বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দুর্নীতির কারণে ২০১৬ সালের এসএসসির (SSC Recruitment Scam) সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। গত ৩ এপ্রিল এই রায় দিয়েছে শীর্ষ আদালত। এর ফলে একধাক্কায় ২৫,৭৫২ জন শিক্ষক (School Teacher) ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হয়েছে। এর ফলে চাকরিহারাদের পাশাপাশি ফাঁপরে পড়েছে রাজ্যের বহু বিদ্যালয়। এমনিতেই পর্যাপ্ত সংখ্যক শিক্ষকের অভাবে ধুঁকছে বহু স্কুল। তার মধ্যে চাকরি বাতিলের রায় আসায় আরও চাপ বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে বড় সিদ্ধান্ত নিল আসানসোলের একটি বিদ্যালয়।
শিক্ষকের (School Teacher) অভাবে ধুঁকতে থাকা স্কুলের বড় পদক্ষেপ!
সম্প্রতি কুলটির বরাকর শ্রী মাড়োয়ারি বিদ্যালয়ের তরফ থেকে একটি নোটিশ জারি করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণির জন্য আমরা কোনও ভর্তি নিতে পারব না। পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকায় এই কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে’। এর ফলেই চাপে পড়েছে সদ্য মাধ্যমিক পাশ করা স্থানীয় পড়ুয়ারা। সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে চিন্তায় পড়েছেন অভিভাবকরাও।
জানা যাচ্ছে, আসানসোলের ওই বিদ্যালয়ে (Barakar Sree Marwari Vidyalaya) বাংলা ও হিন্দি দুই মাধ্যমেই পড়াশোনা হয়। প্রায় ১২০০ জন পড়ুয়া রয়েছে। টিচার ইনচার্জ দীপিকা রায়ের কথায়, ‘বিদ্যালয়ে অন্তত ৩৬ জন শিক্ষক, শিক্ষিকার প্রয়োজন রয়েছে। তবে এখন মাত্র ১২ জন আছেন। তার মধ্যে আবার দু’জনের চাকরি চলে গিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো ৩১ ডিসেম্বর অবধি তাঁরা বিদ্যালয়ে আসবেন ঠিকই। তারপর কী হবে? শিক্ষক না থাকার কারণেই এবার একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না’।
আরও পড়ুনঃ রাত পোহাতেই ডিগবাজি! পুলিশকে হুমকি দিয়েও মন্তব্য প্রত্যাহার হুমায়ুনের, হঠাৎ কী হল?
এখানেই না থেমে টিচার ইনচার্জ জানিয়েছেন, এই বিষয়ে জেলা স্কুল দফতরে জানানো হয়েছে। বিদ্যালয় পরিচালন কমিটির বৈঠক করে এই বিষয়টি কীভাবে সমাধান করা যায় সেটার চেষ্টা করা হবে বলে জানান তিনি।
জেলা স্কুল পরিদর্শক সৌমেন লাহা এই বিষয়ে বলেন, ‘একাদশ ও দ্বাদশে ভর্তি বন্ধ রয়েছে। স্কুল কাউন্সেলিংয়ের সঙ্গে কথা বলে জানার চেষ্টা করব কীভাবে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি চালু করা যায়। একাদশ শ্রেণির ভর্তিতে এখনও সময় আছে। তাই আশা করছি, কারোর সমস্যা হবে না।
অন্যদিকে স্কুল কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তে চিন্তায় পড়েছেন বহু অভিভাবক। তাঁদের কথায়, ‘আচমকা এই সিদ্ধান্তে আমাদের সন্তানরা কী করবে? ওরা কোথায় ভর্তি হবে?’ স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক অজয় পোদ্দার এই বিষয়ে বলেন, ‘সমগ্র রাজ্যেই শিক্ষাব্যবস্থার এমন অবস্থা! আমার বাবা এই বিদ্যালয় থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছিলেন। সেই স্কুলের আজ এই দশা! আম বিধানসভায় এই প্রসঙ্গ তুলব’।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের এসএসসির সমগ্র প্যানেল বাতিল হওয়ায় প্রায় ২৬,০০০ শিক্ষক (School Teacher) ও শিক্ষাকর্মী চাকরি খুইয়েছেন। এর মধ্যে ‘অযোগ্য’ অথবা ‘দাগি’ হিসেবে চিহ্নিত নন এমন শিক্ষকদের আগামী ৩১ ডিসেম্বর অবধি বিদ্যালয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু তারপর কী হবে? সেকথা ভেবেই একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আসানসোলের বরাকর শ্রী মাড়োয়ারি বিদ্যালয়। আগামীতে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সেটাই দেখার।