বাংলা হান্ট ডেস্ক: শিভান (Dr K Sivan) বা ইসরো (ISRO) প্রধান বিজ্ঞানী শিভান। বিশ্বের বিজ্ঞানীদের মধ্যে এক বিশেষ স্থানে তার নাম আছে।তাঁরই নেতৃত্বেই চন্দ্র অভিযানে গেছিল চন্দ্রযান ২।কিছুটা ব্যর্থ হলেও যা অনেকাংশ সফল।সম্পূর্ণ সফল হলে নতুন ইতিহাস গড়তেন তিনি। কিন্তু এই স্থান পর্যন্ত পৌঁছতে কত পথ পেরোতে হোয়ছে তাকে? কেমন তার অতীত জীবন? আসুন জেনে নেওয়া যাক।প্রান্তিক কৃষক পরিবারে জন্ম শিভানের। এতটাই হতদরিত্র পরিবার থেকে উঠে এসেছেন যে, কলেজে যাওয়ার আগে পর্যন্ত চটি-জুতো পর্যন্ত ছিল না তাঁর। খালি পায়ে, একসময় আধপেটা খেয়ে স্কুল করতে যেতেন তিনি। জুতোর পাশাপাশি স্কুল-কলেজে পরে যাওয়ার ট্রাউজার্সও ছিল না। তাই বেশির ভাগ সময় ধুতি পরেই থাকতেন তিনি। কিন্তু তার মেধার কাছে এসবই তুচ্ছ হয়। পোশাকের দৈন্যতা, ভরপেট খাবারের অভাব, কিছুই থামিয়ে দিতে পারেনি তার যুদ্ধকে। কারণ, তিনি বিশ্বাস করতেন সাহসে ভর করে জীবনযুদ্ধ জয় করবেন তিনি।বিজ্ঞানী হওয়ার স্বপ্ন ছিল বরাবরের, স্বপ্ন ছিল ইঞ্জিনিয়ার হবেন। কিন্তু বাবার পয়সার অভাবে শেষে বাবার কথায় ভর্তি হতে হল সায়েন্স কলেজে। বাবার মন ফেরাতে একসপ্তাহ অভিমান করে খাওয়াদাওয়া বন্ধ রেখেছিলেন।কিন্তু তারপর বাড়ির আর্থিক পরিস্থিতি উপলব্ধি করে বদলে গেল তাঁর মন। তিনি হাসিমুখে পড়া শুরু করলেন বিএসসি অঙ্ক নিয়ে।ছেলে স্নাতক হওয়ার পরসেই বাবা-ই জমি বিক্রি করে ডা, শিভানকে ভর্তি করে দেন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে।এরপর প্রচণ্ড প্রতিযোগিতার মধ্যে দিয়ে শেষএ আইআইএসসি পাশের পর চাকরি পান ইসরো-তে।
NDTV-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘কোনোদিন কী পেলাম তাই নিয়ে মাথা ঘামাইনি। কী পেতে পারি আগামীদিনে? সব সময় এই চিন্তাই তাড়িয়ে নিয়ে বেড়াত। তাই স্কুলের পড়ে বাবার সঙ্গে ক্ষেতে চাষের কাজে হাত লাগাতে কোনোদিন লজ্জা করেনি। বিরক্তও হইনি। কৃষিকাজের পাশাপাশি সংসার চালাতে বাবার ফলের দোকান ছিল। সেখানেও বসতাম আমের মরশুমে। বাবাকে সাহায্য করতে। আমি গেলে পয়সা খরচ করে বাবাকে আর আলাদা কাজের লোক রাখতে হত না। যিনি বাবাকে ব্যবসায়ে সাহায্য করবেন।’সেইসব দিনের কথা আজও ভিজিয়ে তোলে তার চোখের কোণ।শিভান আরও জানান, ‘সবাই ভালো কলেজ দেখে ভর্তি হয়। আমার প্রথম এবং একমাত্র শর্ত ছিল, যে কলেজ বাড়ির কাছে হবে সেটায় ভর্তি হব। যাতে কলেজ থেকে ফিরে বাবার দোকানে বসতে পারি। প্রথম জুতো পায়ে দিই মাদ্রাজ ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজিতে ভর্তি হওয়ার পর। তার আগে খালি পায়েই স্কুলে, বাবার দোকানে যাতায়াত করতাম। তবে মা-বাবা তারই মধ্যে তিনবেলা ভরপেট খেতে দেওয়ার চেষ্টা করতেন।’তবে চান্দ্রযান ২ এর এই আংশিক ব্যর্থতা তার জীবনে এখন চরম হতাশা এনে দিয়েছে। চোখ মুছতে মুছতে সেই হতাশাই প্রকাশ করে তিনি বলেন, যতবারই তিনি জীবনের কাছ থেকে কিছু চেয়েছেন, ততবারই জিবন তাকে ফিরিয়ে দিয়েছে।তবে ভারতীয়রা তার মতন বিজ্ঞানীরা জন্য গর্বিত !