বাংলা হান্ট ডেস্ক : ফের চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় (Jadavpur University)। এবার বকরি ঈদের আগের দিন ও পরের দিন রয়েছে। আর এর প্রতিবাদেই ফুঁসে উঠেছে মুসলিম ছাত্রদের একাংশ। তাঁদের দাবি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইচ্ছাকৃত এই ঘটনা ঘটিয়েছে যাতে তাঁরা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে উৎসবে অংশ নিতে না পারেন। এর প্রতিবাদে ফেসবুকে সাগির হুসেন নামের এক ব্যক্তি একটি পোস্ট করেন। তিনি নিজেকে যাদবপুরের প্রাক্তনী বলে দাবি করেছেন
কী লিখেছেন সাগির? ওই ব্যক্তি ফেসবুকে লেখেন, ‘বিজেপির দালাল সুরঞ্জন দাস যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা রেখেছে বকরী ঈদ এর আগের দিন এবং পরের দিন। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন বিল্ডিং এর সামনে বড়ো মাঠ আছে, ছেলেমেয়েরা চাঁদা তুলে গরু কিনে ওখানে কুরবানী দিক। রান্না ভিসি এর অফিসে রান্নাঘর এ হবে, ওখানে যে ফ্রিজ আছে সেখানে কাঁচা মাংস রাখা হবে।’
তিনি আরও লেখেন, ‘ভিসি রুমের অ্যান্টি চেম্বারে ভিসি কে ডেকে বসিয়ে খাইয়ে দেওয়া যাবে। এটা আমার দায়িত্ব। কোনো ঝামেলাই নেই, সিম্পল সমাধান. ক্যাম্পাস এর ধর্ম নিরপেক্ষ শিক্ষক সংগঠন এর কোনো নেতা কিছু বললে তাদের জামার কলার ধরার দায়িত্ত্ব আমার। ভিসি কে হোয়াটসঅ্যাপ করে একই কথা জানিয়েছি, আপডেট দেবো আবার।’
মুসলিম ছাত্রছাত্রীদের দাবি, বছরে তাঁদের মূল উৎসব দুটি—একটি ঈদ-উল- ফিতর, আর অন্যটি ইদ-উল- আযহা। এই দুই উৎসবে যোগদানের জন্য দূরদূরান্তে থাকলেও যে, যাঁর বাড়িতে ফিরে যান। মাদ্রাসা ,স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের মুসলিম সম্প্রদায়ের পড়ুয়ারা এই উৎসবকে সাড়ম্বরে পালন করে থাকেন। বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে সেমিস্টার পরীক্ষা। সেই পরীক্ষার দিনক্ষণও এই উৎসবের আগে ও পরে করা হয়। এতে মুসলিম সম্প্রদায়ের উৎসবকে মান্যতা দেওয়া হচ্ছে না।
তাঁদের আরও দাবি, ঈদ-উল-ফিতর এবং ঈদ-উল-আযহার প্রস্তুতি শুরু হয় আগে থেকেই। ঈদের পরের দিনেও উৎসবের একটা রেশ থাকে। তাছাড়া ঈদ-উল-আযহা তিন দিন ধরে চলে। ইসলাম ধর্মের মূল এই উৎসবের ছুটিকে কেন মান্যতা দেওয়া হচ্ছে না, সেই নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে। দুই ঈদের ছুটি আরও বাড়ানো যায়, সেদিকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নজর দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন, মুসলিম সম্প্রদায়ের ছাত্রছাত্রী, শিক্ষকশিক্ষিকা ও বিশিষ্ট মহল।
ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, অনেকে উত্তর বঙ্গে থাকেন, কিন্তু পড়াশোনা তাঁদের কলকাতায়। তাহলে তারা উৎসব পালন করবে কী ভাবে, আর পরীক্ষাই-বা কীভাবে দেওয়া সম্ভব হবে। মুসলিম সম্প্রদায়ের এই দুই উৎসবের তারি’ নিয়ে উদাসীন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ঈদের আগে ও পরের দিনটি যাতে কোনও ভাবে পরীক্ষা না হয়, তার জন্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকেও লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তরের ছাত্র মেহেবুব হোসেন লস্কর বলেন, ঈদের আগে ও পরের দিন পরীক্ষা এই প্রথম নয়, এর আগেও হয়েছে। আমাদের পরীক্ষা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, উৎসবও গুরুত্ব পূর্ণ। পড়ুয়াদের স্বার্থে ঈদের আগে ও পরের দিন পরীক্ষা না রাখলেই ভালো হয়। এই বিষয়টি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাপ্রাপ্ত উপাচার্য আশিষ চট্টোপাধ্যায় বলেন, স্নাতকোত্তরের বিষয়গুলির পরীক্ষা নির্ধারণ করে বিভাগীয় প্রধানরা। পড়ুয়াদের সমস্যার বিষয়টির দিকে নজর দিতে বলা হয়েছে। বিভাগীয় প্রধানরাই বিষয়টি ঠিক করবে।