বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে এখন পাকিস্তানও আগ্রহ দেখাচ্ছে। নয়া দিল্লীতে পাকিস্তানের হাই কমিশনার হিসেবে কাজ করা অবসরপ্রাপ্ত কূটনীতিবীদ আবদুল বাসিত তৃণমূল কংগ্রেস আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছে। আবদুল বাসিত তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাংলার বাঘিনী আখ্যা দিয়ে আরব নিউজে একটি লেখনী তে লিখেছেন যে, তিনি ২০১৫-২০১৬-এর মার্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সান্নিধ্যে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন।
আবদুল বাসিত ২০১৬ সালে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের সময় কলকাতায় এসেছিলেন। তিনি লেখেন, প্রথম বৈঠকে দিদি নিজের নম্রতা, রাজনৈতিক কুশলতা এবং বুদ্ধিমতার পরিচয় দিয়েছিলেন, আর সেটি ওনার মনে ছাপ ফেলেছে। আবদুল লেখেন, আমি এই বৈঠক সব সময় মনে রাখব। সেই সময় কাশ্মীরি আলগাওবাদীদের সঙ্গে সাক্ষাতের কারণে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্কে ফাটল ধরেছিল। আবদুল বাসিত জানান, ভারতের কড়া মনোভাবের কারণে পাকিস্তান স্তম্ভিত ছিল।
আবদুল বাসিত আরও লেখেন, ওই বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে বলেছিলেন যে ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্কের উন্নতি করতে কি করতে হবে। তিনি লেখেন, বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন বিষাক্ত হয়ে গিয়েছে, আর ভারতে এখন একজনই নেতা আছেন, যিনি বিজেপির বিরুদ্ধে লড়ার সাহস রাখেন। তিনি লেখেন, কংগ্রেস পার্টির নেতৃত্ব দিনদিন কমজোর হয়ে পড়েছে, আর তাঁদের ভবিষ্যৎও অন্ধকার।
তিনি কাশ্মীরি আলগাওবাদীদের কাশ্মীরের নেতা সম্বোধন করে বলেন, ওনাদের সঙ্গে আমার বৈঠককে নরেন্দ্র মোদী সরকার বড় ইস্যু বানিয়ে দিয়েছিল, আমরা এটা কোনদিনও কল্পনাও করেছিলাম না। তিনি লেখেন, আগের সরকার এই বৈঠক নিজেরাই আয়োজন করত। আবদুল বাসিত অভিযোগ করে বলেন, জম্মু কাশ্মীরে নভেম্বর ২০১৪ সালের নির্বাচনের কারণেই প্রধানমন্ত্রী মোদী এই কাজ করেছিলেন, আর এর কারণে বিজেপি সেখানে ২৫টি আসনও পেয়েছিল।
আবদুল বাসিত বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমার কথা খুব মন দিয়ে শুনেছিলেন আর নরেন্দ্র মোদী বিরোধী নেতা হওয়ার পরেও তিনি নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে কিছু বলেছিলেন না। আবদুল বাসিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রকৃত দেশভক্ত আর রাজনেতা বলে সম্বোধন করেন। আবদুল বাসিত পশ্চিমবঙ্গের কিছু প্রকল্পের কথাও উল্লেখ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা করেন। এছাড়াও আবদুল বাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পশ্চিমবঙ্গ আর সিন্ধ প্রদেশের অংশীদারিত্বের পরামর্শ দিয়েছিলেন, এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেটিতে রুচিও দেখিয়েছিলেন বলে দাবি করেন প্রাক্তন পাক কূটনীতিবীদ।
আবদুল বাসিত বলেছেন যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রস্তাবগুলি কেন্দ্রীয় বিদেশ মন্ত্রকের কাছে পাঠাতে বলেছিলেন। এরপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাসিতকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে, তিনি কলকাতার মটন বিরিয়ানি খেয়েছেন নাকি? এরপর মুখ্যমন্ত্রী নিজে আবদুল বাসিতের জন্য মটন বিরিয়ানি পাঠিয়ে দেন। প্রাক্তন কূটনীতিবিদ বলেন, এই ট্রিট কখনো ভোলার ছিল না।
Glowing endorsement of Mamata Banerjee from Pakistan. https://t.co/7Y8Vc5MnMm
— Abhijit Majumder (@abhijitmajumder) March 20, 2021
বলে রাখি, আবদুল বাসিত মাঝে মধ্যেই বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। একবার উনি এমন এক টুইট করেছিলেন, যার কারণে ওনাকে ট্রোলড হতে হয়েছিল। প্রসঙ্গত, তিনি সেই সময় নীল ছবির তারকা জনি সিনসের একটি দুঃখের ছবি পোস্ট করে লিখেছিলেন যে, কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা তুলে দেওয়ার পর কাশ্মীরের জনতার এই পরিস্থিতি হয়েছে। এছাড়াও তিনি এটাও স্বীকার করেছিলেন যে, হিজবুল মুজাহিদ্দিনের জঙ্গি বুরহানির মৃত্যুর পর তিনি শোভা দেকে একটি আর্টিক্যাল লিখে ভারতের বিরুদ্ধে প্রচার করতে বলেছিলেন।