মেয়ে অসুস্থ হয়ে ভর্তি হাসপাতালে! তাও নিজের দায়িত্ব পালন করে চলেছেন ইস্টবেঙ্গল কোচ সুজাতা

বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: খেলার মাঠে অভাবনীয় দায়বদ্ধতার উদাহরণ প্রচুর রয়েছে। সচিন (Sachin Tendulkar) বা বিরাট কোহলির (Virat Kohli) বাবাকে হারিয়েও মাঠে ফিরে দলকে বাঁচানো, নিজের সদ্যজাত কন্যাকে হারানোর ১ সপ্তাহের মধ্যেই মাঠে নেমে আর্সেনালের বিরুদ্ধে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর (Cristiano Ronaldo) গোল করা, উমেশ যাদবের (Umesh Yadav) বাবাকে হারানোর দিনকয়েক পরেই পাঁচ মাসের ব্যাবধানে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নেমে অজিদের বিরুদ্ধে দুর্দান্ত বোলিং, এমন নানান ঘটনা আছে যা সকলকে চমৎকৃত করে। এবার কলকাতা ময়দানেও এমন এক নজর তৈরি হলো।

তার নাম সুজাতা কর (Sujata Kar), তিনি পেশায় ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) মহিলা ফুটবল দলের কোচ। তার মেয়ে আরোহী, বর্তমানে আক্রান্ত অ্যাডিনো ভাইরাসের কবলে পড়ে। নিয়মিত যাতায়াত করতে হচ্ছে হাসপাতালে। কিন্তু তাই বলে কর্তব্যে ফাঁকি দিচ্ছেন না সুজাতা। নিয়মিত উপস্থিত থাকছেন তার দলের অনুশীলনে। যতক্ষণ কোচের ভূমিকায় ততক্ষণ নির্লিপ্তভাবে নিজের সমস্ত দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।

   

sujata kar

তার এই কঠিন পরিস্থিতির কথা সামনে আসার পর থেকে তাকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন বাংলার ফুটবলপ্রেমীরা। সবার পক্ষে যে এতটা দায়বদ্ধতা দেখানো সম্ভব নয় তা এক বাক্যে স্বীকার করছেন সকলেই। বৃহস্পতিবার দলের অনুশীলনে থাকার পাশাপাশি বাংলা দলের ফুটবলারদের দুই দলে ভাগ করে একটি প্রীতি ম্যাচ খেলানোর আয়োজন করেছিল ইস্টবেঙ্গল এবং সেখানেও উপস্থিত ছিলেন তিনি। কিছুদিন আগে তার কোচিং এই রাজ্য স্তরের প্রতিযোগিতা কন্যাশ্রী কাপ জিতেছে ইস্টবেঙ্গল মহিলা দল। এবার তার সামনে লক্ষ্য ইস্টবেঙ্গলকে ভারতীয় মহিলা লিগে ভালো ফল করতে সাহায্য করা।

গত বুধবার আন্তর্জাতিক নারী দিবসের দিন সোজা তার এই গল্পের কথা প্রকাশ্যে এসেছে। তারপরেই তার প্রশংসা শুরু হয়েছে সব মহল থেকে। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের তরফ থেকেও তার মেয়ের খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। আইএফএ ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বরূপ বিশ্বাস ও সাহায্য করছেন সুজাতাকে। ফলে নিজের দায়িত্ব পালন করে মেয়ের পাশে থাকতে খুব একটা অসুবিধা হচ্ছে না তার।

একটি সাক্ষাৎকারে সুজাতা জানিয়েছেন যে তার বছর পাঁচের মেয়ে দোলের আগের দিন থেকে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি। ডাক্তাররা তার শারীরিক অবস্থার দিকে নজর রাখছেন। তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন তার পালিত কন্যা অর্জিনা খাতুন-কেও, যিনি আরোহীর পাশে আছেন বলেই সুজাতার পক্ষে দুই দিক সামলে চলা সম্ভব হচ্ছে। যদিও তার স্বামী কেন এই ব্যাপারে তাকে সাহায্য করছেন না সেই প্রশ্নের কোনও জবাব স্পষ্ট ভাবে দেননি সুজাতা।

Avatar
Reetabrata Deb

সম্পর্কিত খবর