বাংলা হান্ট ডেস্ক: ঘরে ঘরে রোগবালাই। আর এই রোগের কারণে প্রান যায় যায় অবস্থা সকলের। তবে এই রোগ থেকে বাঁচতে মানুষ বিকল্প পন্থার ভরসা করেন। আয়ুর্বেদিক কিংবা এলোপ্যাথিক নয় মানুষ ভরসা করছেন ভেষজ ওষুধের উপর। হলুদ, নিম পাতা, আমলা, তুলসী, বাসক বিভিন্ন পাতার উপর ভরসা করে থাকেন। তবে এগুলি ছাড়াও বর্তমানে অনেকে বার্লির উপর ভরসা করছেন। বিশেষ করে বার্লি চা (Barley Tea) বিভিন্ন রোগ অসুখের মোক্ষম দাওয়াই।
বার্লি চা (Barley Tea) রোগ প্রতিরোধের দাওয়াই:
বার্লিতে (Barley Tea) আছে ফাইবার, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, সেলেনিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজ। এটি এমন এক ধরনের শস্যদানা যা স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইদানীংকালে, স্বাস্থ্য সচেতনতার অনেকেই ভাতের বদলে বার্লি সেদ্ধ তালিকায় রাখছেন। তবে সেদ্ধ খাওয়ার থেকে ভালো, যদি চা (Barley Tea) করে খেতে পারেন। এতে মারাত্মক রোগ থেকে বাঁচা যায়। প্রতিদিন সকালে দুধ চায়ের বদলে এই চা খেলে গ্যারান্টি ফল পাবেনই পাবেন।
বার্লি (Barley) চা খেলে কি কি রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়:
১) কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা: আপনি যদি কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় ভোগেন তাহলে অবশ্যই বার্লি চা খান। এই বার্লিতে (Barley Tea) রয়েছে অধিক মাত্রায় ফাইবার। এই ফাইবার আপনার অন্ত্র, পাকস্থলী সুস্থ রাখার দায়িত্ব নেন। পেটের ভিতর থাকার সমস্ত জীবাণু টেনে বের করে আনে। এর ফলে পেটের স্বাস্থ্য থাকে ভালো।
২) কিডনির স্বাস্থ্য বজায়: বর্তমানে কিডনির সমস্যায় ভুগছেন অনেকেই। বিশেষ করে কিডনিতে স্টোন যেন ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করছে। আর এই রোগ থেকে বাঁচতে বার্লি চায়ের উপর ভরসা করুন। কারণ কিডনিতে স্টোন তখনই হয় যখন দূষিত পদার্থ কিংবা জল কম খাওয়া হয়। আর এই বার্লি খেলে শরীরে জলের অভাব মেটায়। পাশাপাশি, শরীর থেকে সমস্ত দূষিত পদার্থ নিংড়ে মুচড়ে বের করে আনে। তাই প্রতিদিন সকালবেলা এক কাপ হলেও বার্লি চা (Barley Tea) পান করুন।
৩) ওজন কমায়: আপনি যদি ওজন কমানোর (Weight Loss) চিন্তায় কাহিল হয়ে থাকেন তাহলে বার্লি চা পান করুন। কারণ এতে থাকা বিশেষ কিছু উপাদান বিপাক হার উন্নত করে। ফলে ওজন কমে তরতর করে।
৪) ক্যান্সার: বিশেষজ্ঞদের মতে বার্লিতে রয়েছে ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস। যাক শরীরে হরমোনের ভারসাম্য ধরে রাখার পাশাপাশি শরীর থেকে ক্যান্সারের (Cancer) কোষ জন্মাতে দেয় না। বিশেষ করে মহিলাদের স্তন ক্যান্সার এবং পুরুষদের প্রোস্টেট ক্যান্সারের হাত থেকে বাঁচায়।
৫) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাতেও অত্যন্ত কার্যকরী এই চা। বিশেষ করে এই শীতকালে এইটা প্রতিদিন পান করার চেষ্টা করুন দেখবেন জ্বর সর্দি কাশি ইত্যাদি আপনাকে আক্রমণও করতে পারছে না। পাশাপাশি শরীরের বিভিন্ন অঙ্গও বেশ ভালোভাবে কাজ করা শুরু করে।
আরও পড়ুন: নিয়ম মেনে করুন অর্ধ চক্রাসন, ঝপাঝপ কমবে মেদ, ৩০ এও থাকবেন একদম ফিট!
৬) সুগার নিয়ন্ত্রণ: বার্লিতে থাকা “বিটা গ্লুকান” রক্তে শর্করার (Blood Sugar) মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। মূলত রক্তে থাকা শর্করা শোষণ করে নেয়। রক্তে শর্করার মাত্রা কমে গেলে হৃদরোগ, স্ট্রোকের ঝুঁকিও কমতে থাকে। তাই চেষ্টা করুন বার্লি চা পান করার।
৭) দাঁতের স্বাস্থ্য: দাঁতের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে বার্লির চা খাওয়া উপকারী। কারণ এতে রয়েছে, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য। এই উপাদানটি দাঁতে স্ট্রেপ্টোকোকাস নামক ব্যাকটেরিয়া জমা হতে দেয় না। হলে দাঁতের ক্ষয় হওয়া থেকে বেঁচে যায়।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে বার্লি চা বানাবেন কি করে:
সবার আগে জল দিয়ে বার্লি ধুয়ে নিন। এরপর ওই বার্লি রাতে ভিজিয়ে রেখে দিন। পরের দিন ওই ভেজানো বার্লি জলে ফোটান। টানা আধঘন্টা ফোটাতে পারেন। মূলত বার্লি আর জলের মিশ্রণ যতক্ষণ না ঘন না হচ্ছে ততক্ষণ ফুটাবেন। যেটা ২০ মিনিট কিংবা ৩০ মিনিটও হতে পারে। এরপর বার্লি থেকে ওই মিশ্রণে কয়েক ফোঁটা লেবু রস কিংবা পুদিনা পাতা মেশাতে পারেন। প্রতিদিন সকালে উঠে খালি পেটে এই বার্লি খেয়ে নিন।