২৪ কোটি টাকার আর্থিক প্রতারণার মামলা! এবার ED-র জালে সাংসদ অভিনেত্রী নুসরাত

বাংলা হান্ট ডেস্ক : ‘ইডি আমায় ডাকবে না’… দিনকয়েক আগে এরকমই আত্মবিশ্বাস ঝরে পড়েছিল তৃণমূল সাংসদ নুসরাতের গলাতে। তবে সেই আত্মবিশ্বাসের কোনও মর্যাদা রইল কি? কারণ সূত্রের খবর, সম্প্রতি প্রতারণার অভিযোগে অভিনেত্রী তথা তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহানকে তলব করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। অভিযোগ, নুসরাত সেভেন সেন্সেস ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেড নামক একটি রিয়েল এস্টেট সংস্থার অধিকর্তা ছিলেন। আর সেই সংস্থাটি নাকি ফ্ল্যাট বিক্রির নামে বহু মানুষকে প্রতারনা করেছে। মোট ২৪ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ। 

এমনকি এমনটাও অভিযোগ, ঐ প্রতারণার টাকা দিয়েই নাকি দক্ষিণ কলকাতায় এক বিলাসবহুল আবাসন নিজের নামে করেছেন অভিনেত্রী। মিডিয়া সূত্রে খবর, এই প্রতারণা মামলাতেই আগামি মঙ্গলবার সিজিও কমপ্লেক্সে তাদের দফতরে নুসরতকে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। অভিনেত্রীর বাড়িতে নোটিশ পাঠানো হয়েছে ইডির তরফ থেকে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সাল ২০১১ তে এই কোম্পানিটি শুরু হয়। ২০১৪ সালে কোম্পানির ডিরেক্টর পদে যোগ দেন তৃণমূল সাংসদ তথা অভিনেত্রী নুসরাত জাহান। এই সংস্থার তরফ থেকে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্মীদের কাছে প্রস্তাব যায়। এই প্রস্তাবে বলা হয়, গড়িয়াহাট এলাকায় খুবই কমদামে ফ্ল্যাট দেওয়ার চেষ্টা করছেন তারা। যে কারণে অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা মাথা পিছু সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা করে জমাও করেন।

তবে যত সময় বাড়তে থাকে তত বাড়তে থাকে কর্মীদের টাল বাহানা। জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে বলা হয়, গড়িয়াহাটে ওই আয়তনের জমি পাওয়া যাচ্ছে না, হিডকোতে জমি দেওয়া হবে। এবং সেখানে টু বেডরুমের বদলে দেওয়া হবে থ্রী বেডরুম। তবে এসবের কিছুই আর বাস্তবায়িত হয়নি। আর তারপরেই অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা মামলা দায়ের করেন ঐ সংস্থার বিরুদ্ধে। পাশাপাশি দেখা করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গেও।

এই বিষয়ে নুসরাত জানিয়েছেন, “১ কোটি ১৬ লক্ষ ৩০ হাজার ২৮৫ টাকা লোন নিয়েছিলাম। সেই টাকা সুদ সমেত ফেরত দিয়েছি। আমার ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্টেও তার উল্লেখ রয়েছে।” তবে কোন কোম্পানির ডিরেক্টের এভাবে কোনও কোম্পানি থেকে ঋণ নিতে পারেন না। যে কারণে নুসরাতের যুক্তি ধোপে টেকেনি আইনজীবীদের কাছে। উল্টে সংস্থার অপর এক ডিরেক্টর রাকেশ সিং-র দাবি এরকম কোনও ঋণ নুসরাত নেননি। বরং নায়িকার বোনের পড়াশোনার খরচও নিয়েছে ঐ সংস্থা।

nusrat jahan summoned by ed on flat scamming case

এদিকে সমস্ত দায় ঝেড়ে তৃণমূল কুণাল ঘোষ এই বিষয়ে সাফ জানিয়ে দিয়েছে, “ওটা ওনার ব্যক্তিগত বিষয়। উনি বা ওনার আইনজীবী সঠিক জবাব দিতে পারবেন”। এরপরেই নাকি তিনি আর বলেছেন, এই ব্যাপারটা সম্পূর্ণ অন্য। এখানে তৃণমূলের বিরোধীতা করার জন্য বিজেপি নুসরাতের পেছনে ইডি লেলিয়ে দিয়েছে বলে মনে হচ্ছেনা। এমতাবস্থায় একটা সিরিয়াস প্রতারণা মামলার দায় দল কেন নেবে? এখন দেখার, ইডি-র তদন্তে আর কত জলঘোলা হয় গোটা ঘটনার।


Moumita Mondal
Moumita Mondal

মৌমিতা মণ্ডল, গ্র্যাজুয়েশনের পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। বিগত ৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে লেখালেখির সাথে যুক্ত। প্রায় ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর