বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এক ব্যক্তি, একাধিক অভিযোগ! গায়ের জোরে জমি, ভেড়ি দখল করা থেকে শুরু করে নারী নির্যাতন, শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। এবার সেই তালিকাতেই জুড়ল আরও এক ‘কীর্তি’। এবার সন্দেশখালির ‘বাঘে’র কয়লা কারবারের কথা ফাঁস করল ইডি (Enforcement Directorate)। মুখ খুলেছেন সন্দেশখালির একাধিক ইটভাটার মালিকরাও।
জানা যাচ্ছে, নিম্ন মানের কয়লা বেশি দামে বিক্রি করতেন শাহজাহান। সন্দেশখালির (Sandeshkhali) এই ইট ভাটার মালিক বলেন, ‘দাদার হুকুম ছিল, তাঁর থেকেই কয়লা কিনতে হবে’। ED-র দাবি, সন্দেশখালির ‘বাঘে’র এই হুকুম মানতে কার্যত বাধ্য ছিলেন স্থানীয় ইটভাটার মালিকরা। সন্দেশখালি, ন্যাজাট অঞ্চলের প্রায় ২৯টি ইটভাটার মালিক শাহজাহানের (Sheikh Shahjahan) কাছ থেকে কয়লা কিনতেন বলে খবর। ED তদন্তে নেমে এমনই তথ্য পেয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
যে কোনও ইট ভাটায় (Brick Kiln) প্রচুর পরিমাণে কয়লা (Coal) প্রয়োজন হয়। এক বছরে এক একটি ইট ভাটায় ৫ থেকে ১০ লক্ষ টন ইট তৈরি হয়। একটা মাটির ইট পোড়ানোর জন্য প্রায় ২৫০ গ্রাম মতো কয়লা দরকার হয় বলে খবর। অর্থাৎ সেই হিসেবে ১ লক্ষ টন ইটের জন্য দরকার হয় প্রায় ২৫০ টন কয়লা। এদিকে জানা যাচ্ছে, প্রত্যেক টন কয়লার জন্য শাহজাহান ২,০০০ থেকে ৩,০০০ টাকা বেশি নিতেন। সেই হিসেবে তাঁর কত টাকা আয় হতো তা ইতিমধ্যেই আদালতকে জানিয়েছে ED।
আরও পড়ুনঃ উৎকর্ষ বাংলার বাজিমাত! প্রশিক্ষণ শেষে গোয়ায় চাকরি ৩৭ বেকার যুবক-যুবতীর, খুশির হাওয়া রাজ্যে
সন্দেশখালির এক ইড ভাটার মালিক বলেন, ‘একে তো উনি নিম্ন মানের কয়লা দিতেন। তার ওপর আবার প্রত্যেক টনে ২,০০০ থেকে ৩,০০০ টাকা বেশি দিতে হতো’। জানা যাচ্ছে, একজন ইট ভাটার মালিক নাকি এই নিয়ে ‘দিদিকে বলো’ নম্বরে ফোন করে কয়লা নিয়ে চলতে থাকা এই কারবারের বিষয়ে জানিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে সেই ভাটার মালিককে নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল বলে খবর।
২০১৬ সাল থেকে ২০২১ সাল অবধি কয়লা কারবার চলেছিল শাহজাহানের। এরপর ED কয়লা পাচারের তদন্তে নামতেই তিনি সেই কারবার বন্ধ করে দেন বলে খবর। তবে এই পাঁচ বছরের সময়কালে শাহজাহানের জুলুম সহ্য করতে হয়েছে বহু ইট ভাটার মালিককে। জানা গেল, ধামাখালির দু’জন ইট ভাটার মালিক খরচ সামলাতে হিমশিম খেয়ে গিয়েছিলেন। শেষ অবধি সন্দেশখালির ‘বাঘে’র কাছেই নিজেদের ভাটা বিক্রি করে দেন।
এই বিষয়ে সন্দেশখালির TMC বিধায়ক সুকুমার মাহাতো কোনও প্রকার মন্তব্য করতে চাননি। অন্যদিকে BJP নেতা বিকাশ মাহাতো বলেন, ‘আমরা এতদিন ধরে বলেছি, শাহজাহান প্রচুর দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। ED-র তদন্তে সবকিছুই উঠে আসবে’।