বাংলা হান্ট ডেস্ক : নির্বাচনী বন্ড বা ইলেক্টোরাল বন্ড (Electoral Bond) কি আদৌ বৈধ? এই মামলায় আজ ঐতিহাসিক রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। সাফ জানিয়ে দিল, এটি সম্পূর্ণ অবৈধ এবং অসাংবিধানিক। নির্বাচনে কালো টাকার ব্যবহার বন্ধ করতেই এই প্রকল্প এনেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। তবে এবার শীর্ষ আদালত জানাল, এই প্রকল্প বন্ধ হওয়া উচিত।
প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চ এইদিন স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে মোদী জামানায় শুরু হওয়া এই বন্ড সংবিধানের ধারা ১৯ এর পরিপন্থী। এতে করে ভোটারদের মৌলিক অধিকার নষ্ট হয়। ভোটাররা যাকে ভোট দিচ্ছে তার সম্পর্কে সবকিছু জানার অধিকার রয়েছে তাদের। ইলেক্টোরাল বন্ড সেই অধিকার নষ্ট করছে।
দেশের বিভিন্ন ব্যাঙ্ককে ইলেক্টোরাল বন্ড ইস্যু করা বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। এমনকি এখনও পর্যন্ত যে পরিমান ইলেক্টোরাল বন্ড ইস্যু হয়েছে তার বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার কাছে গেছে এই নির্দেশাবলী। নির্বাচন কমিশনের কাছে এই বিবরণ জমা দেওয়ার কথা বলেছে সুপ্রিম কোর্ট।
আরও পড়ুন : হাড্ডাহাড্ডি লড়াই ফুলকি-গীতার মধ্যে, প্রথম পাঁচে ‘অনুরাগের ছোঁয়া’! বড় রদবদল TRP তে
এরপর ভোটাররা সেই বিবরণ দেখতে পাবেন নির্বাচন কমিশনের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে। অর্থাৎ এবার থেকে কোন সংস্থা কোন রাজনৈতিক দলকে কত টাকা দিয়েছে তার বিবরণ থাকবে সর্বসম্মুখে। উল্লেখ্য, এই বন্ড চালু হয়েছিল সাল ২০১৮ তে। তারপর থেকেই বিরোধীদের দাবি, ইলেক্টোরাল বন্ড প্রকল্প স্বচ্ছ নয়। গত বছরের ২ নভেম্বর প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এই মামলার রায় সংরক্ষিত রাখে। এবং আজ সেই মামলার রায়দান হল।
নির্বাচনী বন্ড কি?
এই বিষয়টা জেনে রাখা সবচেয়ে জরুরি। এখানে বলে রাখি, নির্বাচনী বন্ড হল রাজনৈতিক দলগুলিকে নির্বাচনের আগে আর্থিক অনুদান দেওয়ার একটি পদ্ধতি। এবং ইলেক্টোরাল বন্ডের নিয়ম অনুযায়ী, যে কেউ স্টেট ব্যাঙ্ক থেকে ইলেকট্রোরাল বন্ড কিনে নিজের পছন্দের দলকে অনুদান দিতে পারে। এবং তার পরিচয় সম্পূর্ণ গোপন থাকবে। অর্থাৎ কোন দল কোথা থেকে অনুদান পাচ্ছে তা আম জনতা জানতে পারবেনা।
আরও পড়ুন : সন্দেশখালিতে ওঠা সব অভিযোগ ‘বঙ্গ বিরোধী প্রচার’! তৃণমূল নেতাদের দরাজ সার্টিফিকেট কুণাল ঘোষের
তবে কেবল তারাই এই প্রকল্পের মাধ্যমে আর্থিক অনুদান তুলতে পারবে যারা গত লোকসভা বা বিধানসভা নির্বাচনে কমপক্ষে এক শতাংশ ভোট পেয়েছে। অর্থাৎ যেসব দল সম্পূর্ণ নতুন তাদের ক্ষেত্রে অনুদান তোলা বেশ সমস্যার। এরপরই বিরোধীরা এই প্রকল্পের বিরোধীতা শুরু করে। অভিযোগ ওঠে, বন্ডের মাধ্যমে এভাবে অনুদান দেওয়ার মধ্যে পালটা সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার একটা প্রবণতা থাকে। সবদিক দেখেই এবার এই বন্ড বাতিল করল শীর্ষ আদালত।