বাংলা হান্ট ডেস্কঃ টাকার জন্য নিজের সন্তানকে অন্য কারও কাছে বিক্রি করে দেওয়া আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু আইন রয়েছে আদালতে আর সংবিধানের পাতায়। এখনও এমন অনেক ঘটনা ঘটে যা রীতিমতো এ ধরনের আইনকে চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড় করিয়ে দেয় রোজ। এবার এমনই এক ঘটনা সামনে এল পশ্চিম সিংভূমের নোয়ামুন্ডি ব্লকের মেরেলগাদা গ্রাম থেকে। বাচ্চা মেয়েটির বয়স মাত্র ২৮ দিন, যেসময় বাবার তাকে কোলে তুলে নেওয়ার কথা, তার প্রতিটির সুবিধা অসুবিধার খেয়াল রাখার কথা। সেই সময়ই তাকে বেচে দেওয়া হল কয়েকটা টাকার জন্য।
শুধুমাত্র দারিদ্র্যের বশে নয়, কার্যত নেশার বশেই মেয়েকে অন্যের কাছে বেচে দিল বুধ্বরম চাটম্বা নামের ওই ব্যক্তি। নবজাতকের মা ঊনবাসিও কিছুই জানত না। কিছু বুঝে ওঠার আগেই কার্যত বড়জামদার একটি পরিবারের কাছে ৩০ হাজার টাকায় বেচে দেওয়া হয় তার মেয়েকে। তারপর কি করল বাবা সেই টাকায়? সেই টাকা ওড়ানো হলো বন্ধু-বান্ধবদের মদের খরচের পিছনে।
অনেকে বলছেন সন্তান পেটে থাকতেই সওদা করে ফেলেছিল বুধরাম। চারদিন আগে বড়জামদা থেকে কয়েকজন ব্যক্তি এবং এক মহিলা তাদের বাড়িতে আসে, ঊনবাসির কাছ থেকে মেয়েকে তুলে নিয়ে তাদের কোলে তুলে দেয় বুধরাম। ঊনবাসি প্রশ্ন করেছিলো বটে, কিন্তু তার স্বামী তাকে বলে এতগুলো বাচ্চা সামলাতে পারবে না সে, তাছাড়াও মেয়ের জন্য ৩০ হাজার টাকাও পাচ্ছে তারা। এরপর চোখের জল মুছে চুপ করে যায় ঊনবাসি। কিন্তু জানা যায় টাকা কোথায় দেওয়া হয়েছে বা নেওয়া হয়েছে তার কিছুই সে জানেনা। কার্যত তারপর থেকেই বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে মদের আড্ডায় ঘুরে বেড়াচ্ছে তার স্বামী।
এ ঘটনা জানাজানি হতে গ্রামের মুন্ডা জয়রাম বারজো এবং সুরেন্দ্র চাটোম্বারা যখন বুধরামের বাড়িতে এসে পৌঁছায়, তখন সে ফেরার। জানা গিয়েছে বুধরামের দুটি স্ত্রী এবং নটি সন্তান রয়েছে। যার মধ্যে দ্বিতীয় স্ত্রী ঊনবাসীর রয়েছে তিনটি সন্তান এবং প্রথম স্ত্রী জানিকার ছয় সন্তান রয়েছে। এ ধরনের আদিবাসী পরিবারগুলির ক্ষেত্রে অনেক সময় এটাই চরম সত্য। আইন রয়েছে আইনের জায়গায়, কিন্তু তাও প্রায়শই ঘটে চলেছে এ ধরনের ঘটনা।