বাংলা হান্ট ডেস্কঃ তিনি চিকিৎসক, এই করোনা কালে মানুষকে বাঁচাতে অন্যান্যদের মতই পরিশ্রম করে কেটেছে তারও দিন। সাদা অ্যাপ্রোনধারী এই ফ্রন্টলাইন যোদ্ধাদের নিজের মত করে সম্মান জানিয়েছে গোটা দেশও। কেউ মনোবল বাড়াতে জ্বালিয়েছেন প্রদীপ, কেউ বাজিয়েছেন থালা। ভারতীয় সেনাদের তরফে বর্ষণ করা হয়েছে ফুল। অথচ আমাদের এই রাজ্যেই ডাক্তার কবিউল হককে পড়তে হল এক লজ্জাকর ঘটনার মুখে।
কবিউলের শৈশব কেটেছে এ রাজ্যের মুর্শিদাবাদে। স্কুল এবং মেডিকেল কলেজে পড়াশোনার পর বাংলাতেই চিকিৎসক হিসেবে পেশাগত জীবন শুরু করেছেন তিনি। কিন্তু কলকাতার সল্টলেক সেক্টর থ্রি এলাকায় একটি বাড়ি খুঁজতে গিয়ে রীতীমতো নাজেহাল অবস্থার মধ্যে পড়তে হচ্ছে বিধান নগরের এক বেসরকারি হাসপাতালে এই চিকিৎসককে। পদবী শোনার পর কেউই তাকে নাকি বাড়ি দিতে রাজি হচ্ছেন না। সকলের মুখে একই কথা, ‘পদবী হক? না আমাদের এখানে কোন বাড়ি খালি নেই।’
তিলত্তমা প্রগতিশীলতার চারণভূমি। নানা ধর্ম নানা বর্ণের মানুষ বাস করেন কলকাতার বুকে। সেখানে শুধুমাত্র সংখ্যালঘু বলে ঘর ভাড়া পাচ্ছেন না এই চিকিৎসক। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনা প্রচন্ড মর্মাহত করেছে সামনের সারির এই যোদ্ধাকে। কবিউল হকের কথায়, “বাড়ি খোঁজার অভিজ্ঞতা অত্যন্ত তিক্ত। সল্টলেকে নাকি প্রগতিশীল মানুষের বাস। কিন্তু বাস্তবে দেখলাম হক পদবিটাই মুখ্য বিচার্য।”
এই ঘটনা শুনে রীতিমতো মর্মাহত বুদ্ধিজীবীরাও, শিক্ষাবিদ মীরাতুন নাহার, লেখিকা বোলান গঙ্গোপাধ্যায় প্রত্যেকেই এ বিষয়ে সরব হয়েছেন। দীপাবলীর আলোর উৎসবে এখন মেতে উঠেছে গোটা বাংলা। দীপাবলীর উদ্দেশ্য তো অন্ধকারকে দূর করা, তবে সমাজের কুসংস্কার, মনের অন্ধকার ক্লেদ কেন দূর হচ্ছে না এখনও? যে বাংলায় বসে নজরুলের মত মানুষ লিখেছেন, ‘মোরা একই বৃন্তে দুইটি কুসুম হিন্দু মুসলমান’, সেই বাংলার এই চূড়ান্ত অবনমন স্বাভাবিকভাবেই ব্যথা দিয়েছে সকলকে।