বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: ফের একবার শোকের ছায়া নেমে এলো কলকাতা ময়দানে। ইহলোক ত্যাগ করলেন তারকা প্রাক্তন ফুটবলার সমর ব্যানার্জি। যদিও ময়দানে তিনি বেশি পরিচিত ছিলেন বদ্রু ব্যানার্জি নামেই। কিছুদিন আগেই গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার গভীর রাতে এসএসকেএমেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন কিংবদন্তি ফুটবলার।
মৃত্যুকালে জাতীয় দলের এই ফুটবলারের বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। নিজের বলতে ছিলেন এক নাতনি এবং পুত্রবধূ। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে আগের মাসেই করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রথমে বাঙ্গুর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু পরিস্থিতি আরও সঙ্গিন হয়ে ওঠায় শেষপর্যন্ত এসএসকেএমে নিয়ে আসা হয় তাকে। শেষ কয়েকটা দিন তাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল। কিন্তু তিন হপ্তারও বেশি লড়াই করে শেষপর্যন্ত হার মানলেন তিনি। পিকে ব্যানার্জি, চুনী গোস্বামী, সুভাষ ভৌমিক, সুরজিৎ সেনগুপ্তদের পর আরও এক ভারতীয় ফুটবলের নক্ষত্রকে হারালো ময়দান।
১৯৫৬ মেলবোর্ন অলিম্পিকে বদ্রু ব্যানার্জি ভারতীয় দলের নেতৃত্বের দায়িত্বে ছিলেন এবং অল্পের জন্য তারা পদক হাতছাড়া করেন। এখনও অবধি ভারতীয় ফুটবলের আন্তর্জাতিক মঞ্চে সেরা পারফরম্যান্স। সেই সময় তিনি ক্লাব ফুটবলে মোহনবাগানের হয়ে খেলতেন। ১৯৫২ থেকে শুরু করে টানা ৭টি বছর তিনি মোহনবাগানে খেলেছেন এবং শেষ দুই বছর বাগানের অধিনায়কত্বও করেছেন। ৭-৮ বছরে ভারতীয় দলকে ১০টি ট্রফি জিতিয়েছেন তিনি। ১৯৫৩ এবং ১৯৫৫ সালে তার দলে থাকাকালীনই প্রথমবার ডুরান্ড কাপ এবং রোভার্স কাপ জয় করে মোহনবাগান।
সবুজ-মেরুণ জার্সি গায়ে ইন্দোনেশিয়া, হংকং এবং সিঙ্গাপুরে বিদেশ সফরে গিয়ে সেই সফরে সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকা জায়গা করে নিয়েছিলেন বদ্রু বাবু। কলকাতার বাকি দুই প্রধানের বিরুদ্ধে মোট ৯ গোল আছে তারা । এছাড়া ১৯৫৩ এবং ১৯৫৫ সালে বাংলার হয়ে সন্তোষ ট্রফিও জিতেছেন। ফুটবল ছাড়ার পর ১৯৬১ সালে বাংলার কোচিং করিয়ে ফের নতুন ভূমিকায় সন্তোষ ট্রফি জয়ের স্বাদ পান। এরপর তার জহুরীর মতো চোখ পাদ-প্রদীপের অল্পয় নিয়ে আসে মানস ভট্টাচার্য এবং বিদেশ বসুদের মতো ফুটবলারদের। ২০০৯ সালে ক্লাবে অবদানের জন্য মোহনবাগান রত্নও পান তিনি।