বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দীর্ঘ চার মাস থেকে ঠিকানা শ্রীঘরের চৌকাঠ। গরু পাচার কাণ্ডে (Cattle Smuggling Case) মূল অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mandal) গত অগস্ট মাসে নিজ বাসভূমি থেকে গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেই সময় থেকেই ‘বীরভূমের বাঘ’ কেষ্ট দিন কাটাচ্ছে জেলে। জেলের ভাত খেয়ে একদিকে ওজন কমেছে তার, শুধুই কী তাই! ওজনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কমেছে সম্পত্তির পরিমানও। বাজেয়াপ্ত হয়েছে অগাধ সম্পত্তি, ফ্রিজ করা হয়েছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও। তবে এই এতদিন ধরে অনুব্রতর হেভিওয়েট সব আইনজীবীদের খরচের জোগান আসছে কোথা থেকে? কে জোগাচ্ছে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা? এই প্রশ্নের রহস্যভেদ করতেই এবার তদণ্ডে নামল ইডি (Enforcement Directorate)।
অনুব্রত মণ্ডলের হয়ে আদালতে মামলা লড়ছে বড় বড় আইনজীবী। হেভিওয়েট নেতা অনুব্রত, তাই তার আইনজীবীও হতে হবে হেভিওয়েট। কেষ্টর হয়ে মামলা লড়ছেন এমন সব আইনজীবী, যাদের মধ্যে কারও কারও এক দিনের ‘অ্যাপিয়ারেন্স ফিজ’ বা হাজিরা বাবদ পারিশ্রমিক ৩৫ লক্ষ টাকা!
গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই বারংবার আদালতে কেষ্ট জানিয়েছেন, তিনি নির্দোষ, তার আয়ও খুবই স্বল্প। ঠিক এখানেই দানা বাঁধছে রহস্য। বিরোধীদের দাবি, যার আয় অল্প, তার লড়াইয়ের জন্য এই বিপুল পরিমান অর্থের যোগান দিচ্ছে কে বা কারা? তবে কী এর নেপথ্যে রয়েছে আরও কোনো প্রভাবশালী মুখ? উত্তরের সন্ধানে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। অন্যদিকে, ইতিমধ্যেই কেষ্ট-কন্যা সুকন্যারও সমস্ত ব্যাঙ্ক আ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তার পরেও কী ভাবে মামলার বিপুল খরচের জোগান আসছে, প্রশ্ন তুলছেন তদন্তকারীরা।
এই প্রসঙ্গে, দিল্লির এক কংগ্রেস নেতার দাবি, অনুব্রতের হয়ে সওয়াল করা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কপিল সিব্বলের এক দিনের হাজিরার পারিশ্রমিক প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা। তবে সেটা রাজধানীতে। বাইরে গিয়ে মামলা লড়লে তার পরিমান বাড়তেও পারে। এখানেই তদন্তকারীদের প্রশ্ন, ‘‘ওই সব আইনজীবী তো নিখরচায় অনুব্রতের হয়ে লড়াই করছেন না। তা হলে খরচটা জোগাচ্ছে কে?’’ বীরভূমের এক প্রাক্তন বাম সাংসদ এ বিষয়ে বলছেন, ‘‘রাখে হরি মারে কে! কিন্তু এ ক্ষেত্রে হরি কে? জেলা তৃণমূল কি এই টাকার জোগান দিচ্ছে, না, অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ অন্য কেউ— তদন্ত করলে সাপ না বেরিয়ে আসে!’’