বাংলা হান্ট ডেস্কঃ করোনা কালে রীতিমতো ভেঙে পড়েছে বহু মানুষের আর্থিক পরিস্থিতি। রিপোর্ট অনুযায়ী, কয়েক কোটি মানুষ মধ্যবিত্ত থেকে নিম্নবিত্তে নেমে গিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে একদিকে যেমন চাকরি হারিয়েছেন বহু মানুষ, তেমনি নিজস্ব ব্যবসাও প্রায় নষ্ট হতে বসেছে। এমনই এক পরিস্থিতির জ্বলন্ত উদাহরণ বালাঘাট হাট্টার বাসিন্দা পুনম মেশারম। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী সদস্য ছিলেন পুনমের বাবা সতীশ মেশারম। লকডাউনের কারণে তার আর্থিক অবস্থা ভীষণভাবে ভেঙে পড়ে। এই পরিস্থিতিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন সতীশবাবু।
তখনই পাশে এসে দাঁড়ায় তার মেয়ে পুনম। আপাতত অটো চালিয়ে বাবাকে আর্থিকভাবে সাহায্য করছে সে। লিংগা থেকে হাট্টা পর্যন্ত রোজই এখন অটো চালাতে দেখা যায় পুনমকে। পুনম জানিয়েছে, শুধু মহিলারা হয় পুরুষরাও তার অটোতে চড়েন এবং সে যেভাবে বাবাকে সাহায্য করে চলেছে তার প্রশংসা করেন। তবে পুনম শুধুমাত্র অটোই চালায় না, সঙ্গে সঙ্গে নিজের প্রাণপণ চেষ্টায় পড়াশোনাও চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সে।
পুনমের কথা অনুযায়ী, উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে এখন সে কম্পিউটার কোর্সে ভর্তি হয়েছে। তার বাবা এখনও অটোচালকের কাজ করেন। পরিবারে আরেকজন রোজগেরে সদস্য বাড়ায় তারও অনেকটাই সুরাহা হয়েছে। পুনমের পাঁচ বোনও রয়েছে। দিদি যেভাবে বাবার পাশে দাঁড়াচ্ছে, তা দেখে খুশি তারাও। মাত্র ১৮ বছর বয়সী পুনম মূলত লিংগা থেকে হাট্টা অবধি অটো চালালেও সে জানিয়েছে মাঝে মাঝে বালাঘাটও চলে যেতে হয় তাকে। তবে তারই সঙ্গে চলছে পড়াশোনা ।
পুনম বলে, মেয়েরা ছেলেদের থেকেও বেশি বাবার কষ্ট বুঝতে পারে। আর বাবার সমস্যায় পাশে দাঁড়াতেও সবসময় প্রস্তুত থাকে তারা। সে আরও বলে, অটোতে এখনো পর্যন্ত কেউ আমার সঙ্গে কোনো খারাপ ব্যবহার করেনি। বরং সকলেই খুব প্রশংসা করেন আমার। এজন্যেই আমি আরও উৎসাহ পেয়েছি। সাধারণত সমস্যার মধ্যে পরলে হাল ছেড়ে দিই আমরা। কিন্তু হাল না ছেড়ে পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করেই জীবনকে জিতে নিতে হয়, পুনম এর সঠিক দৃষ্টান্ত।