বাংলাহান্ট ডেস্ক: নিয়োগ দুর্নীতি মামলার (SSC Scam) তদন্তে ইতিমধ্যেই উঠে এসেছে বেশ কিছু নাম। ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্য। এর আগে ইডি-র হাতে গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর বান্ধবী অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়। পার্থ-ঘনিষ্ঠ অর্পিতার দু’টি বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ৫০ কোটি টাকা নগদ উদ্ধার করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।
তারপর তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। এবার নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নাম জড়াল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামাই কল্যাণময় ভট্টাচার্যের। সোমবারই তাঁকে ইডি-র দফতরে তলব করা হয়। জানা গিয়েছে, গভীর রাত অবধি ইডি-র দফতরেই ছিলেন কল্যাণময়। তারপর তিনি সেখান থেকে বেরিয়ে যান।
ইডি-র তরফে এর আগে একাধিকবার ইমেল করে নোটিস পাঠানো হয় কল্যাণময় ও পার্থ-কন্যা সোহিনী চট্টোপাধ্যায়কে। তবে প্রতিবারই হাজিরা এড়িয়ে যান তাঁরা। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে কল্যাণময় জানান, বিদেশে থাকার কারণে হাজিরা দিতে পারছেন না। তবে সম্প্রতি দেশে ফিরে ইডি-র সঙ্গে যোগাযোগ করেন কল্যাণময়।
সোমবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিতে যান তিনি। এরপর থেকেই দফায় দফায় গোয়েন্দাদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে। সূত্রের খবর, রবিবার রাতেই দেশে ফেরেন প্রাক্তন মন্ত্রীর জামাই। সেই মতো তাঁর জন্য প্রশ্নমালা সাজানো হয়। প্রায় সাত ঘণ্টা ধরে চলে জিজ্ঞাসাবাদ।
সূত্রের খবর, পরিবারের সদস্যদের নিয়ে প্রয়াত স্ত্রী বাবলি চট্টোপাধ্যায়ের নামে একটি ট্রাস্ট তৈরি করেছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ট্রাস্টের নাম ‘বাবলি চট্টোপাধ্যায় মেমোরিয়াল’। বিভিন্ন সংস্থা থেকে টাকা জমা দেওয়া হয় ট্রাস্টে। ওই ট্রাস্টের মাধ্যমে প্রায় ১৫ কোটি টাকা খরচ করে পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলায় একটি বেসরকারি স্কুল তৈরি হয়।
স্কুলের জমি অধিগ্রহণ ও স্কুলভবন নির্মাণে ট্রাস্টে জমা হওয়া টাকা খরচ হয়। ওই স্কুলেরই চেয়ারম্যান পার্থ-জামাতা কল্যাণময় ভট্টাচার্য। এদিন এ নিয়ে কল্যাণময়কে জিজ্ঞাসাবাদ করেন ইডি-র আধিকারিকরা। একইসঙ্গে সোহিনী ও কল্যাণময়ের নামে একাধিক সম্পত্তির হদিস পাওয়া গিয়েছে। সেই সংক্রান্ত বিষয়েও তাঁর কাছে জানতে চান গোয়েন্দারা।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের নামে চার্জশিট পেশ করেছে আদালত। তাঁদের নামে মোট ১০৩ কোটি টাকার সম্পত্তির হদিস পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছে ইডি। তারা জানিয়েছে, পার্থ ও তাঁর সহযোগীর মোট ৪৮.২২ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে আগেই মোট ৪৯.৮০ কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়েছিল। এছাড়াও উদ্ধার হয়েছিল ৫.০৮ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের সোনাদানা। সব মিলিয়ে মোট ১০৩.১০ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি।