তাঁর স্ত্রীর…! বস্তা ভর্তি টাকা কীভাবে ‘সাদা’ করতেন পার্থ? বড় ‘রহস্য’ ফাঁস করল পার্থরই জামাই 

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ শিক্ষাই দেশের ভীত তৈরি করে দেয়। আর এই শিক্ষা ব্যবস্থার উপরেই নির্ভর করে গোটা তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ। অথচ এই শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়েই একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) বিরুদ্ধে। রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় বিপুল পরিমাণ টাকা সরানোর অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।

দু’বছর আগে ২০২২ সালের জুলাই মাসে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডির (ED) হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। সেই থেকেই গত দু’বছরের বেশি সময় ধরে জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে কোটি কোটি নগদ টাকা উদ্ধার করেছিল ইডি। কিন্তু ওই বিপুল পরিমাণ টাকা কিভাবে সাদা করতেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়? ইডির কাছে সেই তথ্যই ফাঁস করে দিয়েছেন খোদ পার্থর জামাই কল্যাণময় ভট্টাচার্য (Kalyanmoy Bhattacharya)।

‘ডোনেশন রহস্য’ ফাঁস করল পার্থর (Partha Chatterjee) জামাই

এবার সেই তথ্যই চার্জশিটে পেশ করেছে ইডি। জানা যাচ্ছে ইতিমধ্যেই নিয়োগ মামলার পঞ্চম অতিরিক্ত চার্জশিট আদালতে জমা দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কী ভাবে, কোন সংস্থার মাধ্যমে টাকা নয়ছয় করা হয়েছে, ওই চার্জশিটে সমস্ত কিছু উল্লেখ করা হয়েছে। পার্থর জামাই কল্যাণময়-ও  এই চার্জশিটে অন্যতম অভিযুক্ত হিসাবে চিহ্নিত।

যদিও স্ত্রী অর্থাৎ পার্থ কন্যা সোহিনী চট্টোপাধ্যায়ের সাথে তিনি এখন বিদেশে। কল্যাণময়কে একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি জানতে পেরেছে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) টাকা সাদা করার কৌশল। জানা যাচ্ছে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন লোকজনকে নগদ টাকা দিতেন। পরে সেই টাকাই তাঁর স্ত্রীর নামে তৈরি ট্রাস্টে ফিরে আসত।

এইভাবেই দুর্নীতির টাকায় ফুলে ফেঁপে উঠেছিল বাবলি চ্যাটার্জি মেমোরিয়াল ট্রাস্ট। সম্প্রতি নিয়োগ মামলার চার্জশিটে এমনই বিস্ফোরক দাবি করেছে ইডি। তারা জানিয়েছে, পার্থর (Partha Chatterjee) জামাই কল্যাণময়কে জিজ্ঞাসাবাদ করেই তাঁদের হাতে এই তথ্য এসেছে। সূত্রের খবর পার্থর ট্রাস্টের ‘ডোনেশন রহস্য’ও ইডির কাছে ফাঁস করেছেন কল্যাণময়।

আরও পড়ুন: ‘দাদাগিরি করে সরকার পাওয়া যায় না!’, BJP সাংসদকে ধাক্কা মারার প্রতিবাদে রাহুলকে তোপ সৌমিত্র খাঁ-র

প্রথমদিকে পাটুলি সংলগ্ন এলাকায় পশু চিকিৎসালয় তৈরির উদ্দেশ্যে বাবলি চ্যাটার্জি মেমোরিয়াল ট্রাস্ট তৈরি করা হয়েছিল। জামাই কল্যাণময়কে ওই ট্রাস্টের ট্রাস্টি করেছিলেন পার্থ। একবার নাকি ওই ট্রাস্টের জন্য ১ কোটি ১৭ লক্ষ ৭৫ হাজার ৯১০ টাকা ‘ডোনেশন’ উঠেছিল। চেকের মাধ্যমে সেই টাকা দেওয়া হলেও, তার আগেই নাকি পার্থ চ্যাটার্জী তাঁদের নগদে সেই টাকা দিয়ে রেখেছিলেন। ওই ডোনেশনের টাকায় ২০১৯ সালে ১৫ কাঠা জমিও কেনা হয়েছিল।

এইভাবেই দিনের পর দিন নগদ টাকা ওই ট্রাস্টের ‘ডোনেশনের’ পিছনে আড়াল করতেন পার্থ। আর এই কাজে তাঁকে সাহায্য করতেন জামাই কল্যাণময়। একাধিক ভুয়ো সংস্থা তৈরি করেও টাকা লুকিয়েছিলেন তাঁরা। ওই সমস্ত সংস্থার মালিক হিসাবে রাজীব দে-র নাম ব্যবহার করেছিলেন পার্থ। উল্লেখ্য, নিয়োগ মামলায় বিগত দু’বছরের বেশি সময় ধরে জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সম্প্রতি ইডি মামলায় জামিন পেয়েছেন তিনি। সিবিআই মামলা চলছে।