বাংলা হান্ট ডেস্কঃ চিকিৎসার গাফিলতি ছাড়াও মাঝেমধ্যেই উঠে আসে রাজ্যের একাধিক জেলার বেহাল চিকিৎসা পরিষেবার দৃশ্যও। তাই দূরের পথ পেরিয়ে বিভিন্ন জেলা থেকে চিকিৎসার জন্য রোগীরা ছুটে আসেন শহর কলকাতায়। কিন্তু কোনো ভাবেই এখানকার সরকারি হাসপাতাল (Government Hospital) গুলিতে তাদের ভর্তি করা যায় না। বছরের পর বছর ধরে উঠে আসছে এই অভিযোগ। যা আরও প্রকট হয়ে ধরা পড়ল সাম্প্রতিক একটি ঘটনায়।
সরকারি হাসপাতালে (Government Hospital) মিলল না পরিষেবা
জানা যাচ্ছে, হুগলির বাসিন্দা অপর্ণা পাত্র (২৫), গত ৬ জানুয়ারি সিজারের পর কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। তিনি হুগলির পোলবার সুগন্ধা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের নির্বাচিত সদস্য। সন্তান জন্ম দেওয়ার পর থেকেই কোমায় রয়েছেন অপর্ণা। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই নাকি ৮০ শতাংশ ব্রেন ডেড হয়েছে ওই প্রসূতির। চিকিৎসায় সাড়াও দিচ্ছেন না তিনি। বেসরকারি হাসপাতালের খরচের বোঝা অনেক। তাই খরচ সামলাতে না পেরে বাধ্য হয়ে তাঁকে বাড়িতেই নিয়ে এসেছেন বাড়ির লোকজন।
অসুস্থ তৃণমূল কর্মীর কথা জানতে পারেন চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার। তারপরেই তিনি অপর্ণাকে বাঙ্গুরে (Government Hospital) নিয়ে যাওয়ারর পরামর্শ দেন। মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের ওএসডি কুণাল দাস নামে একজনের নম্বরও দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কাজে এল না বিধায়কের সুপারিশও। শুক্রবার অসুস্থ অপর্ণাকে নিয়ে বাঙ্গুরে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু অপর্ণার ভাই প্রসেনজিৎ মাঝি জানান, বিধায়ক যে নম্বর লিখে দিয়েছিলেন সেই নম্বরে কেউ ফোন ধরেননি। ফলে বাঙুরে গিয়ে চরম হয়রানি হয় তাঁদের।
আরও পড়ুন: মমতার বিশ্বস্ত সেনা সুফিয়ান ৪ কোটি দিয়েছিলেন ‘কাকু’কে! বিরাট দাবি CBI-এর
জানা যাচ্ছে, পরে এক পুলিশের সাহায্য নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়েই আউটডোরে রোগীকে দেখিয়ে আবার অ্যাম্বুলেন্সে করে চুঁচুড়া ফিরে এসেছেন তাঁরা। অসুস্থ অপর্ণার ভাইয়ের কথায়, ‘বিধায়ক চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হল না।’ একরাশ হতাশার সাথে এপ্রসঙ্গে চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার বলেছেন, ‘এটা আমারই ব্যর্থতা। যে আমি রোগীকে ভর্তি করতে পারলাম না।’
প্রসঙ্গত এর আগে ওই রোগী চুঁচুড়ার বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীন সেখানে গিয়েছিলেন হুগলির সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিকিৎসায় সব ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাসও দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু অপর্ণা দেবীর বাড়ির লোকেদের দাবি, সবাই আশ্বাস দিলেও, চিকিৎসা মিলছে না। উল্লেখ্য চিকিৎসা পরিকাঠামো নিয়েই ইতিপূর্বে একাধিকবার প্রশ্নের মুখে পড়েছে রাজ্য সরকার। বিষয়টি জানাজানি হতেই ব্যাপক শোরগোল পরে গিয়েছে চারিদিকে। যদিও এব্যাপারে বাঙ্গুর হাসপাতালের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। কিছুদিন আগেই মেদিনীপুরের সরকারি (Government Hospital) মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ‘স্যালাইন কাণ্ডে’ মৃত্যু হয়েছিল এক প্রসূতির। একইসাথে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন আরও চারজন প্রসূতি। ওই ঘটনায় তোলপাড় হয়েছিল সারা বাংলা।