বালিগঞ্জ ঘটনার জের! বিপুল পরিমান টাকার উৎস খুঁজতে মনজিৎ সিংকে দিল্লিতে তলব ইডির

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বালিগঞ্জ (Ballygunge) ঘটনার জের! এবার অভিযুক্ত ব্যবসায়ী মনজিৎ সিং গ্রেওয়াল ওরফে জিত্তিকে (Jitti Bhai) ডেকে পাঠাল গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট ওরফে ইডি (ED)। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টায় দিল্লিতে ইডির-র দফতরে হাজিরা দিতে মনজিৎ সিং গ্রেওয়ালকে।

এদিন বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি চেয়ে মনজিৎকে রাজধানীতে সমন করেছে ইডি। যার মধ্যে রয়েছে তার পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, গত ৫ বছরের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের যাবতীয় স্টেটমেন্ট। সাথে নিতে বলা হয়েছে গত ৫ বছরের আয়কর রিটার্ন। বিগত ১০ বছর তাঁর আত্মীয়রা যেসব সম্পত্তি কিনেছেন তার তার নথিও নিয়ে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে তাকে।

   

পাশাপাশি ব্যবসায়ীর পরিবারের সদস্যরা যেসকল ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তার নথি চাওয়া হয়েছে মনজিৎ-এর কাছে। পরিবারের কেও যদি কোনও সংস্থার কোনও পদে থাকেন তার তথ্যও নিতে বলা হয়েছে মনজিৎকে। ইডির তরফে এদিন নেটিস জারি করে এসব বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি এও বলা হয়েছে এই সমস্ত নথি সঠিকভাবে না নিয়ে গেলে হাওয়ালা আইনে মনজিতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে ইডি।

প্রসঙ্গত, বুধবার বালিগঞ্জের গরচায় একটি বেসরকারি নির্মাণ সংস্থার অফিসে হানা দিয়ে ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করে ইডি। প্রায় দশ ঘন্টা ধরে ধরে তল্লাশি অভিযান বিশেষ চালিয়ে এই বিপুল টাকা ইডি-র আধিকারিকদের নাগালে আসে। ইডি সূত্রে দাবি, এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী মনজিৎ সিং গেরেওয়ালের মাধ্যমে এই মোটা অংকের কালো টাকা সাদা করছিলেন।

ইডি সূত্রে খবর, তাদের কাছে আগে থেকেই খবর ছিল, কয়লা পাচারের কালো টাকা এই নির্মাণ সংস্থার মাধ্যমে সাদা করা হচ্ছে। সেইমত তল্লাশি চলার পরই হাতে আসে বিপুর পরিমান টাকা। জানা গিয়েছে নগদ টাকার পাশপাশি ডিজিটাল এভিডেন্স এবং নথি উদ্ধার করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সংস্থা সূত্রেই দাবি, ওই কালো টাকা দিয়ে এলাকায় একটি গেস্টহাউস কেনার চেষ্টা করেন মনজিৎ সিং গ্রেওয়াল। যার বাজার মূল্য প্রায় ১২ কোটি টাকা। কিন্তু খাতায় কলমে সেটির মূল্য দেখানো হয় মাত্র ৩ কোটি টাকা। বাকী ৯ কোটি টাকা নগদে দেওয়া হয়। এভাবেই কালো টাকা সাদা করার অভিযোগ ওঠে।

ed

গোয়েন্দা সংস্থার দাবি, প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের কথায় ওই গেস্টহাউসটি কেনা হয়। পাশাপাশি প্রভাবশালী এক মন্ত্রীর কালো টাকাও তিনি সামলাতেন বলে সূত্রের খবর। এদিন দুপুরেই ইডির তরফে প্রকাশিত এক প্রেস বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, সম্পত্তি বিক্রির টাকার কিছু অংশ রাখা হয়েছিল গজরাজ গ্রুপের দফতরে।

জানা গিয়েছে গেস্ট হাউজটি কেনেন এই গজরাজ গ্রুপের কর্ণধার বিক্রম শিকারিয়ার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী মনজিৎ গ্রেওয়াল। তদন্তকারীদের দাবি এই দুই ব্যক্তি রাজ্যের এক প্রভাবশালী মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ। সেই প্রভাবশালীর কয়লাপাচারের কালো টাকা সাদা করতেই সাহায্য করছিলেন তারা। তদন্তে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর নথি ও ভিডিয়োও তাদের হাতে এসেছে বলে দাবি গোয়েন্দা সংস্থার। সেই সূত্র ধরেই এবার মনজিৎ সিং গ্রেওয়ালকে তলব করল ইডি।

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর