বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্কঃ নিজের বর্তমান ক্লাব অ্যাস্টন ভিলার হয়ে শেষবার মাঠে নেমেছিলেন ২৮ শে মে। তারপর জুন মাসে আর্জেন্টিনার জার্সিতে চীনের মাটিতে, ইন্দোনেশিয়া এবং অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলে মরশুম শেষ করেছিলেন এমি মার্টিনেজ। দেশের হয়ে চলতি মরশুম চলাকালীন তিনি যা করে দেখিয়েছেন, তার কারণে তিনি ফুটবল ইতিহাসে অমর হয়ে গিয়েছেন। দুর্দান্ত গোলকিপিং করে কাতারে আয়োজিত বিশ্বকাপ ট্রফি মেসির আর্জেন্টিনার হাতে তুলে দিয়ে সমর্থকদের নয়নের মণি হয়ে উঠেছেন এই দীর্ঘদেহী গোলরক্ষক।
মরশুম শেষ হওয়ার আগেই ক্রীড়াপ্রেমী শতদ্রু দত্ত দেখা করেছিলেন এমি মার্টিনেজের সাথে। তাকে কলকাতায় আসার প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি। নিজের পরিচিত কিছু এনজিওকে সাহায্য করার বিনিময়ে উপমহাদেশে আসার ব্যাপারে সম্মতি দেন বিশ্বজয়ী তারকা গোলরক্ষক। গত সোমবার বাংলাদেশকে হালকা ছুঁয়ে তারপর কলকাতার মাটিতে পা রাখেন তিনি।
এরপর থেকে তাকে কেন্দ্র করে শহরে যেন অকাল বিশ্বকাপের মরশুম তৈরি হয়েছিল। মঙ্গলবার মিলনমেলা প্রাঙ্গনে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। সেই মঞ্চে ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান ক্লাবের অফিসিয়ালরা একসাথে তাকে সংবর্ধনা দেন। এরপর মোহনবাগান ক্লাবে গিয়ে কলকাতা পুলিশ আয়োজিত ফ্রেন্ডশিপ কাপের উদ্বোধন ঘটিয়ে ক্লাব চত্বরে কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে আরেকটি কর্পোরেট ইভেন্টে যোগ দিয়ে আরপিএসজি গ্রুপের কর্ণধার সঞ্জীব গোয়েঙ্কার সাথে দেখা করেন এমি।
এরই মাঝে নিজের বাকি কর্মসূচি সেরে ফেলার আগে যে পাঁচ তারা হোটেলে কলকাতায় দুদিন কাটিয়েছেন এমি মার্টিনেজ, সেখানেই ড্রয়িংরুমে বাংলাহান্টের টিমের সঙ্গে কিছুক্ষণের জন্য সাক্ষাৎ করেন তিনি। খুব বেশি সময় দিতে পারেননি বিশ্বকাপ ও কোপা আমেরিকায় গোল্ডেন গ্লাভস জয়ী গোলরক্ষক। কিন্তু ওই সময়টুকুতেই বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর দিয়ে এবং নিজের বজ্রকঠিন মানসিকতা ও আত্মবিশ্বাসের পাশাপাশি মার্জিত ব্যবহারের পরিচয় দিয়ে মন জিতেছেন দিবু।
পরের বিশ্বকাপে হয়তো আর্জেন্টিনার নায়ক লিওনেল মেসি থাকবেন না। কিন্তু এমি জানিয়েছেন যে তারা পরের বিশ্বকাপ জয়ের ব্যাপারেও আত্মবিশ্বাসী। কারণ একটা দল হিসেবে তারা অত্যন্ত ভালো জায়গায় রয়েছেন মানসিকভাবে। এর পাশাপাশি লিওনেল মেসিকেই বিশ্ব ফুটবল ইতিহাসের সর্বকালের সেরা তারকা বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। মেসির সাথে একই দলে একবার কলকাতার মাটিতে খেলে যাওয়ার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন বিশ্বজয়ী গোলরক্ষক। জানিয়েছেন আপাতত তার পরবর্তী লক্ষ্য হলো দেশকে ২০২৪ সালের কোপা আমেরিকা জেতানো। ক্লাব ফুটবলে এখনো বিশাল বড় সাফল্য না পেলেও দেশের হয়ে যে মাত্রার সাফল্য তিনি পেয়েছেন তা যে সম্ভব সেটা কয়েক বছর আগেও তিনি কল্পনা করতে পারেননি বলে জানিয়েছিলেন।
এরপর আলাপচারিতার একদম শেষ মুহূর্তে বাংলাহান্টের টিমের তরফ থেকে তার হাতে তুলে দেওয়া হয় একটি বিশেষ ব্যাচ। ফুটবল বিশ্বকাপে একাধিক মন কেড়ে নেওয়া মুহূর্ত উপহার দেওয়ার জন্য তাকে ধন্যবাদ জানানো হয়। পাল্টা বাংলাহান্ট টিমকে ধন্যবাদ জানান এমি। পরবর্তীতে আবার কলকাতায় এসে আরও একটি বিস্তারিত সাক্ষাৎকার দেওয়ার বিষয়ে অঙ্গীকার করে গিয়েছেন সমর্থকদের প্রিয় দিবু। বাংলাহান্ট টিমের ভালোবাসা তার মন ছুঁয়েছে বলেও স্বীকার করেছেন তিনি। এরপর বুধবার শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাব এবং সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারে নিজের এই সফরের শেষ কর্মসূচিগুলি সম্পন্ন করে সমর্থকদের ভালোবাসায় আপ্লুত হয়ে নিজের দেশে ফিরে গিয়েছেন এমি।