বাংলাহান্ট ডেস্ক: কলকাতা পুরসভার পার্কিং ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে এক হাত নিলেন প্রাক্তন মেয়র ও বিজেপি নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায় (Sovan Chattopadhyay)। একুশের নির্বাচনের ঠিক আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। তারপর ভোট মিটলে ফের মুখ ফিরিয়েছিলেন। এরপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর চেষ্টাও করেছিলেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী তেমন একটা গুরুত্ব দেননি। এ বার ফিরহাদ হাকিমের (Firhad Hakim) বিরুদ্ধে বলে তিনি কি ফের সেই চেষ্টাই করছেন? প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে।
শোভন চট্টোপাধ্যায় এ দিন একটি বাংলা প্রবাদবাক্য দিয়ে যেন বোঝাতে চাইলেন। প্রাক্তন মেয়র বলেন, “ভাবিয়া করিয়ো কাজ, করিয়া ভাবিও না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) না জানিয়ে কোনও কাজ করিনি। আমি ‘হার মাস্টার্জ ভয়েস’ ছিলাম। কিন্তু তার মানে আমি সিদ্ধান্ত নিশ্চই নেব না। আমাকে তো প্রথমে মুখ্যমন্ত্রীকে পরিকল্পনাটির ব্যাপারে জানাতে হবে। পরিকল্পনার কারণ কী, প্রয়োজনীয়তা কী? সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছাড়পত্র ছাড়া সিদ্ধান্ত নিতে আমি পারি না। আত্মবিশ্বাসী হওয়া ভাল, কিন্তু অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস ভাল না।”
কলকাতা পুরসভার সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত ঘিরে জলঘোলা শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। মেয়র ফিরহাদ হাকিমের পার্কিং ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নাকি মুখ্যমন্ত্রীকে জানানো হয়নি। শুক্রবার বিকেলে এক সাংবাদিক বৈঠক করে এমনই বলেন শাসক দলের এক মুখপাত্র। তিনি বলেন, “কলকাতায় পার্কিং ফি বৃদ্ধি মুখ্যমন্ত্রীর অনুমোদন ছাড়া হয়েছে। মানুষের উপর যে এমন একটি চাপ দেওয়া হচ্ছে, তার ব্যাপারে তাঁরা জানতেন না। এই সিদ্ধান্ত সরকার বা দল, অনুমোদন করে না।”
এরপর কলকাতা পুরসভাকে এই সিদ্ধান্ত বাতিল করার কথাও বলেন তিনি। তারপর পুরসভার বিজ্ঞপ্তি বেরোনোর আগেই তৃণমূলের টুইটার হ্যান্ডেল থেকে পুরসভাকে বাড়তি পার্কিং ফি প্রত্যাহার করার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনা নিয়ে ফিরহাদের বক্তব্য, এভাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে বিষয়টা না বললেই ভাল হত। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শোভন চট্টোপধ্যায় মুখ খুলেছেন। ফিরহাদ হাকিমকে কটাক্ষ করেছেন বিজেপি নেতা।
তবে তাঁর বক্তব্যে বারবার যেন উঠে এসেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আনুগত্যের ছাপ। তাঁর বক্তব্যের পর রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা এই প্রশ্ন করেছেন। তবে কি মমতার প্রতি বিশ্বস্ততা দেখাতে চাইছেন দিদির আদরের কানন? শোভন চট্টোপাধ্যায় মেয়রের পদ ছাড়ার পর থেকেই সেই পদে রয়েছেন ফিরহাদ হাকিম। একইসঙ্গে মন্ত্রিসভারও দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। রাজনীতির অন্দরে জল্পনা, তবে কি ফের মেয়রের আসনকে পাখির চোখ করেছেন শোভন?