বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত বছর গরু পাচার মামলায় (Cattle Smuggling Case) কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে গ্রেফতার হন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। বর্তমানে তার ঠিকানা দিল্লির তিহাড়। একই মামলায় জেলবন্দি এনামুল হক, সতীশ কুমার থেকে শুরু করে কেষ্টর প্রাক্তন দেহরক্ষক সেহগল হোসেন ও হিসেব রক্ষক মণীশ কোঠারি। অন্যদিকে, সম্প্রতি এই মামলায় গ্রেফতারের তালিকায় নাম জুড়েছে অনুব্রত কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের।
প্রায় এক বছর থেকে এত সংখ্যক গ্রেফতারির পর এই মামলায় আরও গ্রেফতারি হবে বলে আদালতে জানিয়েছে ইডি (Enforcement Directorate)। সোমবার ইডির আইনজীবী নীতেশ রাণা দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে জানিয়েছেন, এই মামলায় তদন্ত বহুদূর এগিয়েছে। পাশাপাশি এবার গ্রেফতারির তালিকায় আরও নাম জুড়বে বলেও আদালতে জানায় ইডির আইনজীবী।
গরু মামলায় গত বছর গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে বহুবার জামিনের আর্জি জানিয়েছেন অনুব্রত। কোনোও সুরাহা হয়নি। জামিনের আবেদন করেছেন সুকন্যাও। আগামী ১২ মে সেই মামলার শুনানি। মেয়ের জামিনের জন্য বাবা অনুব্রতর ভরসা এখন ঈশ্বর। সোমবার দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালত থেকে বেরনোর পথে অনুব্রতর কাতর প্রার্থনা, “ঈশ্বর যেন বেল দিয়ে দেন।”
কেষ্ট-সুকন্যা দুজনেই একই জেলে থাকা সত্ত্বেও তাদের মধ্যে দূরত্ব অনেক। তবে বহু টানাপোড়েনের পর গত শনিবার অবশেষে দেখা হয় বাবা-মেয়ের। কী কথা হয়েছে দুজনার? এদিন সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তরে কেষ্ট বলেন, “বাবা-মেয়ের মধ্যে যা কথা হয়। তাই হয়েছে।” আগামী ১২ মে মেয়ের জামিন মামলার শুনানি নিয়ে অনুব্রত নিজের প্রার্থনা জানিয়ে বলেন, “ঈশ্বর যেন বেল দিয়ে দেন।”
গোয়েন্দা সংস্থার হাতে মেয়ের গ্রেফতারির পর প্রথমে চুপ করে থাকলেও পরে মুখ খোলেন অনুব্রত। ইডির বিরুদ্ধে আদালতে ক্ষোভ উগরে দেন কেষ্ট। বলেন, মেয়েকে গ্রেফতার করে কোনও ‘বাহাদুরির’ কাজ করা হয়নি। পাশাপাশি অফিসারদের প্রশ্ন ছুঁড়ে কেষ্ট বলেন, ‘মেয়েকে অ্যারেস্ট করে নিলেন? বিবেক বলে তো কিছু আছে নাকি?’
মেয়ের গ্রেফতারির পর ‘ভালো নেই’ বলেও আদালতে মন্তব্য করেছিলেন অনুব্রত। এদিনও নিজের শারীরিক অবস্থা নিয়ে অনুব্রত বলেন, “শরীর খুব খারাপ। বুকে ব্যথা। শ্বাসকষ্ট। সে কারণেই সংশোধনাগার পরিবর্তন করতে চাইছি।” এর আগে বহুবার অনুব্রত রাউস অ্যাভিনিউ কোর্ট থেকে জামিন পাওয়ার, তিহাড় জেল থেকে আসানসোলের জেলে যাওয়ার চেষ্টা আবেদন করেছিলেন। তবে কাজ হয়নি।
এ বার ফের অনুব্রত মণ্ডলের তরফে দিল্লি হাই কোর্টে জামিনের আর্জি জানানো হয়েছে। ১ জুন তার শুনানি। এদিন অনুব্রত সহ এনামুল, সতীশ কুমার, সেহগল হোসেনকে দিল্লির বিশেষ সিবিআই আদালতে তোলা হয়।