বাংলাহান্ট ডেস্ক : জোৎস্না কিসকু সাঁওতালি ভাষায় উচ্চমাধ্যমিকে (Higher Secondary Examination) প্রথম স্থান অধিকার করে সবাইকে চমকে দিয়েছে। দিনমজুর বাড়ির সন্তান জোৎস্না সাঁওতালি ভাষায় ৪৮৪ নম্বর পেয়ে রাজ্যের মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করেছে। শুধু জঙ্গলমহলের নয়, জোৎস্না এখন বাঁকুড়ার (Bankura) গর্ব।
বাঁকুড়ার রাইপুরের পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মু বিদ্যালয়ের হস্টেলে থেকেই প্রথম থেকে পড়াশোনা করছে জোৎস্না। স্কুলের অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পাশাপাশি পড়াশোনায় নিয়মিত জোৎস্নাকে সাহায্য করেছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক কৌশিক চট্টোপাধ্যায়। কাঠগড়া গ্রামের বাসিন্দা জোৎস্না এখন বহু পিছিয়ে পড়া পরিবারের মেয়েদের কাছে অনুপ্রেরণা।
আরোও পড়ুন : ল্যান্ডলাইন অতীত! স্মার্টফোনের জমানায় ২৪৪১১৩৯’র বদলে কী হত? অঞ্জন বলছেন…
যে সময় এই ফলাফল ঘোষণা করা হচ্ছিল সেই সময় বাবা-মায়ের সাথে মাঠে ধান কাটতে ব্যস্ত ছিলেন জোৎস্না। তার দাদা ছুটে গিয়ে বোনকে এই সুসংবাদ দেন। জোৎস্না জানিয়েছে, “আমরা এতটাই গরীব বাবা একদিন দিনমজুরির কাজে না গেলে আমাদের সংসার চালানো খুব জটিল হয়ে যায়। মা-বাবা যদি আমাকে পড়াতে চান তাহলে ভবিষ্যতে শিক্ষিকা হব এটাই আমার ইচ্ছা।”
আরোও পড়ুন : বাবা পরিযায়ী শ্রমিক, মা দিনমজুর! উচ্চমাধ্যমিকে অভাবনীয় সাফল্য প্রীতমের, হতে চান IAS
এই কৃতি ছাত্রীর বাবা শুকদেব কিসকু এবং মা শর্মিলা দেবী জানাচ্ছেন যে তারা সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করবেন মেয়ের স্বপ্ন পূরণ করার। বাঁকুড়ার জ্যোৎস্না ফের একবার প্রমাণ করে দিলেন স্বপ্ন পূরণের জন্য অর্থ কখনো অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় না। শুধু দরকার ইচ্ছা শক্তি আর পরিবারের মানুষের অনুপ্রেরণা।
পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মু আবাসিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণী থেকে পড়াশোনা করছে জ্যোৎস্না। এই স্কুল থেকেই সে গোটা রাজ্যে হয়েছে প্রথম। চমকপ্রদ ফলের মাধ্যমে আদিবাসী সম্প্রদায়ের পড়ুয়াদের কাছে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন জ্যোৎস্না। সব মিলিয়ে বলা যায়, নেটপাড়া থেকে শুরু করে সংবাদ মাধ্যমের হেডলাইনে এখন শুধুই জোৎস্না।