বাংলা হান্ট ডেস্ক: খোলা আকাশে ছোট ছোট দুটি ডানা মেলে দেওয়াতেই তাদের আনন্দ। সকাল হলেই গান শুনিয়ে ঘুম ভাঙাত সকলের। গান গেয়ে প্রেমিকার রাগ ভাঙাত তারা। বাড়ির আনাচে কানাচে, গাছগাছালির ভিড়ে প্রেম করত পাখিরা (Birds)। আর মান অভিমান মিটে গেলে হারিয়ে যেত নিল দিগন্তে। সেই পাখিরাও কি ক্রমশ মানুষের মতো হয়ে পড়ছে? এমনই আশঙ্কা উস্কে দিয়েছে একসাম্প্রতিক গবেষণা।
পাখিদের সেই প্রেম নাকি আর নেই। যেমন চট জলদি প্রেমে পড়ছে, সংসার করছে, তেমনই চটজলদি ডিভোর্সও হয়ে যাচ্ছে তাদের। দিন দিন বাড়ছে পরকীয়া ও মানসিক অবসাদ। বিষয়টা শুনতে অবাক লাগলেও পক্ষী বিশারদরা তো এমনটাই দাবি করেছেন। কেন পাখিদের মধ্যেও ডিভোর্স বাড়ছে তারও ব্যাখ্যা করেছেন বিজ্ঞানীরা
সম্প্রতি রয়্যাল সোসাইটির জার্নাল ‘দ্য প্রসিডিংস’-র তরফে জানানো হয়েছে , পাখিদের সংসার ভাঙার প্রবণতা বেড়েছে। বাড়ছে স্বামী-স্ত্রীর ঝামেলা। বিজ্ঞানীরা পাখিদের সংসারে নাক গলিয়ে দেখেছেন, তাদের মধ্যেকার বন্ধন আলগা হয়েছে। আর বিষয়টা আসলেই মর্মান্তিক। কারণ পাখিদের ব্যক্তিগত জীবনের এই সমস্যা আখেরে প্রকৃতির বড় ক্ষতি করতে পারে।
চিন এবং জার্মানির বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখেছেন, মানুষের মত পাখিরাও এখন সঙ্গীদের থেকে মুখ ফিরিয়েছে। তাদের জগতেও পলিগ্যামি অর্থাৎ বহুগামিতার অনুপ্রবেশ ঘটেছে। আগে যেখানে ৯০ শতাংশ, কিংবা তারও বেশি পাখির একটি প্রজনন মরশুমে একজনই সঙ্গী বা সঙ্গিনী থাকত, এখন সেখানে সহজেই অন্য সঙ্গী বা সঙ্গিনীর প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে তারা।
গত কয়েকদিনে প্রায় আড়াইশো পাখির বিচ্ছেদ দেখেছেন বিজ্ঞানীরা। সাধারণত একটি যুগল ততদিন একসাথে থাকে যতদিন না তাদের প্রথম সন্তান আসছে। তবে এখন আর সেটাও হচ্ছেনা। দেখা যাচ্ছে, তার আগেই স্ত্রী বা পুরুষের কেউ একজন অন্য সঙ্গী খুঁজে নিচ্ছে। আবার কেউ কেউ একবার দূরে গেলে আর ফিরে আসছেনা। এতে মানসিক অবসাদে ভূগছে অপর সঙ্গীটি।
বিষয়টি যে মোটেও ছোট করে দেখার নয়, সেটা তো বলাই বাহুল্য। বিজ্ঞানীদের দাবি, পাখিদের এই সমস্যা অদূর ভবিষ্যতে প্রকৃতির উপর ভয়ানক প্রভাব ফেলতে পারে। এবং তারা দাবি করেছেন, ডিজিটাল সভ্যতার বাড় বাড়ন্তের কারণেই নাকি পাখিদের এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্রে বদল, জলবায়ু বদল, মানুষের তৈরি দূষণও পাখিদের সংসারে আগুন লাগানোর অন্যতম প্রধান কারণ বলে দাবি পক্ষীবিশারদদের।