ভারতের এই স্টেশনে সবাই টিকিট কাটলেও সফর করেন না ট্রেনে! কারণ জানলে অবাক হবেন

বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমাদের দেশে ট্রেন (Train) হল গণপরিবহণের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। নিত্যদিনের যাতায়াতের পাশাপাশি দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যাওয়ার ক্ষেত্রে রেলপথের (Indian Railways) ওপরেই ভরসা করেন অধিকাংশজন। পাশাপাশি, অন্যান্য গণপরিবহণগুলির তুলনায় রেলপথে ভ্রমণের ক্ষেত্রে খরচের পরিমানও অনেকটাই কম।

এমতাবস্থায়, ট্রেনে আমরা সবাই সফর করলেও ভারতীয় রেলের এমন কিছু অনন্য বিষয় রয়েছে যেগুলি আমরা অনেকেই জানিনা। যদিও, সেগুলি জানার পর রীতিমতো অবাক হয়ে যান সকলেই। সেই রেশ বজায় রেখেই বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা আপনাদের কাছে দেশের এমন একটি রেল স্টেশনের বিষয়ে জানাবো যেখানে সবাই প্রতিদিন টিকিট কাটলেও ট্রেনে সফর করেন না। হ্যাঁ, শুনে অদ্ভুত মনে হলেও এটা কিন্তু একদমই সত্যি।

জওহরলাল নেহরুর নির্দেশে নির্মাণ হয়েছিল এই রেল স্টেশন: তখন ছিল ১৯৫৪ সাল। সেই সময়ে রেলমন্ত্রী ছিলেন লাল বাহাদুর শাস্ত্রী। এদিকে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু সেই সময়ে লাল বাহাদুর শাস্ত্রীকে উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজের কাছে দয়ালপুরে একটি রেল স্টেশন নির্মাণের বিষয়ে জানিয়েছিলেন।

এমতাবস্থায়, ওই রেল স্টেশনটির নির্মাণও হয়েছিল এবং সেটি প্রায় ৫০ ধরে চালু ছিল। কিন্তু ২০০৬ সালে এই রেল স্টেশনটি হঠাৎই বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে, জানানো হয় যে, রেলের নিয়ম অনুযায়ী এই স্টেশন থেকে নির্ধারিত রেভিনিউ পাওয়া যাচ্ছিল না। তাই, সেটিকে বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

টিকিট কিনেও কেন ট্রেনে সফর করা হয় না: রেলের নিয়ম অনুসারে, ব্রাঞ্চ লাইনে প্রতিদিন কমপক্ষে ২৫ টি টিকিট এবং মেন লাইনের ট্রাঙ্ক রুটে প্রতিদিন ৫০ টি টিকিট বিক্রি করতে হয়। তা না হলে যে কোনো স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে পারে রেল। এমতাবস্থায়, দয়ালপুর স্টেশনেও ওই একই ঘটনা ঘটেছে। যার ফলে সেটি ২০০৬ সালে বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু, ওই স্টেশন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েন সেখানকার মানুষ। এমনকি, স্টেশনটি ফের চালু করার জন্য দয়ালপুরের মানুষ বিভিন্ন পদক্ষেপও গ্রহণ করেন। শেষ পর্যন্ত সরকার ২০২২ সালের জানুয়ারিতে স্টেশনটি পুনরায় চালু করার ঘোষণা করে।

080323gh nat5a 641ad97fe70c3

তবে, সেখানে খুব বেশি ট্রেন থামে না। কিন্তু দয়ালপুরের মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এখন ট্রেনের আর কোনো নিয়মের জেরে তাঁদের স্টেশন বন্ধ হতে দেবেন না। তাই গ্রামের মানুষ একত্র হয়ে টিকিট কাটছেন। যদিও, তাঁরা যাতায়াত করেন না। মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে, রেল স্টেশন ফের চালু করার পর থেকে সেখানে প্রতি মাসে ৭০০ টাকার টিকিট বিক্রি হয়। এমতাবস্থায়, গ্রামবাসীরা টিকিট বিক্রি বৃদ্ধির চেষ্টা করছেন। যাতে সরকারকে জানানো যায় যে, সেখান থেকেও রেভিনিউ মিলবে। যার ফলে ওই স্টেশনে আরও বেশি সংখ্যক ট্রেনও থামানো যাবে।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর