বাংলাহান্ট ডেস্ক: গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) ছাড়া পাওয়ার সুযোগ আরও ক্ষীণ হচ্ছে। বীরভূমের বেতাজ বাদশার হিসেব রক্ষক মণীশ কোঠারিকে মঙ্গলবার ডেকে পাঠিয়েছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (Enforcement Directorate)। সূত্রের খবর, ‘কেষ্ট’-র মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাঁকে। দীর্ঘক্ষণ ধরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের গোয়েন্দারা। একটানা জেরা করার পর মণীশকেও গ্রেফতার করল ইডি।
সূত্রের খবর, অনুব্রত, তাঁর স্ত্রী, কন্যা, আত্মীয়, ঘনিষ্ঠদের নামে বিপুল সম্পত্তি, একাধিক রাইস মিল, কোটি কোটি টাকার লেনদেন, সবকিছু নিয়েই প্রশ্ন করা হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু তাঁর বয়ানে অসঙ্গতি ছিল। সে কারণেই তাঁকে গ্রেফতার করে নিজেদের হেফাজতে নিতে চান গোয়েন্দারা। মণীশের বিরুদ্ধে তথ্য লুকোনোর অভিযোগ এনেছে তদন্তকারী সংস্থা। তবে এর আগেও মণীশকে জেরা করেছিল ইডি। বীরভূমেও তদন্তকারী সংস্থার মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি।
অনুব্রত মণ্ডলকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার পরেই মেয়ে সুকন্যা-সহ কেষ্ট-ঘনিষ্ঠ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় ইডি। আদালতেও সে কথা জানায় তারা। ইডির প্রস্তাবে সায় দেয় আদালত। একে একে ডাক পড়ে অনুব্রত-ঘনিষ্ঠদের। অনুব্রত মণ্ডলের নামে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি, ব্যাঙ্কে গচ্ছিত কোটি কোটি টাকার হদিশ পাওয়া গিয়েছিল বলে দাবি ইডির। কিন্তু এর উৎস সম্পর্কে কিছু স্পষ্ট হচ্ছিল না। এগুলি গরু পাচারেরই টাকা কি না তার উত্তর এখনও অজানা। তবে এর মধ্যে কেষ্টর হিসেবরক্ষককে নিজেদের জিম্মায় নিয়েছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।
রাত পোহালেই অনুব্রত-কন্যা সুকন্যারও হাজিরা দেওয়ার কথা দিল্লিতে। তার আগে হিসেবরক্ষকের এই গ্রেফতারি নিঃসন্দেহে অনুব্রতর জন্য আরও খারাপ দিন ডেকে আনতে পারে তা বলাই বাহুল্য। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০ টায় সমস্ত নথিপত্র নিয়ে ইডির সদর দফতরে যান চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট মণীশ। গোয়েন্দাদের দাবি, ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদে তদন্তে অসহযোগিতা করছিলেন মণীশ। বেশ কিছু জবাব এড়িয়েও যান তিনি। সেই কারণেই তাঁকে গ্রেফতারের সিদ্ধান্ত নেয় ইডি। ডাক্তারি পরীক্ষা করিয়ে বুধবারই তাঁকে আদালতে তোলা হতে পারে বলে খবর।
এ দিনের জেরায় মণীশের কাছে একাধিক প্রশ্ন রাখেন তদন্তকারীরা। অনুব্রতর উত্থান এবং এত সম্পত্তি কী ভাবে এল, তা জানতে চান তাঁরা। এছাড়াও সুকন্যা মণ্ডলের নামে কোটি কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিটের উৎস, রাইস মিলের সম্পত্তির নেপথ্যে কোন রহস্য লুকিয়ে রয়েছে, তাও জানতে চাওয়া হয়। অনুব্রত এর আগে একাধিক বার দাবি করেছিলেন যে তাঁর সম্পত্তি দেখতেন মণীশ। সুকন্যাও একই জিনিস দাবি করেছেন। তবে কি দায় এড়ানোর চেষ্টা করছেন দু’জনেই? এই প্রশ্নের উত্তর পেতেই আজ মুখোমুখি জেরা করা হয় দু’জনকে। ইডি সূত্রে খবর, প্রয়োজনে অনুব্রত, সুকন্যা ও মণীশকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হতে পারে।