কেউ চড়লেন কাঁধে, কেউ লুটিয়ে গেলেন পায়ে! ফুটবলারদের সাথে বৃষ্টির মধ্যেই উদযাপন ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের

বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্কঃ ডার্বির আগে ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত হুংকার ছেড়েছিলেন। বলেছিলেন যে হাজার অসুবিধা সত্ত্বেও তিনি এটা মানতে রাজি নন যে কালকের বড় ম্যাচে তার দল আন্ডারডগ। যাবতীয় সমস্যার মোকাবিলা করে তার দল শেষ নিঃশ্বাস অবধি লড়বে। আর ঠিক তেমনটাই করে দেখালো ইস্টবেঙ্গল। প্রবল বর্ষণমুখর যুবভারতীতে খাতায় কলমে অনেক শক্তিশালী ও একাধিক তারকা ফুটবলারে পরিপূর্ণ মোহনবাগান সুপার জায়ান্টসের (Mohun Bagan Super Giants) বিরুদ্ধে দুর্দান্ত জয় তুলে নিল লাল হলুদ।

চার বছর ধরে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা অনেক কিছু সহ্য করেছিলেন। ক্লাবের মধ্যে ইনভেস্টার বনাম সাবেক কর্মকর্তা দ্বন্দ্ব, প্রতিবার দলে একাধিক পরিবর্তন, একের পর এক কোচের অসফল হওয়া, হাতেগোনা যে বিদেশীরা ক্লাবে যোগ দিচ্ছেন তাদের ধরে রাখতে না পারার ব্যর্থতা আর সেই সঙ্গে পরপর আটটা কলকাতা ডার্বিতে সবুজ মেরুন শিবিরের কাছে হারের দগদগে ক্ষত, সব মিলিয়ে গত তিনটে বছর অসহ্যকর পরিস্থিতিতে কাটিয়েছেন ইস্টবেঙ্গল ভক্তরা। এই বছর প্রথমে ইয়ুথ ডার্বিতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের হারানো এবং এখন ডুরান্ড কাপের মতো মঞ্চে মোহনবাগান বধ। ফলস্বরূপ ম্যাচের শেষে প্রবল বৃষ্টির মধ্যেও আনন্দ বাঁধ ভাঙলো ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের।

eb footballers celebration

নিরাপত্তা কর্মীদের নজরে এড়িয়ে ম্যাচ শেষে একাধিক সমর্থক এদিন মাঠে ঢুকে পড়েন এবং ইস্টবেঙ্গল ফুটবলারদের সঙ্গে গিয়ে দেখা করেন। কেউ আবেগে জড়িয়ে ধরেন কেউ মাথা নত করে সম্মান জানান, কোনও কোনও ক্ষুদে ভক্ত তো আবার চড়ে বসেছিলেন ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্ডার ইলসের কাঁধে। সবচেয়ে আনন্দের ব্যাপার হল যে এদিন সমর্থকদের এই অনুপ্রবেশ ও বিন্দুমাত্র বিরক্ত হতে দেখা যায়নি ইস্টবেঙ্গলের বিদেশী ফুটবলারদের। তারাও এমন আচরণ করেন যেন কতদিনের পরিচিত আত্মীয়রা তাদের চারপাশের থেকে উদযাপন করছেন।

আরও পড়ুন: নন্দকুমারের দুরন্ত গোলে আনন্দ ফিরলো! ৪ বছরের খরা কাটিয়ে ডুরান্ডে মোহনবাগান বধ ইস্টবেঙ্গলের

কিন্তু কোন মন্ত্রে আজ মোহনবাগানকে টেক্কা দিতে সমর্থ্য হল ইস্টবেঙ্গল। আজ দ্বিতীয়ার্ধে অতিরিক্ত আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে ইস্টবেঙ্গলকে প্রতি আক্রমণে বারবার জায়গা দিতে থাকে মোহনবাগান ডিফেন্স। ম্যাচের বয়স তখন ১ ঘন্টা। মাঝমাঠে বল ইন্টারসেপ্ট করতে ব্যর্থ হলেন অনিরুদ্ধ থাপা। সেই বল ধরে প্রবল গতিতে আক্রমণে উঠে এসে ইনস্টেপে দুর্দান্ত শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন ইস্টবেঙ্গলের নতুন তারকা নন্দকুমার।

আরও পড়ুন: ডুরান্ডের পরের রাউন্ড নিশ্চিত নয় ইস্টবেঙ্গলের! হেরেও কোন অঙ্কে লাইফলাইন পাচ্ছে মোহনবাগান?

এরপর বিশ্বকাপের কামিন্স এবং তারকা ফুটবলার পেট্রাটোসকে নামিয়ে একটা মরিয়া চেষ্টা করেছিলেন সবুজ মেরুন কোচ জুয়ান ফেরান্দো। কিন্তু কার্লেস কুয়াদ্রাতের ছেলেরা মাটি কামড়ে পড়ে থাকেন এবং প্রয়োজনে ট্যাক্টিকাল ফাউল করে বা জোর করে থ্রো-ইন আদায় করে সময় নষ্ট করে মোহনবাগানের উপর চাপ বাড়াতে থাকেন। ম্যাচের একদম শেষ দিকে প্রবল বৃষ্টির মধ্যে হেডে গোল করার সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও নষ্ট করেন আনোয়ার আলী। ফলস্বরূপ ২০১৯ সালের পর প্রথমবার কলকাতা ডার্বিতে সবুজ মেরুণ শিবিরকে হারায় ইস্টবেঙ্গল।

 

Reetabrata Deb

সম্পর্কিত খবর