সূর্যের বিনাশ ঘটবে কবে? ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি জানাল চাঞ্চল্যকর তথ্য

বাংলা হান্ট ডেস্ক: সূর্যকে (Sun) কেন্দ্র করেই তৈরি হয়েছে সৌরজগত। পাশাপাশি, পৃথিবী সহ সৌরজগতের অন্তর্গত সমস্ত গ্রহ সূর্যকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হচ্ছে। সর্বোপরি, পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্বের ক্ষেত্রে সূর্যের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এমতাবস্থায়, এই নক্ষত্রের বিনাশ সম্পর্কে আমরা ইতিমধ্যেই নানান ধরণের মতামত প্রায়শই শুনেছি। এমনকি, সূর্যের বিনাশের পর আমাদের সৌরজগতের কি হবে? পৃথিবীর উপরে এর কি প্রভাব পড়বে? কবে নাগাদ এই ঘটনা ঘটবে? এইসব প্রশ্নও ভিড় করে আসে আমাদের মনে। এমতাবস্থায়, এই সংক্রান্ত একাধিক প্রশ্নের উত্তর এবার পাওয়া গেল। মূলত, ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (ESA) এই উত্তরগুলি দেওয়ার চেষ্টা করেছে।

ইউরোপিয় স্পেস এজেন্সির গায়া (Gaia) মহাকাশযানের তথ্য অনুসারে জানা গিয়েছে যে, সূর্য আপাতত তার জীবনকালের অর্ধেক সময় অতিক্রম করেছে। এমতাবস্থায় বয়সের অর্ধেক পেরিয়ে যাওয়া মানে এই নয় যে, সূর্য খুব তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যাচ্ছে। আসলে সূর্যের বর্তমান বয়স হল প্রায় ৪.৫৭ বিলিয়ন বছর। অর্থাৎ, সূর্য আরও কয়েক বিলিয়ন বছর ধরে আমাদের সৌরজগতের গ্রহগুলিকে আলোকিত করবে।

এই প্রসঙ্গে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আমাদের সৌরজগতের সবচেয়ে বড় এই নক্ষত্রটিও একদিন শেষ হয়ে যাবে। মূলত, এটির কোর হাইড্রোজেন ফুরিয়ে যাবে। এটি এমনই একটি প্রক্রিয়া হবে, যার পরে সূর্য তার তাপমাত্রা কমিয়ে একটি বিশালাকার লাল নক্ষত্রের রূপ নেবে। তবে এটি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সূর্যের বয়স যখন ৮ বিলিয়ন বছর হবে, তখন এটি ধীরে ধীরে শীতল হবে। এই পরিসংখ্যান অনুসারে, সূর্য এখনও প্রায় ৩ বিলিয়ন বছর ধরে আমাদের পৃথিবীতে জীবনের আশা জিইয়ে রাখবে।

পাশাপাশি, ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি আরও জানিয়েছে যে, কার্যক্ষমতা শেষ হওয়ার পর সূর্য একটি আবছা সাদা নক্ষত্রে পরিণত হতে পারে, যা হবে বাকি নক্ষত্রদের মতো। এমতাবস্থায়, সূর্যের অবসান মানে পৃথিবীতে প্রাণও তার ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেছেন, সূর্যের এহেন অবস্থার পর পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব অসম্ভব হয়ে পড়বে। গাছ-গাছালিও বিনষ্ট হয়ে যাবে। স্বাভাবিকভাবেই, যে সব জীব উদ্ভিদের উপর নির্ভরশীল তারাও নিশ্চিহ্ন হবে। সর্বোপরি, সমগ্ৰ খাদ্যশৃঙ্খল প্রভাবিত হবে।

1 thesunwontdi

অপরদিকে, পৃথিবীতে সূর্যের আলো না পৌঁছনোর কারণে বায়ুমণ্ডল দূষিত হবে এবং তাপমাত্রা কমে যাওয়ার কারণে ভয়ানক ঠান্ডার প্রভাবে মানুষের বেঁচে থাকাও কঠিন হবে। যদিও, এই ভয়াবহ ঘটনা ঘটতে এখনও কয়েক বিলিয়ন বছর বাকি। তাই এখনই আতঙ্কিত হওয়ার দরকার নেই। ইতিমধ্যেই বিজ্ঞানের প্রভূত উন্নতি ঘটছে। এরই মধ্যে হয়ত আমাদের বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর মতো আরেকটি গ্রহ খুঁজে বের করতে সক্ষম হবেন। যেখানে জীবনধারণও সম্ভব হতে পারে।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর