বাংলা হান্ট ডেস্ক: একদিকে মৃত্যু হয়েছে মায়ের! কিন্তু বিষাদের মাঝেও পরিবারের সদস্যদের যেন এক টুকরো আনন্দের রেশ উপহার দিলেন চিকিৎসকেরা। মূলত, প্রয়াত মহিলার গর্ভ থেকে সুস্থভাবে সন্তান প্রসব করিয়ে অসাধ্য সাধন করলেন কোচবিহার (Cooch Behar)-এর MJN মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। শুধু তাই নয়, সদ্য প্রয়াত মেয়েকে হারিয়ে শোকে পাথর হয়ে যাওয়া পরিবারের সদস্যরা এই ফুটফুটে সন্তানকে নিয়েই নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন।
জানা গিয়েছে, গত শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯ টা নাগাদ তুফানগঞ্জের বলরামপুরের এক গর্ভবতী মহিলাকে কোচবিহারের MJN মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের (Maharaja Jitendra Narayan Medical College & Hospital) মাতৃমায় ভর্তি করা হয়। এদিকে, প্রথম থেকেই শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন ওই মহিলা। এমনকি, ক্রমশ তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় বলেও জানা গিয়েছে। এমতাবস্থায়, এই শারীরিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে চিকিৎসকেরা ওই মহিলার সিজার করার সিদ্ধান্ত নেন।
পাশাপাশি, বেশ কয়েকটি পরীক্ষাও করা হয় তাঁর। তবে, শেষরক্ষা হয়নি। সকাল দশটা আট মিনিট নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর। আর তখনই সময় নষ্ট না করে ডপলার ও স্টেথোস্কোপের সহযোগিতায় চিকিৎসকরা বুঝতে পারেন গর্ভস্থ শিশুটি তখনও জীবিত রয়েছে। এদিকে, যেহেতু মায়ের মৃত্যু হয়েছে, তাই অক্সিজেনের অভাবে গর্ভস্থ শিশুরও বিপদ হবে বলে আশঙ্কা করছিলেন চিকিৎসকরা।
আর তাঁকে বাঁচাতেই সিজার করার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। MJN মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের তিন চিকিৎসক ডাঃ যোগেশ বর্মা, ডাঃ মেহেদী হাসান ও ডাঃ অমিতাভ পালের নেতৃত্বে দ্রুত সিজার করা হয়। সকাল ১০টা ১০ মিনিট নাগাদ এক পুত্র সন্তানকে পৃথিবীর আলো দেখান তাঁরা। প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, আপাতত ওই শিশুটি সুস্থ রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
পাশাপাশি, শিশুটিকে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের SNCU-তে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে কোচবিহার MJN মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের এমএস ভিপি ডাঃ রাজীব প্রসাদ জানিয়েছেন যে, “মৃত প্রসূতির দেহ পরিবারের হাতে ইতিমধ্যেই তুলে দেওয়া হয়েছে।” এছাড়াও, চিকিৎসক যোগেশ বর্মা বলেছেন, “ওই মহিলার মৃত্যুর পর শিশুটির প্রাণ বাঁচানোর জন্য সিজার করা হয়। কয়েক সেকেন্ড দেরি হল শিশুর প্রাণটিও সংকটে পড়ত।”