বাংলাহান্ট ডেস্ক: শত্রুপক্ষের রাতের ঘুম উড়িয়ে দেওয়ার মতো ব্যবস্থা করল ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন বা DRDO। সম্প্রতি ডিআরডিও তাদের সাবমেরিন বিরোধী রকেট RBU-6000 পরীক্ষা করেছে। তারা জানিয়েছে, এই পরীক্ষা সফল হয়েছে। এই রকেটগুলি নৌসেনার যুদ্ধজাহাজে মোতায়েন করা থাকবে। সেখান থেকেই ছাড়া হবে এগুলিকে।
ডিআরডিও সূত্রে খবর, এর আগে এই রকেটের রেঞ্জ ছিল পাঁচ কিলোমিটার। অর্থাৎ পাঁচ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারত এই ক্ষেপনাস্ত্র। কিন্তু এ বার এই রেঞ্জ বাড়িয়ে দু’গুণ করে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ এ বার ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত লক্ষ্যবস্তুতেও আঘাত করতে পারবে এই রকেটগুলি। এই ক্ষেপনাস্ত্রের মাধ্যমে শত্রুপক্ষের সাবমেরিনগুলিকে ধ্বংস করে দিতে পারবে ভারতীয় নৌসেনা (Indian Navy)।
ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ আইএনএস চেন্নাই থেকে এই পরীক্ষা চালান ডিআরডিও-র বিজ্ঞানীরা। উল্লেখ্য, এই রকেট সিস্টেমটি বিশ্বের ২০টি সেনাবাহিনীর কাছে রয়েছে। ভারতীয় নৌসেনারও বহু যুদ্ধজাহাজে এই ক্ষেপনাস্ত্র মোতায়েন করা রয়েছে। এগুলি হল রাজপুত ক্লাস ডেস্ট্রোয়েয়ার, দিল্লি ক্লাস ডেস্ট্রোয়েয়ার, কলকাতা ক্লাস ডেস্ট্রোয়েয়ার, বিশাখাপত্তনম ক্লাস ডেস্ট্রোয়েয়ার, তলবার ক্লাস ফ্রিগেট, শিবালিক ক্লাস ফ্রিগেট এবং কামোর্টা ক্লাস কর্ভেট।
২১৩ ক্যালিবারের এই রকেট লঞ্চারটি সোভিয়েত জমানায় তৈরি হয়েছিল। এই রকেট সিস্টেমটি প্রথম তৈরি করেছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন। এটির পুরো নাম RBU-6000 Smerch-2। ১৯৬০-৬১ সাল থেকে এগুলি বিভিন্ন যুদ্ধজাহাজে বসানো হচ্ছে। এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবেই রিলোড হয়ে যায়। জানিয়ে রাখি, রকেট লঞ্চার সাধারণত ১, ২, ৪, ৮ এবং ১২ রাউন্ডের হয়। একটি লঞ্চারের ম্যাগাজিনে ৭২ থেকে ৯৬ রাউন্ড ধরতে পারে। অর্থাৎ চাইলে শত্রুপক্ষের সাবমেরিনে ক্রমাগত এই রকেট লঞ্চার নিক্ষেপ করা যেতে পারে।
ভারতীয় নৌসেনার এই রকেট লঞ্চারটির খালি অবস্থায় ওজন ৩১০০ কেজি। লম্বায় ২ মিটার এবং উচ্চতায় ২.২৫ মিটার। এটি ১.৭৫ মিটার চওড়া। এটি ১৮০ ডিগ্রি ঘুরতে পারে। এতে থাকা একটি রকেটের ওজন ১১৩.৫ কেজি। নতুন এই রকেটগুলি ৯ থেকে ১০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। এছাড়াও সমুদ্রের ১০ থেকে ৫০০ মিটার গভীরে গিয়েও সাবমেরিনে আঘাত করতে পারে এগুলি। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এটিই হল সবচেয়ে ভাল সাবমেরিন ধ্বংসকারী রকেট। তাই বিশ্বের এত সংখ্যক নৌসেনা এটি ব্যবহার করে।