গ্যাঁজানোর জায়গা! ‘এরা ডাক্তার হলে মারধর খেত’, আর জি কর শুনানি পেছনোয় তীব্র প্রতিক্রিয়া কুণাল সরকারের

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ তারিখ পে তারিখ! দু’দিনে এই নিয়ে তৃতীয় বার। সুপ্রিম কোর্টে পিছিয়ে গেল আর জি কর (RG Kar) মামলার শুনানি। মঙ্গলবারের পর বুধবার ফের শীর্ষ আদালতে (Supreme Court) প্রধান বিচারপতির এজলাসে পিছোল আরজি কর মামলার শুনানি। কারণ কি? যে মামলা গুরুত্ব সহকারে এদিন সকালেই শোনার কথা ছিল কেন সারাদিনেও তার শুনানি সম্ভব হল না? এই নিয়ে উঠছে একের পর এক প্রশ্ন।

বুধবার বিকেলে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় জানান, আজ সন্ধ্যায় তাকে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে হবে। সেই কারণে আজ আর এই মামলা শোনা হবে না। সুপ্রিম কোর্ট সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি হবে সুপ্রিম কোর্টে। আর সর্বোচ্চ আদালতের এই আপডেট সামনে আসতেই নেমেছে হতাশা।

অগস্ট থেকে নভেম্বর। এখনও বিচার পায়নি অভয়া। আর জি কর ঘটনার প্রতিবাদে স্বর উঠেছে সমাজের প্রত্যেক শ্রেণীর থেকে। বিচারের দাবি জানিয়ে দিনের পর দিন রাস্তায় নেমেছেন সাধারণ মানুষ। এদিকে সুপ্রিম কোর্টে বারংবার পিছিয়ে যাচ্ছে সুনানি। বিচারের জন্য যে আদালতের মুখ চেয়ে বসে রয়েছেন সকলে সেখানে বিচারের বদলে শুধুই মিলছে তারিখ! এই ইসুতেই এবারে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানালেন বিশিষ্ট চিকিৎসক কুণাল সরকার (Kunal Sarkar)।

এদিন শুনানি পিছিয়ে যাওয়ার পর বাংলাহান্টের তরফে কুণালবাবুকে ফোনে যোগাযোগ করা হলে, বেশ কিছুটা হতাশা নিয়ে তিনি বলেন,’ আমরা তো ঠিক বিচারক টাইপ অফ লোকজন নই। আমাদের কাজ করে পরিশ্রম করে খেতে হয়। আমি যা দেখি বিচারকরা দুশো, আড়াইশো উকিল নিয়ে গল্প-গুজব করে হাইকোর্টের প্রচুর টিভি ক্যামেরা অন করে তাদের দিন চলে যায়। আমরা মধ্যভিত্ত নিম্নবিত্ত বাঙালি। আমাদের অতটা সৌভাগ্য হয়নি।’

প্রবীণ চিকিৎসকের কথায়, ‘সাধারণ মানুষের হয়ে উত্তেজনায় জলে ঢালতে চাই না কিন্তু কখনও কখনও আমরা বাড়ির বসার ঘরে গল্প করি, আজকাল আবার ছেলে-মেয়েরা ক্যাফেতে বসে গল্প করে যে মোটামুটি একটা ওকালতির অছিলায় গ্যাঁজানোর সেশন হচ্ছে আমাদের সুপ্রিম কোর্ট। যেসব বিচারপতিরা আছেন যাদের মেয়াদ মোটামুটি শেষ হয়ে আসছে তারা লাস্টের দিকে বহু লোকজন জোগাড় করে একটু পাদপ্রদীপের আলোয় কিছু অর্থহীন কাজ-কর্ম করেন যার মধ্যে এই সুপ্রিম কোর্টে আর জি করের বিষয়টা একটা সারমর্মহীন একটা এক্সারসাইজ।’

সুপ্রিম কোর্টের উপর প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘আর জি কর মামলা যদি কলকাতা হাইকোর্টের কাছে থাকতো অনেক বেশি জিনিসটা কার্যকরী হত। এখন আমাদের মনেহয় প্রধান বিচারপতিরা তাদের অবসরের পরে ঠান্ডা মাথায় চিন্তাভাবনা করার অনেক সময় পাবেন এবং যতই চিন্তা করবেন প্রশ্ন বেশি হবে উত্তর কম হবে। এটা নিয়ে মনে দুঃখ পাওয়ার কিচ্ছু নেই। তার চেয়ে নজর রাখুন নিম্ন আদালতের উপর, সিবিআই কোর্টের উপর যেখানে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে।’ এখানেই শেষ নয়, উকিলকে কটাক্ষ করে কুণালবাবু বলেন, ‘বড় বড় উকিলরা অনেক পয়সা নিয়ে কি গ্যাজাচ্ছে, কি করলেন, কলকাতায় আড্ডা না মেরে দিল্লিতে আড্ডা করলেন এসব নিয়ে মন খারাপ করার কোনো কারণই নেই। ‘

আগামীকাল কি শুনানি হবে? উত্তরের চিকিৎসক বলেন, ‘বিন্দুমাত্র কিছু মনে হচ্ছে না কিছু হবে। এরা যদি উকিল না হয়ে গাইনোকোলজিস্ট হত তাহলে খুব অসুবিধে হত। কারণে কবে বাচ্চা ডেলিভারি হবে একটা লোককে যদি ছয় রকম ডেট দিত পাবলিক খেপে গিয়ে মারধর করতে শুরু করত। উকিল বলে বেঁচে গেছে গাইনোকোলজিস্ট হলে কপালে অনেক দুঃখ ছিল। ‘

All about ECMO by Dr Kunal Sarkar & Team | MEDICA Hospitals [English]

আরও পড়ুন: ‘পুলিশের উপর এত আত্মবিশ্বাস যখন তদন্ত হোক’, রাজ্যের আবেদন খারিজ করে যা বলল হাইকোর্ট…

বিচার কি হবে? ডক্টর সরকার (Doctor Kunal Sarkar) বলেন, সুপ্রিম কোর্টের উপর এই বিচার বিন্দুমাত্র নির্ভর করে না। সিবিআই কি সাক্ষ্যপ্রমাণ পেল, এবং নিম্ন আদালতে কি বিচার হল সেখান থেকে আদেও যদি কিছু আমাদের কপালে থাকে তাহলে প্রক্রিয়াটা শুরু হবে। সুপ্রিম কোর্টে কেবল কিছু পাবলিসিটি হল এবং বহু বহু উকিল মোটা টাকা ফি নিয়ে গপ্পগুজব করে নিজেদের পকেট গরম করে বাড়িতে গেলেন। কোনো উপযোগিতা নেই এর। বাঙালি যতই বোকা হোক যদি এইটুকুও বুঝতে পারে তাহলেই খানিকটা বুঝতে পারবেন কি হয়েছে। জাস্টিসের সাথে সুপ্রিম কোর্টের কোনো সম্পর্ক নেই।’

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর