বাংলাহান্ট ডেস্ক : ইতিহাসে আছে মৌর্য সাম্রাজ্যের রাজা অশোক একবার যুদ্ধে অসংখ্য মানুষের মৃত্যু ও রক্তের বন্যা দেখে যুদ্ধ ছেড়ে বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। অহিংসার পথ বেছে নিয়েছিলেন। আসলে সেই যুদ্ধের ফলে মানুষের মৃত্যু ভেতর থেকে নাড়িয়ে দিয়েছিল সম্রাট অশোককে। ঠিক তেমনি উত্তরপ্রদেশের চিকিৎসক জানতে পারেন যানজটে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল এক অ্যাম্বুলেন্স। ফলে সেই অ্যাম্বুলেন্সে থাকা রোগী বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করেন। এই ঘটনা তাকে মর্মাহত করেছিল। আর তারপর থেকেই তিনিই সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসার সাথে সাথে তিনি পার্ট টাইম রাস্তার যানজট সামলাবেন।
অবাক লাগছে? কিন্তু এটাই সত্যি। চিকিৎসার সাথে সাথে ট্রাফিক পুলিশের কাজও করেন চিকিৎসক কৃষ্ণ যাদব। চিকিৎসার সাথে তিনি যুক্ত রয়েছেন বহুদিন কিন্তু ট্রাফিক সিগন্যাল সামলানোর পেশা তিনি বেছে নিয়েছেন 2022 সাল থেকে।
ঘটনাটি ঘটেছিল ঠিক 10 বছর আগে। আর সেই ঘটনা ভেতর থেকে নাড়িয়ে দিয়েছিল চিকিৎসক কৃষ্ণ যাদব কে। 2011 সালের অক্টোবর মাসে বাড়ি ফেরার পথে নিজের গাড়িতে একটি যানজটে আটকে পড়েছিলেন তিনি। হঠাৎই তিনি দেখতে পান অনতি দূরে যানজটের ফলে দাঁড়িয়ে আছে একটি এম্বুলেন্স , তার ভেতরে কাতরাচ্ছে একটি রোগী। একজন ডাক্তার হয়ে এই দৃশ্য খুব একটা সহনীয় ছিল না তার কাছে। পরের দিন সকালে সংবাদপত্রে তিনি দেখতে পান সেই বেদনাদায়ক খবর। দীর্ঘক্ষণ যানজটে আটকে থাকার ফলে হাসপাতালে পৌঁছতে দেরি হওয়ায় মারা গেছে রোগী।
এই ঘটনার পরেই চিকিৎসক কৃষ্ণ যাদবের অন্তরে জন্ম নিয়েছিল নতুন এক সত্বা। আর সেই সত্তাই তাকে উদ্বোধিত করেছে চিকিৎসার কাজ সামলেও পার্ট টাইম ট্রাফিক পুলিশের কাজ করতে। কিন্তু চাইলেই কি সব হওয়া যায়? সবকিছুর জন্য তো একটি বাধা ধরা নিয়ম আছে। সেই নিয়মের বেড়াজাল ডিঙিয়ে নতুন পেশা তৈরি করা কোন সহজ ব্যাপার ছিল না। বাড়ির আপত্তি তো ছিলই, তার সাথে ছিল বিভিন্ন সামাজিক বাধা বিপত্তি। কিন্তু সমস্ত বাধা উপর থেকে জয় করে 2022 সাল থেকে তিনি বিনা পারিশ্রমিকে চিকিৎসা সামলে তিন ঘন্টা সময় দেন রাস্তার ট্রাফিক সিগনালে। উত্তরপ্রদেশের নয়ডায় একটি অন্যতম ব্যস্ততম ট্রাফিক সিগনালে তিন ঘন্টা ট্রাফিক কন্ট্রোলারের কাজ করেন তিনি।