বাংলা হান্ট ডেস্ক: ইতিমধ্যেই চলতি বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষা (Madhyamik Pariksha) শুরু হয়েছে। আর পাঁচজন পরীক্ষার্থীর মত ১৬ বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী কাশ্মীর মণ্ডলও নিশ্চিন্তে দিচ্ছিল জীবনের এই প্রথম বড় পরীক্ষাটি। যদিও, সেই পরীক্ষার মাঝপথেই কাটল তাল। হঠাৎই বাবার মৃত্যু সংবাদ পেয়ে এক মুহূর্তেই পাল্টে গিয়েছে তার জীবন। গত শনিবার ভোরে ওড়িশায় এক দুর্ঘটনায় উত্তর ২৪ পরগণার (North 24 Parganas) বসিরহাটের মাটিয়া থানার নেহালপুরের সর্দারপাড়ার সাতজনের মৃত্যু হয়।
সেই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান বছর ৪৫-এর গাড়ির চালক সূরজ মণ্ডলও। এমতাবস্থায়, রবিবার দুপুরে বিশেষ অ্যাম্বুল্যান্সে করে ওই সাতজনের নিথর দেহ ফেরে নেহালপুরে। এদিকে, একইসাথে সাতজনের মৃত্যুতে স্বাভাবিকভাবেই গোটা গ্রামে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। পাশাপাশি, পরীক্ষা চলাকালীন বাবাকে হারিয়ে রীতিমতো ভাষা হারিয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী কাশ্মীর মণ্ডলও।
তবে বাবার মৃত্যুর খবর পেয়েও বুকে পাথর চেপে তাঁর স্বপ্নপূরণের জন্য নিজের লক্ষ্যে স্থির রয়েছে কাশ্মীর। শুধু তাই নয়, বাবাকে হারানোর তীব্র যন্ত্রণাকে সঙ্গী করেই মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে সে। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, ধান্যকুড়িয়া হাই স্কুলের ছাত্র কাশ্মীরের মাধ্যমিক পরীক্ষার সেন্টার পড়েছে বুনোরাটি হাইস্কুলে।
এদিকে, ছোটবেলা থেকেই তার বাবার ইচ্ছে ছিল কাশ্মীরকে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার তৈরি করার। অথচ ভাগ্যের পরিহাসে সেই স্বপ্নপূরণের আগেই না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছেন তার বাবা। এমতাবস্থায়, অভাবের সংসারে বাবাকে হারিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায় কাশ্মীর।
এই প্রসঙ্গে কাশ্মীর জানিয়েছে, “জীবনযুদ্ধে বাবা কখনও হার মানেন নি। সেজন্য আমিও হার মানব না। যত কষ্টই হোক না কেন বাবার স্বপ্ন পূরণ করব।” আর এইভাবেই গভীর শোকের মধ্যেও লক্ষ্যপূরণের দৃঢ়সংকল্পের ওপর ভর করে শত কষ্ট সামলে নিজেকে তৈরি করছে কাশ্মীর। পাশাপাশি বাবার অনুপস্থিতিতে তাঁর স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করাই তার একমাত্র লক্ষ্য হয়ে উঠেছে।