বাংলাহান্ট ডেস্ক : বউ এক! আর স্বামী দুই! মানে, একজন অতীত আর আরেকজন বর্তমান। এবার, এই প্রাক্তন আর বর্তমানের দ্বন্দে বিভীষিকাময় হয়ে উঠল সুতপার জীবন। সোমবার শ্রীরামপুরের চণ্ডীতলার ঘটনা যেন মনে করিয়ে দিল, আগেকার দিনের ‘ডুয়েল’ লড়ে পাত্র নির্বাচনের কাহিনী। একনলা বন্দুক বা তলোয়ারে নিয়মকানুন মেনে হত সেই লড়াই। তবে, এক্ষেত্রে তলোয়ার, বন্দুক না থাকলেও, ছিল মোটা মোটা লাঠিসোঁটা। আর সেই অস্ত্র উঁচিয়েই দুই প্রতিপক্ষ সুরজিৎ জড় এবং দীপঙ্কর রক্ষিত একে অপরের দিকে তেড়ে গেলেন। এমনকি কোনও নীতি-নিয়মের ধার ধারেননি। স্ত্রীকে নিয়ে ঝগড়ায় প্রাক্তন স্বামী লাঠিসোঁটা নিয়ে চ়়ড়াও হয়েছিলেন বর্তমানের বাড়িতে। সেখানেই এক জন আর এক জনের মাথা মেরে ফাটিয়ে দিয়েছেন বলেই অভিযোগ উঠেছে।
জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে এমন ভয়াবহ ঘটনার সাক্ষী থেকেছে চণ্ডীতলা থানার আঁইয়া পঞ্চাননতলা। ‘ডুয়েল’ পর্ব শেষে আপাতত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দীপঙ্কর। এমন ভয়াবহ সংঘর্ষের জেরে জখম হয়েছেন আরও পাঁচ জন। গুরুতর চোট লেগেছে সুতপার শরীরেও যিনি কিনা সুরজিতের প্রাক্তন এবং দীপঙ্করের বর্তমান স্ত্রী। অর্থাৎ সুতপা দেবীই হলেন আসল নায়িকা যাঁকে নিয়ে লড়াইয়ের সূত্রপাত। পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। তাঁর মধ্যে এক জন সুরজিৎ অন্য জন তাঁর জামাইবাবু নিতাই ঘোষ।
মঙ্গলবার পুলিশের কাছে প্রাক্তন স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন সুতপা। তিনি জানিয়েছেন, “চণ্ডীতলার দীপঙ্কর রক্ষিতের সঙ্গে বিয়ের আগে সিঙ্গুরের বারুইপাড়ায় প্রথম বার বিয়ে হয়েছিল। প্রথম পক্ষের স্বামী ছিলেন সুরজিৎ। কিন্তু সুরজিতের সঙ্গে সাংসারিক অশান্তি লেগেই থাকত। বেশ কয়েক বছর বাপের বাড়িতে থাকার পর সুরজিতের সঙ্গে সম্পর্কে ইতি টেনে সুতপা বিয়ে করেন দীপঙ্করকে।” এর পাশাপাশি পুলিশকে সুতপা একথাও জানিয়েছেন, প্রাক্তন স্ত্রীর এই দ্বিতীয় বিয়ে মেনে নিতে পারেননি তাঁর প্রথম পক্ষের স্বামী।
সূত্রের খবর, সোমবার রাতে সুরজিৎ দলবল নিয়ে চড়াও হন দীপঙ্করের বাড়িতে। দীপঙ্করের বাড়িতে মারামারির খবর পেয়েই গ্রামের লোকজন চলে এলে অন্যরা পালিয়ে গেলেও সুরজিৎ ও তাঁর জামাইবাবুকে ধরে ফেলেন গ্রামবাসীরা। পাল্টা মারে গুরুতর আহত হন নিতাই ও তার সঙ্গীরাও। আহতদের ভর্তি করা হয় আকুনি ইছাপসর ব্লক প্রাথমিক হাসপাতালে । খবর পেয়ে চণ্ডীতলা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দু’জনকে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানিয়েছে পারিবারিক অশান্তির জেরে এই সংঘর্ষ।