বাংলাহান্ট ডেস্ক : আজকাল অনেকের বাড়িতেই রয়েছে ইনভার্টার। বিদ্যুৎ চলে গেলে ঘরের আলো-পাখা চালাতে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা গ্রহণ করে থাকে এই ইনভার্টার। বর্তমানে ভারতে রয়েছে একাধিক ইনভার্টার সংস্থা। তবে ১৯৯৮ সালে ভারতের বাজারে প্রথম ইনভার্টার নিয়ে আসে সু-কাম (Su-Kam)।
সু-কাম (Su-Kam) প্রতিষ্ঠাতার জীবন
এই সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা কুনওয়ার সচদেবকে ‘ইনভার্টার ম্যান অফ ইন্ডিয়া’ নামে ডাকা হত। ভারত ছাড়িয়ে এই সংস্থা পাড়ি জমায় বিদেশেও। তবে একটি ভুলের কারণে সু-কাম (Su-Kam) দেউলিয়া হয়ে যায়। রাজপ্রাসাদ থেকে রাজপথে নেমে আসেন সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা কুনওয়ার সচদেব। ১৯৯৮ সালে গোটা দেশ জুড়ে ব্যাপকভাবে বিদ্যুৎ ঘাটতি দেখা যায়। গ্রাম তো বটেই, লোডশেডিংয়ের সমস্যা দেখা যায় শহরেও।
আরোও পড়ুন : মাঙ্কিপক্স হয়েছে! বুঝবেন কীভাবে? জানুন বিস্তারিত
সেই সময় কেবল টিভির ব্যবসা করতেন কুনওয়ার সচদেব। বিদ্যুতই যদি না থাকে তাহলে মানুষ কীভাবে টিভি দেখবেন? সেই ভাবনা থেকেই কেবল টিভির ব্যবসা ছেড়ে কুনওয়ার প্রতিষ্ঠা করেন পাওয়ার ব্যাকআপ ইনভার্টার কোম্পানি সু-কাম (Su-Kam)।এই সংস্থা প্রথম যে ইনভার্টার বাজারে আনে তাতে ছিল অনেক ভুল-ত্রুটি। গ্রাহকরা এই ইনভার্টার কেনার পর ফেরত দিয়ে যাচ্ছিলেন।
আরোও পড়ুন : পুজোর আগেই বাড়ছে বেতন, কত টাকা পকেটে আসবে? খুশিতে লাফাচ্ছেন সরকারি কর্মীরা
তবে এরপর ভুল-বিচ্যুতি শুধরে নতুন ইনভার্টার বাজারে আনে সু-কাম (Su-Kam)। ব্যাস, তারপরেই গোটা দেশজুড়ে শুরু হয়ে যায় আলোড়ন। বহু মানুষ পাওয়ার ব্যাকআপ হিসেবে ঘরে নিয়ে আসেন সু-কাম-এর ইনভার্টার। নেপাল, বাংলাদেশের পাশাপাশি সু-কাম ইনভার্টার (Inverter) রপ্তানি করতে শুরু করে আফ্রিকাতেও।
এমনকি আমেরিকা ও চীনেও বড় সংস্থার সাথে প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ে এই ভারতীয় সংস্থা। তবে ব্যক্তিগত কারণে এই সংস্থার ব্যাংকে হয়ে যায় ২৪০ কোটি টাকার ঋণ। এই ঋণ পরিশোধ করার অবস্থা ছিল সু-কাম (Su-Kam) কোম্পানির। তবে ব্যাংক বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে দেউলিয়া ঘোষণা করে এই কোম্পানিকে।
সচদেব একবার বলেছিলেন, “শুধু কোম্পানি বন্ধ করেই ওরা ক্ষান্ত হয়নি। আমার বিরুদ্ধে একের পর এক মামলাও করে। হাই কোর্ট এবং সিবিআই আদালতে সেই সব মামলার শুনানি হত। আমার সুনাম নষ্ট হয়। ডিস্ট্রিবিউটর, ডিলার, গ্রাহকরা ধীরে ধীরে কোম্পানি ছেড়ে চলে যান। আমি চাইলেও তাঁদের কোনও রকম সাহায্য করতে পারিনি। কারণ ব্যাঙ্ক কোম্পানির সমস্ত সম্পত্তির দখল নিয়েছিল।’’
তবে এই পরিস্থিতিতে সচদেবের সাথ ছাড়েননি স্ত্রী খুশবু। স্ত্রীর দেখানো পথে প্রতিষ্ঠা হল নতুন সংস্থা সু-ভস্তিকা। কুনওয়ার (Kunwer Sachdev) এই কোম্পানিতে কাজ শুরু করলেন মেন্টর হিসাবে। বর্তমানে এই কোম্পানি ৬০টি পণ্যের জন্য পেটেন্টের আবেদন করেছে। তারমধ্যে ইতিমধ্যেই মঞ্জুর হয়ে গেছে ৬টি।