০,১০০০ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে, সেখানে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি তিনি কেন রক্ষা করছেন না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন বিক্ষোভকারীরা ৷

শহর জুড়ে চলা এই বিক্ষোভে চাকরি প্রার্থীদের সঙ্গে যোগ দেন তাঁদের অভিভাবক-অভিভাবিকারাও। এদিকে, প্রার্থীদের এই দাবি পূরণ না হলে তাঁরা নবান্নের সামনে আত্মঘাতী হওয়ার হুমকিও দিয়েছেন। বিক্ষোভের পাশাপাশি, পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা শাসকের কাছে ডেপুটেশনও জমা দেন বিক্ষোভকারীরা ৷

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০২০ সালের নভেম্বরের সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, “২০ হাজার টেট পাস আছে। আমরা ধাপে ধাপে সকলকেই নিয়ে নেব।” এদিকে, রাজ্যজুড়ে ১৬ হাজার ৫০০ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল গত বছর থেকেই।

WhatsApp Image 2022 02 12 at 2.26.53 PM

যদিও, এই প্রসঙ্গে পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য জানিয়েছিলেন যে, “আর শুধুমাত্র ৭৩৮ টি শূন্যপদ বাকি রয়েছে কেস পিটিশনারদের জন্য। সেই নিয়োগ সম্পন্ন হলেই প্রক্রিয়াটি শেষ হবে।” তবে, এই যুক্তিই মানতে নারাজ প্রার্থীরা।

তাঁদের মতে, নিয়োগ হয়েছে মাত্র সাড়ে ১২-১৩ হাজার প্রার্থী। সেই অনুযায়ী, আরও প্রায় ৮ হাজার জনের নিয়োগ বাকি রয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রার্থীরা। এই দাবিতেই বছরখানেক যাবৎ আন্দোলন চালিয়ে আসছেন যোগ্য প্রার্থীরা।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর