বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত বছর থেকে গরু পাচার মামলায় জেলবন্দি বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। বাংলার সীমানা পেরিয়ে বর্তমানে তার ঠিকানা দিল্লির তিহাড় জেল। কেষ্ট গ্রেফতারির পর কেটে গিয়েছে প্রায় সাড়ে ৯ মাস। এতদিন বাদে বৃহস্পতিবার অনুব্রত মণ্ডলের নামে চার্জশিট জমা দিল ইডি (ED)৷ এদিন দিল্লির রাউজ অ্যাভিনিউ আদালতে ২০৩ পাতার চার্জশিটের পাশাপাশি তার সঙ্গে অনুব্রতর বিরুদ্ধে প্রায় তিন হাজার পাতার নথিও জমা দিয়েছে গোয়েন্দা সংস্থা৷
আর কী জানা যাচ্ছে? ইডি সূত্রে খবর, চার্জশিটে অনুব্রত এবং কেষ্ট কন্যা সুকন্যা মণ্ডল (Sukanya Mondal) সহ তার ঘনিষ্ঠদের নামে বিপুল সম্পত্তির উল্লেখ করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি গরু পাচার মামলায় ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন সুকন্যা মণ্ডল। তদন্তে অসহযোগিতার অভাবে গ্রেফতার হয়েছেন তিনি। জানা গিয়েছে, এবার মেয়ে সুকন্যার বয়ানকে হাতিয়ার করেই এগোচ্ছেন তদন্তকারীরা।
ইডির দাবি, জেরায় সুকন্যা স্বীকার করেছেন যে, তিনি নিজে আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে কিছুই জানতেন না। বাবার কথা মতোই তিনি কেবল চেকে সই করে দিতেন৷ সুকন্যার এই বয়ানই এখন ইডির কাছে ব্রহ্মাস্ত্র। অন্যদিকে, অনুব্রত কতটা প্রভাবশালী সেকথা বোঝাতে চার্জশিটে বেশ কয়েকটি ঘটনার উল্লেখ করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, আসানসোল জেলে থাকাকালীন অনুব্রতর দিল্লি যাত্রা আটকাতে দুবরাজপুরের এক তৃণমূল কর্মীকে খুনের চেষ্টার ঘটনায় এক বছর পর গ্রেফতারের পাশাপাশি, পরে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার সময় রাজ্য পুলিশের নিরাপত্তার মধ্যে থাকা সত্ত্বেও নিয়ম ভঙ্গ করে শক্তিগড়ের একটি হোটেলে প্রাতঃরাশ ও ঘনিষ্ঠ কয়েকজনের সঙ্গে বৈঠকের ঘটনাও চার্জশিটে উল্লেখ করেছে ইডি৷
আবার আদালতে দিল্লি থেকে আসানসোল জেলে ফেরার আর্জি জানিয়েছিলেন অনুব্রত। তবে এদিন কেষ্টর সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আদালত। আদালতে কেষ্টর আইনজীবী তার মক্কেলের পক্ষে সওয়াল করলে পাল্টা ইডির আইনজীবী বলেন, বন্দি ঠিক করতে পারেন না যে তিনি কোথায় থাকবেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এর আগের দিন শুনানি চলাকালীন ইডি-র আইনজীবী আদালতে বলেছিলেন, আগামী কয়েক বছর তিহাড় জেলকেই ঘরবাড়ি ভেবে নিতে হতে পারে অনুব্রতকে৷ এরই মধ্যে এবার অনুব্রতর বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা করল ইডি। এবার পরবর্তীতে এই তদন্ত কোন মোড় নেয় সেটাই দেখার বিষয়।