বাংলাহান্ট ডেস্ক : এক বছর, দু বছর নয়! সেনাবাহিনীতে কাজ করছেন দেড় যুগ যাকে বলে ১৮ বছর। যুক্ত ছিলেন হেলিকপ্টার অপারেশনের সঙ্গেও। উরি বেস ক্যাম্প থেকে শুরু করে কেদারনাথের ভয়াবহ বিপর্যয়ের সাক্ষী থাকতে হয়েছে তাকে। কথা হচ্ছে বাহানাগার বাসিন্দা দীপক রঞ্জন বেহরাকে নিয়ে।
বহু বিপদ সামনে থেকে চোখে দেখার পরেও শুক্রবারের ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনার কথা ভেবেই আঁতকে উঠছেন। স্পষ্ট ভাবেই দীপক রঞ্জন বেহরা জানাচ্ছেন, সেনাবাহিনীতে কাজ করলেও এর আগে কখনও এত বীভৎসতার মুখোমুখি হননি তিনি। এখনও তিনি চোখ বুজলে সেই ভয়ংকর ছবি চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছেন।
জানা গিয়েছে, বাহাঙ্গা বাজারে ভয়ংকর রেল দুর্ঘটনার পর স্থানীয় যুবকদেরকে সঙ্গে নিয়ে গিয়ে তিনি নিজের হাতে ২৮ জনকে উদ্ধার করেছেন। শুধুমাত্র মোবাইলের টর্চকে সঙ্গী করেই যুদ্ধে নেমেছিলেন তিনি। এক হাতে মোবাইল ধরে মোবাইলের টর্চ জ্বেলে সেই আলোতেই রাতের অন্ধকারে হাতড়ে হাতড়ে উদ্ধার করেছেন দুর্গতদের।
সামনে থেকে বীভৎস এই দৃশ্য দেখার পর এখনও রাতে ঘুমোতে পারছেন না তিনি। ওদিকে, বহু দেহই থেঁতলে গিয়েছে। আলাদা করে কাউকেই আর চিনতে পারা যাচ্ছে না। বাহানাগা অস্থায়ী মর্গের বাইরে এখনও শয়ে শয়ে অসহায় মানুষদের ভিড়। কেউ ছুটে এসেছেন পাঁশকুড়া থেকে আবার কেউবা বিহার থেকে এসে পরিজনের খোঁজ নিচ্ছেন।
বাহানাগার বাসিন্দা দীপক রঞ্জন বেহরার কাছে সাহায্যের আশায় আসা এক অসহায় দাদা জানাচ্ছেন, দুর্ঘটনার রাতে একজন লোক ফোন তুলে জানিয়েছিলেন তাঁর ভাইকে হাসপাতাল নিয়ে যাচ্ছেন। তারপর থেকে আর কোনও খোঁজ নেই ভাইয়ের। কটক, জলেশ্বর, বালেশ্বরের সব হাসপাতাল খুঁজে ফেলেছেন। কিন্তু ভাইয়ের কোনও খোঁজ নেই। সব মিলিয়েই যেন আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন দীপক।