বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত কয়েক মাস থেকে লাগাতার নিয়োগ দুর্নীতির (Recruitment Scam) অভিযোগ সামনে আসায় মুখ পুড়েছে রাজ্যের। শুক্রবার গ্ৰুপ সি-র চাকরি বাতিলের তালিকা সামনে আসতেই আরেক শোরগোল। দুর্নীতির তালিকায় একের পর এক শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদের যোগ। রাজ্যের মন্ত্রীর ভাই থেকে তৃণমূল নেতার স্ত্রী থেকে শুরু করে বিধায়কের মেয়ে, বাতিলের তালিকায় উঠে এসেছে শাসকদলের পরিজনদের নাম।
হাইকোর্টের নির্দেশে এসএসসি গ্রুপ-সি (Group-C) পোস্টে চাকরি গিয়েছে তৃণমূলের (Trinamool Congress) দুর্গাপুরের আইএনটিটিইউসির-সহ সভাপতির ছেলে অর্ণব মুখোপাধ্যায়ের। ২০১৭ সালের ৫ মার্চ এসএসসি গ্রুপ-সির চাকরির লিখিত পরীক্ষা দিয়েছিল সে।পরীক্ষায় পাশ করে কম্পিউটার টাইপিং ও ভাইবায় উত্তীর্ণ হয়ে ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে দুর্গাপুর প্রোজেক্টস্ টাউনশিপ বয়েজ হাইস্কুলে চাকরি পায় সে।
জানা গিয়েছে, গ্রুপ সি-র পরীক্ষায় ৬০টি প্রশ্নের মধ্যে ৬০টিরই উত্তর দিয়েছিলেন তিনি। তারপর স্থানীয় ওই স্কুলেই ক্লার্কের চাকরি পেয়েছিলেন। ২০১৮ সাল থেকে সেখানেই কর্মরত অর্ণব মুখোপাধ্যায়। ৫ বছর ধরে কাজ করেছেন, বেতনও নিয়েছেন। হাইকোর্টের নির্দেশে সেই অর্ণবেরই চাকরি গেল শনিবার। তার বাবা জানান, ২০১৫ সালে বিটেক পাশ করে ইঞ্জিনিয়ার হয়েছিলেন অর্ণব। পরে গ্রুপ সি-র পরীক্ষায় বসে চাকরি হয় তার।
ছেলের চাকরি যাওয়া প্রসঙ্গে সমীরবাবুকে প্রশ্ন করা হলে উল্টে তিনি বলেন, “আমি কখনোই চাইনি আমার ছেলে এই চাকরি করুক।” পূর্বে অর্ণব উচ্চ বেতনে বেঙ্গালুরুতে আইটি সংস্থায় চাকরি করত বলেও জানান তিনি। প্রসঙ্গত, সমীরবাবু এলাকার বড় তৃণমূল নেতা হিসাবে পরিচিত। তবে প্রশ্ন উঠছে অর্ণব ইঞ্জিনিয়ারিং ছেড়ে গ্ৰুপ সি-তে গেল কেন? দাবি, বাবা মায়ের অসুস্থতা ও তাদের দেখাশোনা করতেই ছেলে চাকরি ছেড়ে বাড়ি আসে। তারপর বাড়ির কাছের স্কুলে চাকরি পান।
এদিন জোর গলায় তৃণমূল নেতা বলেন, “আমি চাইনি ও এই চাকরি করুক। ও যদি ওর ক্যাটাগরির কাজ করত তাহলে ঠিক আছে। আমার প্রথম থেকেই এই চাকরিতে সম্মতি ছিল না। একটা ছেলে ৬০-৭০ হাজার টাকা মাইনে পেত। সেখানে ১৫ হাজার টাকার মাইনের চাকরি করত ও। আমার কাউকে বলতে লজ্জা লাগত। ও যখন আবেদন করে তখনই আমি রাজি হইনি।”
শুধু তাই নয়, ছেলে চাকরিহারা হতেই সমীর মুখোপাধ্যায় একহাত নিয়েছেন রাজ্যের শাসকদলকেও। ছেলের চাকরি যাওয়ার নিয়ে বলতে গিয়ে নেতা বলেন, ‘দল করাটাই এতদিন ভুল হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। শিক্ষা দফতর তো সব দেখে শুনেই চাকরি দিয়েছিল। আজ সরকার এদের পাশে দাঁড়াবে না? বেকার ছেলেমেয়েদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি করা হল এই সরকারের আমলে।’ খোদ তৃণমূল নেতার মুখে এহেন মন্তব্যে শোরগোল পড়েছে জেলা রাজনীতিতে। শুরু রাজনৈতিক তরজা।