বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দুর্গাপুজো নিয়ে বাংলা এবং বাঙালির আবেগ চিরন্তন। প্রত্যেক বছর রাজ্যের সকল পুজো (Durga Puja) কমিটিকে একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা অনুদান হিসেবে দিয়ে থাকে রাজ্য সরকার। চলতি বছরের অনুদানের কথাও ইতিমধ্যেই ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। এর মাঝেই মাথাচাড়া দিল নয়া বিতর্ক।
দুর্গাপুজোর (Durga Puja) অনুদান নিয়ে নয়ছয়?
দুর্গাপুজোর জন্য সরকারের তরফ থেকে দেওয়া অনুদান নিয়ে এমনিতেই বিরোধীরা মাঝেমধ্যে সরব হন। এবার তা নিয়ে সামনে এল নতুন বিতর্ক। মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া দুর্গাপুজোর অনুদানের (Durga Puja Donation) টাকা পুজো কমিটির পরিবর্তে পুজো কমিটির জেনারেল সেক্রেটারির সংস্থার অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে বলে অভিযোগ। তিনি আবার ঘটনাচক্রে তৃণমূল কাউন্সিলরের স্বামী।
টিটাগড়ের বিবেকনগর সর্বজনীন দুর্গাপুজো (Durga Puja) নিয়ে দেখা দিয়েছে এই বিতর্ক। এই পুজো কমিটির জেনারেল সেক্রেটারি দেবব্রত ভট্টাচার্য। তাঁর স্ত্রী মৌসুমি ভট্টাচার্য টিটাগড় পুরসভার ১৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। ২০২২ সালের ৬০,০০০ টাকা এবং ২০২৩ সালের ৭০,০০০ টাকার অনুদান কাউন্সিলর পুত্রের নামে খোলা সংস্থা দেবমাল্য এন্টারপ্রাইজের অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুনঃ মন্ত্রীত্ব থেকে ইস্তফার পর আরও বিপাকে অখিল! এবার হাতছাড়া হল আরও একটি জিনিস
তৃণমূল কাউন্সিলর মৌসুমি এবং তাঁর স্বামীর কথায়, পুজো (Durga Puja) কমিটির অ্যাকাউন্ট ছিল না বলেই এমনটা হয়েছে। দেবব্রত বলেন, ‘কারোর যদি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট না থাকে তাহলে সেটা জেনারেল সেক্রেটারির ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে ঢোকে। সেখান থেকে টাকা খরচ করা হয়। এটা সর্বজনীন। তা সত্ত্বেও বলেছিলাম, এটা তো চেক। বলেছিল, চেক যদি না নেওয়া হয় তাহলে ফেরত চলে যাবে। প্রোটোকল থাকলে আমায় ট্রেজারি থেকে চেক দিতই না। এত বছর যারা পুজো করে এসেছে তাঁরা আমাদের অ্যাকাউন্টটা দেয়নি। ৪৫,০০০ পুজোর কি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকে নাকি? কে ৭০,০০০ টাকা দেবে বলুন তো। মারলে তো ৭ লাখ টাকা, ১০ লাখ টাকা মারবে’।
এখানেই না থেমে সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমের কাছে দেবব্রত বলেন, তাঁকে ‘ম্যালাইন’ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ২ বছর হল পুজোর (Durga Puja) দায়িত্ব নিয়েছেন। কীভাবে পুজো হয়ে সেটা জনগণ দেখেছে। অন্যদিকে দেবব্রতর স্ত্রী তথা তৃণমূল কাউন্সিলর মৌসুমি বলেন, ‘যে সকল পুজো কমিটি নেই, সেক্রেটারি বা কারোর ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে টাকা আসে। টিটাগড় থানা থেকে একটা অর্ডার এসেছে। আজকে আমায় চেয়ারম্যানও পাঠিয়েছেন। ২০২৩ সাল অবধি যে সকল পুজো কমিটি নিজেদের অ্যাকাউন্টে টাকা নিত, ২০২৪ থেকে সেটা আর হবে না। অনেকে বিষয়টার ভেতরে ঢুকছেন না। ভাবছে সেক্রেটারির অ্যাকাউন্টে টাকা এসেছে মানে তিনি নিয়েছেন। তবে সেই টাকা সঙ্গে সঙ্গে পুজোর অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করে দেওয়া হয়েছে’।
এই দিকে ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে সুর চড়াতে শুরু করেছেন বিরোধীরা। বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী কৌস্তভ বাগচি বলেন, এই বিষয়ে তদন্তের দাবি জানিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরে চিঠি দেওয়া হবে। সেই সঙ্গেই সরকারি টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ এনে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি।