বাংলাহান্ট ডেস্ক: চলতি বছরের শুরুতেই বিপুল টাকা দিয়ে মাইক্রো ব্লগিং সাইট টুইটার অধিগ্রহণ করার কথা বলেন ধনকুবের ও টেসলার কর্ণধার ইলন মাস্ক (Elon Musk)। সেই সময় তাঁর এই পদক্ষেপ নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়েছিল। কানাঘুষো শোনা গিয়েছিল, অধিগ্রহণের পর সিইও পরাগ আগরওয়ালকে ছাঁটাই করে দেবেন মাস্ক। শুধু তাই নয়, টুইটারে একাধিক বদলও আনবেন তিনি। কিন্তু সেই চুক্তি থেকে সরে আসেন তিনি।
এবার অবশেষে টুইটার অধিগ্রহণের পর্বও মিটে গেল। যেমনটা জল্পনা করা হয়েছিল, ঠিক তেমনটাই হল মাস্কের টুইটার অধিগ্রহণের পর। সংস্থার শীর্ষ আধিকারিকদের ছাঁটাই করে দিলেন ইলন। আমেরিকার সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, টুইটারের সিইও পরাগ আগরওয়াল এবং সংস্থার ‘চিফ ফিনান্সিয়াল অফিসার’ বা সিএফও নেড সেগালকে ছাঁটাই করে দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই সানফ্রান্সিসকোয় টুইটারের সদর দফতর ছেড়ে দিয়েছেন পরাগ।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টেসলা ও স্পেস এক্স-এর কর্ণধার ইলন মাস্ক একটি বিবৃতি দিয়ে জানান, তিনি টুইটার অধিগ্রহণ করছেন। তাঁর এই পদক্ষেপ ‘মানবতার স্বার্থেই’। এমন বার্তাই দেন তিনি। এ বিষয়ে একটি টুইট করে মাস্ক লিখেছেন, ‘আমি কেন টুইটার অধিগ্রহণ করলাম সে ব্যাপারে সকলকে জানাতে চাই। আরও অর্থ উপার্জনের জন্য আমি এটি কিনিনি। কিনেছি মানবতার জন্য। আমার মতে, মানবতার ভবিষ্যৎ এমন হওয়া উচিত যেখানে সমস্ত পক্ষের স্বাধীন মতামত প্রকাশ করার একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম থাকবে।’
তিনি আরও লেখেন, ‘সেই প্ল্যাটফর্মে সুস্থ পরিবেশে বিতর্ক হবে’ একইসঙ্গে মাস্ক বলেছেন, “বর্তমানে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যেখানে সমাজমাধ্যম কট্টর দক্ষিণপন্থী ও কট্টর বামপন্থীদের কয়েকটি গোষ্ঠীতে ভাগ হয়ে যেতে চলেছে। এমন হলে সমাজে ঘৃণা ও বিভাজন বাড়বে।” শুধু তাই নয়, টুইটারের বিজ্ঞাপন নীতি নিয়েও বার্তা দিয়েছেন ইলন মাস্ক। তাঁর মতে, বিজ্ঞাপন যদি সঠিক ভাবে ব্যবহার করা হয়, তাহলে মানুষ অনেক তথ্য সহজেই পেয়ে যাবেন। অপ্রাসঙ্গিক বিজ্ঞাপনকে ‘স্প্যাম’ বলে ব্যাখ্যা করেছেন মাস্ক।
Entering Twitter HQ – let that sink in! pic.twitter.com/D68z4K2wq7
— Elon Musk (@elonmusk) October 26, 2022
বুধবার আচমকা বেসিন হাতে নিয়ে টুইটারের সদর দফতরে ঢোকেন ইলন। তাঁর এই কাণ্ডে অবাক হয়ে যান সকলেই। টুইটার দফতরে যাওয়ার একটি ভিডিও পোস্ট করেন তিনি। বস্তুত, আমেরিকার আদালতের নির্দেশানুযায়ী শুক্রবারের মধ্যে ৪ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের অধিগ্রহণ চুক্তি চূড়ান্ত করতে হত মাস্ককে। সেই কাজ করতেই সেখানে তিনি গিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত এপ্রিল মাসে ৪৪ বিলিয়ন ডলার দিয়ে টুইটার কেনার কথা ঘোষণা করেছিলেন ইলন মাস্ক। কিন্তু পরে তিনি দাবি করেন, ভুয়ো অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার ক্ষেত্রে টুইটার যথাযথ পদক্ষেপ করছে না। তাই সেই চুক্তি থেকে সরে আসেন এই ধনকুবের। ক্রমশ পড়তে থাকে সংস্থার শেয়ারের দর। এরপরেই আইনি লড়াই শুরু হয়।
শেষ অবধি ইলন টুইটার কিনতে পারবেন কি না, তা নিয়েও সংশয় দেখা দেয়। অন্যদিকে ছড়িয়ে পড়ে যে টুইটার কেনার চুক্তি সম্পন্ন হলে সংস্থার প্রায় ৭৫ শতাংশ কর্মী কাজ হারাবেন। টুইটার অধিগ্রহণের পর সিইও-সহ কয়েক জন আধিকারিককে ছাঁটাই করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সংস্থার কর্মীরা চিন্তিত তাঁদের কাজ হারানো নিয়ে।