বাংলা হান্ট ডেস্কঃ লটারি কিং সান্তিয়াগ মার্টিন! বিগত পাঁচ বছর ধরে তিনি ইডির নজরে রয়েছেন। চলতি বছরেই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই নির্বাচনী বন্ডের তথ্য তথ্য প্রকাশে এনেছিল নির্বাচন কমিশন। সেই তালিকা প্রকাশ্যে আসতেই দেশ জুড়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। সেই বন্ড কেনার তালিকায় দেখা যায় শীর্ষস্থানেই নাম রয়েছে বিতর্কিত লটারি ব্যবসায়ী মার্টিন সান্তিয়াগোর সংস্থা ‘ফিউচার গেমিং অ্যান্ড হোটেল সার্ভিসেস’-এর।
রাজ্যে শুরু ইডি-র (Enforcement Directorate) তল্লাশি
এই লটারি ব্যবসায়ী নাকি মোট ১,৩৬৮ কোটি টাকার নির্বাচনী বন্ড কিনেছিল। সে সময় দেশজুড়ে ব্যাপক তোলপাড় ফেলে দিয়েছিল এই লটারি ব্যবসায়ীর সংস্থা। নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে মোট ১৩০০ কোটি টাকার বেশি চাঁদা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল মার্টিনের সংস্থা ও সহযোগীদের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার এই বিতর্কিত লটারি কিং-এর অন্তত কুড়িটি ডেরায় চিরুনি তল্লাশি চালিয়েছে ইডি (Enforcement Directorate)।
যা অবস্থিত পশ্চিমবঙ্গ সহ একাধিক রাজ্যের ২০ টি আলাদা ঠিকানায়। যার মধ্যে অন্যতম সল্টলেকের মহিষবাথান ও উত্তর ২৪ পরগনার মাইকেল নগর। এছাড়াও কলকাতার আশপাশের আরো চারটি ঠিকানা রয়েছে। তবে শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয় তাছাড়াও তামিলনাড়ুর চেন্নাই, কোয়েম্বাটুর, হরিয়ানার ফারিদাবাদ এবং পাঞ্জাবের লুধিয়ানা চলেছে তল্লাশি।
এই তল্লাশি অভিযান সম্পর্কে ইডির (Enforcement Directorate) আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্র বলেছেন, ‘কেরলের কোচি ও কলকাতার বিশেষ সিবিআই আদালতে অভিযোগ দায়ের করে মামলা করা হয়েছে। ওই মামলার ভিত্তিতে কলকাতা ও দিল্লির তদন্তকারী দল যৌথ ভাবে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে।’ শুধু মার্টিন নয় তার জামাই আধভ অর্জুন এবং তাঁদের সহযোগীদের সম্পর্কিত একাধিক ঠিকানায় ৬০ হাজার কোটি টাকার বেশি লটারি দুর্নীতির তদন্তে তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: শুভেন্দুকে মারতে রাশিয়া থেকে আনা হয়েছে স্প্রে! প্রাণ নাশের আশঙ্কা অর্জুন সিংয়ের
তদন্তকারী সংস্থা (Enforcement Directorate) সূত্রের খবর ফিউচার গেমিং-এর বেআইনি আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত অভিযোগের তদন্তে সপ্তাহখানেক আগে দক্ষিণ ভারতের কয়েকটি জায়গায় তল্লাশি শুরু করেছিল ইডি। ওই সব জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে পশ্চিমবঙ্গের কয়েক জনের জড়িত থাকার সূত্র পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে, চেন্নাইয়ে মার্টিনের বাড়ি থেকে হিসাব-বহির্ভূত ৭.২ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছিল। ওই আর্থিক দুর্নীতি তদন্ত বন্ধ করার জন্য চেন্নাই পুলিশের অপরাধ দমন শাখার আর্জিতে গ্রীন সিগন্যাল দিয়েছিল নিন্ম আদালত।
তারপর গত মাসেই সেই রায় খারিজ করে দেয় মাদ্রাজ হাই কোর্ট। সেইসাথে মার্টিন ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে তদন্ত চালানোরও নির্দেশ দেওয়া হয়। তদন্ডকারীদের দাবি, ‘ফিউচার গেমিং সংস্থার অধীনে একাধিক লটারির ব্যবসা করা হয়। তাতে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র এবং বেআইনি আর্থিক লেনদেনের হদিস পাওয়া গিয়েছে।’ এদিন মোট কুড়িটি জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে কয়েক হাজার কোটি টাকার টিকিট উদ্ধার করেছে তদন্তকারীরা। প্রাথমিক তদন্তের পর অনুমান করা হচ্ছে এই লটারি দুর্নীতির টাকায় রাজ্যের একাধিক প্রভাবশালীরা লাভবান হয়েছে।