বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গরু পাচার মামলায় (Cow Smuggling Case) গত বছরের থেকে জেলবন্দি বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। গ্রেফতার হওয়ার পরপরই দুর্নীতির নানা অভিযোগে অনুব্রত, তার মেয়ে সুকন্যা এবং তাদের ঘনিষ্ঠদের ব্যবসা এবং ব্যক্তিগত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তাহলে কেষ্ট মামলার হেভিওয়েট আইনজীবীদের ব্যাপক পরিমান অর্থের যোগান কে দিচ্ছে? বেশ কিছুদিন ধরে এই প্রশ্নের উত্তরই হন্যে হয়ে খুঁজছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। অবশেষে মিলল হদিশ।
ইডি সূত্রে খবর, অজয় নদের তীরবর্তী একটি থানার এক অফিসারের (Police Inspector) খোঁজ পেয়েছেন তারা। একপ্রকার স্পষ্টই হয়ে গিয়েছে যে, নিম্ন ও উচ্চ আদালতে কেষ্ট মামলায় আইনজীবীদের পারিশ্রমিকের সেই কোটি কোটি টাকা আসছে মূলত ওই অফিসারের কাছ থেকেই। বহুদিন থেকেই এই খরচ চালিয়ে আসছেন তিনি। প্রসঙ্গত, ধারণা করা হচ্ছে মামলায় কেষ্টর হয়ে আইনজীবীদের সওয়াল করাতে এখনও পর্যন্ত ১৫ থেকে ২০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। তবে কেন এই বিপুল পরিমান অর্থের যোগান দিচ্ছেন ওই অফিসার?
তদন্তকারীদের দাবি, গরু পাচারে যে বিশাল অঙ্কের টাকা প্রাপ্ত হয়েছে সেই কালো টাকার বেশ কিছুটা ওই পুলিশ ইনস্পেক্টরের কাছে রয়ে গিয়েছে। সেই টাকা থেকেই এত মাস ধরে কেষ্টর মামলার খরচ মিটিয়ে যাচ্ছেন তিনি। অভিযোগ, ২০১৫ সাল থেকে অজয় নদের পাশের তিনটি থানা এলাকায় গরু পাচারের গোটা বিষয় নিয়ন্ত্রণ করতেন এই অফিসার।
জানা গিয়েছে, গরু পাচার মামলায় এনামুল এবং অনুব্রত সঙ্গী তার প্রাক্তন দেহরক্ষী সেহগাল হোসেনকে লাগাতার জেরা করে ওই পুলিশ অফিসারের খোঁজ মিলেছে। কিভাবে টাকা পাঠাতেন তিনি? সূত্রের খবর, প্রথম দিকে আসানসোল আদালতের এক আইনজীবীর মাধ্যমে আসানসোল ও কলকাতা হাই কোর্টে আইনজীবীদের পারিশ্রমিক পাঠানো হত। শুধু তাই নয়, দিল্লির সিবিআই বিশেষ আদালত ও দিল্লি হাই কোর্টে কেষ্ট মামলার কৌঁসুলিদের খরচ তৃণমূল ঘনিষ্ঠ এক আইনজীবীর হাত দিয়ে একটি ব্যাঙ্ক মারফত দিল্লিতে পাঠানো শুরু হয়।
ইডি সূত্রে দাবি, ইতিমধ্যেই সেই অ্যাকাউন্টের খোঁজ পেয়েছে তারা। কেষ্টর নির্দেশ মতোই ২০১৫ থেকে ২০২০-র মধ্যে গরু পাচারের কোটি কোটি কালো টাকা কলকাতায় বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তির কাছে ওই পুলিশ অফিসারই পৌঁছে দিতেন বলে খবর মিলেছে। তবে কী এবার সেই ইনস্পেক্টরকে তলব করবে ইডি। গরু পাচার মামলায় সেই অফিসারের বয়ান যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে এমনটাই মনে করছেন তদন্তকারীরা।