সাত বছর পর ভয়ঙ্কর ঘটনা! প্রশান্ত মহাসাগরে ফিরল উষ্ণস্রোত, বিপদ আসছে ভারতে? চিন্তিত সবাই

বাংলাহান্ট ডেস্ক : সালটা ২০১৫। প্রশান্ত মহাসাগরে দেখা মিলেছিল ‘এল নিনো’র (El Nino Impact)। ঘটনার পর কেটে গিয়েছে প্রায় সাত বছর। বিশেষজ্ঞদের মতে চলতি বছর ফের প্রশান্ত মহাসাগরে দেখা পাওয়া যেতে পারে ‘এল নিনো’র। তবে জানেন কি এই ‘এল নিনো’র আসলে কি?

এটি হল একটি উষ্ণ সামুদ্রিক স্রোত। যার প্রভাব পরে বিভিন্ন দেশের আবহাওয়ায়। পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের পশ্চিম উপকূল ঘেঁষে পেরু, ইকুয়েডর বরাবর গত বছরের ডিসেম্বর মাস নাগাদ এক ধরনের উষ্ণ দক্ষিণমুখি স্রোতের সৃষ্টি হয়। একেই বলা হয় ‘এল নিনো’।

আসলে এটি হলো একটি স্প্যানিশ শব্দ। এর অর্থ ছোট্ট ছেলে। মাঝেমধ্যেই এল নিনোর বিপরীতে তৈরি হয় একটি শীতল স্রোত যার নাম লালিনা। এই দুই স্রোতের প্রভাব পড়ে বিশ্বের আবহাওয়ায়। পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরের উত্তরমুখী শীতল পেরু স্রোত বাধাপ্রাপ্ত হয় ‘এল নিনো’র জেরে। এর ফলে ঘেঁটে যায় সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্র। ব্যাঘাত ঘটে মৎস্য চাষে। এমনকি বহু সামুদ্রিক প্রাণী এবং পাখিদের মৃত্যুও হয়।

দক্ষিণ আমেরিকায় এর জেরে সৃষ্টি হয় নিম্নচাপের। যার জেরে অসময় প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় সেখানে। আবার কোথাও কোথাও অনাবৃষ্টির জেরে খরার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। সম্প্রতি আমেরিকার ন্যাশনাল ওশানিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফেরিক অ্যাডমিনস্ট্রেশন এর তরফে ঘোষণা করা হয়েছে যে প্রশান্ত মহাসাগরে দেখা মিলেছে ‘এল নিনো’র।

যদিও আগে জানা গিয়েছিল অগাস্ট মাসের আগে তার দেখা পাওয়া যাবে না। যদিও সময়ের অনেক আগেই সাগরে বইতে শুরু করেছে স্রোত। সাধারণত বছরে এই সময় নিরক্ষরেখা বরাবর আয়ন বায়ু পশ্চিম দিক থেকে বইতে শুরু করে। আর তার ফলে দক্ষিণ আমেরিকার দিক থেকে প্রশান্ত মহাসাগরে উষ্ণ জল এশিয়ার দিকে প্রভাবিত হয়।

তবে ‘এল নিনো’র প্রভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে আয়ন বায়ু। ফলে প্রশান্ত মহাসাগরের জল স্বাভাবিক এর চাইতে অনেক বেশি উষ্ণ হয়ে ওঠে। জানা যায়, ভারতের বিগত ১০০ বছরে মোট ১৮ বার খরা হয়েছে। যার মধ্যে ১৩ টির নেপথ্যে রয়েছে ‘এল নিনো’ র হাত। এমনকি এর জেরে ভারতে বর্ষাকালে পর্যাপ্ত পরিমাণে বৃষ্টি হয়নি প্রায় নয় বছর। যার জেরে সমস্যা মুখোমুখি হয়েছেন কৃষকেরা।

চলতি বছর প্রথম থেকেই অস্বাভাবিক গরম পড়েছে পশ্চিমবঙ্গে। সবচেয়ে বেশি তাপ্রবাহের শিকার হয়েছেন দক্ষিণবঙ্গবাসী। এমনকি দার্জিলিং, জলপাইগুড়ির মতন জেলাতেও তাপপ্রবাহের সর্তকতা জারি করা হয়েছিল মৌসুম ভবনের তরফে। বর্ষা প্রবেশে হয়েছে বিলম্ব। বিজ্ঞানীদের মতে, প্রায় সাত বছর পর ফিরছে ‘এল নিনো’।


additiya

সম্পর্কিত খবর