বাংলাহান্ট ডেস্ক : রাজ্যে ঘটে চলেছে একের পর এক সন্ত্রাসের ঘটনা। পরপর ধর্ষণ, রামপুরহাট গণহত্যা, খুন, আনিস হত্যাকাণ্ড সব মিলিয়ে খুব একটা ‘ভালো’ নেই বঙ্গবাসী। হাইকোর্টে আইনজীবী থেকে শুরু করে বিধানসভায় বিধায়কদের হাতাহাতিও প্রশ্নের মুখে দাঁড়া করাচ্ছে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলাকে। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি এমন অবস্থায় দাঁড়িয়েছে যে ৩৫৬ ধারা জারি করার পক্ষে লাগাতার সওয়াল করছে বিরোধীরা। এবার এই ইস্যুতে রাজ্যের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়।
গত একমাসের মধ্যে রাজ্যের আটটি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। হাঁসখালি ধর্ষণ কাণ্ড, ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর খুনের ঘটনা, রামপুরহাট গণহত্যা কাণ্ড সহ আরও একাধিক মামলার তদন্তভার গিয়েছে সিবিআইয়ের হাতে। ফলে আরও ঘোরালো হয়ে উঠেছে পরিস্থিতি।
এই প্রসঙ্গে সুপ্রিমকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়ের বলেন, ‘হাইকোর্টের এহেন রায় এই ইঙ্গিতই দেয় যে, প্রশাসনের উপর থেকে বিশ্বাস এবং ভরসা হারাচ্ছে মানুষ। রাজ্যের প্রথম দায়িত্ব আইনের শাসন বাস্তবায়িত করা। যে অপরাধ করে তাকেই শাস্তি দেওয়া উচিত। কোনও রকম বাছবিচার প্রযোজ্য নয়। মানুষ রাজ্যের প্রশাসনের উপর থেকে আস্থা হারাচ্ছে। জনগনকে আস্থা বজায় রাখার সুযোগই দিচ্ছে না তারা। অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর ভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রশাসন কঠোরভাবে কাজ করলেই মানুষের প্রশাসনের উপর আস্থা ফিরে আসবে।’
রাজ্যে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। ‘কোনও কিছু ঘটলে পুলিশ তদন্ত করতে পারবে কি না তা নিয়ে জনগণের সন্দেহ রয়েছে। রাজ্য প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ নিলে বিশ্বাস ফিরে আসবে। বীরভূমে ৯ জনকে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল, তখন পুলিশ কিছুই করেনি। ছাত্রনেতা আনিস খানের হত্যার সময় আনিসের বাবা জানিয়েছিলেন যে পুলিশ মেরেছে, তাও কোনও সেরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’ সুপ্রিমকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতির এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে অবশ্য কোনও জবান এখনও দেয়নি রাজ্য সরকার। তবে সুপ্রিমকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি তথা পশ্চিমবঙ্গের মানবাধিকার কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যানের এহেন মন্তব্যে যে চুড়ান্ত অস্বস্তিতে রাজ্য সরকার, তা নতুন করে বলে দিতে হয় না।