হাইকোর্টে তুমুল ভর্ৎসনার পর এবার কী করবে নির্বাচন কমিশন? সাফ জানালেন রাজীব সিনহা

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পঞ্চায়েত নির্বাচন (Panchayat Vote) নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি। এরই মাঝে ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা নিয়ে গতকাল কোর্টে ভর্ৎসিত হয়েছে নির্বাচন কমিশন (State Election Commission)। সরাসরি নয়া নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহাকে (Rajiv Sinha) উদ্দেশ্য করে বড় মন্তব্য করেছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। যা নিয়ে চরম অস্বস্তিতে রাজ্য।

আদালতের কড়া নির্দেশের পর এবার পরবর্তী কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে? বুধবার নিজের দফতর থেকে বেরোনোর সময় কমিশনার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন। হাই কোর্টর নির্দেশের পর এবার কমিশনের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে চলেছে? কোন পথে এগোবেন তারা! এই সব প্রশ্ন করা হলে সেসবের খুব সংক্ষেপে উত্তর দেন রাজীব সিনহা। কমিশনার বলেন, ‘‘হাই কোর্টের নির্দেশ এখনও আমরা কাছে এসেছে পৌঁছায়নি। আমি সেটার জন্যই অপেক্ষা করছিলাম। আগে নির্দেশ আসুক। তার পর তা ভাল করে পড়ে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’

   

প্রসঙ্গত, কলকাতা হাইকোর্টে পঞ্চায়েত মামলা উঠলে গত ১৩ জুন রাজ্যের স্পর্শকাতর এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী আনার কথা নির্বাচন কমিশনকে বিবেচনা করে দেখতে বলে আদালত। তবে এর পরেই ১৫ জুন ফের নির্দেশ দিয়ে বলা হয় গোটা রাজ্যেই কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করতে হবে। তার জন্য কেন্দ্রের কাছে আবেদন করতে রাজ্যকে জন্য ৪৮ ঘণ্টার সময়সীমাও বেঁধে দেয় আদালত।

কিন্তু আদালতের নির্দেশ না মেনে সেই সময়সীমার মধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে যায় কমিশন। তবে হাইকোর্টের রায়ই বহাল রাখে সুপ্রিম কোর্ট। কোর্টের নির্দেশের পর কার্যত চাপে পড়ে পঞ্চায়েত ভোটে জেলাপ্রতি মাত্ৰ ১ কোম্পানি কেন্দ্ৰীয় বাহিনী চেয়েছে কমিশন। যেখানে একদফায় গোটা রাজ্যে এত বড় নির্বাচন, সেখানে ১ কোম্পানি কেন্দ্ৰীয় বাহিনী দিয়ে কতটা নিরাপত্তা, সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব! গতকাল এই প্রশ্নই ওঠে আদালতে।

high court

ভোটের আগে ১৫ দিনে ৮ মৃত্যু, তাও বাহিনীতে অনীহা কমিশনের! কেন এহেন আচরণ, এই নিয়ে প্রশ্নের মুখে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার ও কমিশন।
আদালতের নির্দেশের পরেও কেন কেন্দ্রীয় বাহিনীতে অনীহা কমিশনের, এর পেছনে কারণ কী! কার্যত এইসকল প্রশ্নেই বিদ্ধ রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কলকাতা হাইকোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছিল তা বাস্তবায়িত করতে রাজ্য নির্বাচন কমিশন এবং কমিশনার ব্যর্থ হয়েছেন বলে মন্তব্য করে আদালত।

এদিনের শুনানিতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ভূমিকায় চূড়ান্ত ক্ষুব্ধ হয়ে বিচারপতি বলেন,’ কমিশন সক্রিয় নয়, তাই কোর্টের নির্দেশ মানতে উৎসাহ দেখাচ্ছে না।’ বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘কোর্টের নির্দেশ কার্যকর না করতে সব পদক্ষেপ করছে কমিশন। ২০১৩-য় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য এই কমিশন সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গিয়েছিল। আমরা বুঝতে পারছি না সেই কমিশনের স্বতন্ত্রতার কী হল?’

বিচারপতি আরও বলেন, ‘কোর্টের নির্দেশ ছিল গোটা নির্বাচন পর্বের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। আমরা কমিশনের উপরেই মূল্যায়নের ভার ছেড়েছিলাম। ১৭০০ না ৮ লক্ষ বাহিনী-সেটা ঠিক করা কী আদালতের কাজ? প্রাথমিকভাবে এই কেন্দ্রীয় বাহিনী অপর্যাপ্ত বলে মনে হচ্ছে। মানুষ প্রশাসনের উপর আস্থা হারালে ভোট করে লাভ কী? আমাদের কি কমিশনের নিরপেক্ষতায় সন্দেহ করা উচিত?’’

অন্যদিকে, প্রধান বিচারপতির রোষের মুখে পড়েন নয়া রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা। তাকে চূড়ান্ত ভর্ৎসনা করে প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, ‘কোর্টের নির্দেশ কার্যকর করতে না পারলে পদ ছেড়ে দিন কমিশনার। না পারলে পদ ছাড়ুন, নতুন কমিশনার নিয়োগ করবেন রাজ্যপাল। ‘

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর