বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত রবিবার অর্থাৎ ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবসের দিন থেকে ফের একবার আফগানিস্তানের বুকে উড়তে শুরু করেছে তালিবানি নিশান। এখন গোটা আফগানিস্তান তালিবানদের দখলে। তবে এই অসহায় পরিস্থিতি থেকে কবে নিস্তার মিলবে কেউ জানেনা। গোটা বিশ্ব কাঁপে তালিবানদের ভয়ে। কিন্তু শুরু থেকেই আফগানিস্তানের এই হঠাৎ পট পরিবর্তনকে একপ্রকার খোলাখুলিভাবেই সমর্থন জানিয়ে এসেছে দুই প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান আর চীন।
কূটনীতিবিদের মতে আফগানিস্তানে তালিবানদের এই হঠাৎ উত্থানে দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ায় এক ঝটকায় অনেকখানি শক্তিশালী হয়ে উঠেছে ইসলামাবাদের হাত। অন্যদিকে আফগানিস্তানে তালিবান শাসনের বৈশ্বিক স্বীকৃতি দিতে চেয়ে চীন এবং পাকিস্তান যৌথভাবে চেষ্টা চালাচ্ছে। আর চীন এবং পাকিস্তানের এই অতিরিক্ত তালিবান প্রীতি একেবারেই ভালো চোখে দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা। তাই উভয় দেশকেই দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির বিষয়ে আগে থেকে সতর্ক করা হয়েছে ।
গত ১৫ আগস্ট তালিবানরা কাবুল দখল করার পর থেকেই চীন এবং পাকিস্তান আফগানিস্তানে যোগাযোগ বৃদ্ধি করতে শুরু করেছে। অন্যদিকে, তালিবানদের প্রত্যাবর্তনের ফলে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই উত্থানের ফলে আল কায়েদা এবং ইসলামিক স্টেটের মতো জঙ্গী গোষ্ঠীগুলির ফের একবার মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
সম্প্রতি একটি রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে। সেখানে পাকিস্তানি বিশ্লেষকের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে যে পাকিস্তান প্রায়ই বলেছে যে আফগানিস্তানে তার কোন পছন্দের মিত্র নেই, কিন্তু তা সত্ত্বেও পাকিস্তান সরকারকে তালিবানদের উত্থান নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী মনে হচ্ছে।
উল্লেখ্য তালিবানদের কাবুল দখলের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছিলেন ‘আফগান জনগণ পশ্চিমের “দাসত্বের শেকল ভেঙে ফেলেছে।’ রাশিয়া এবং চীন ঘনিষ্ঠ পাকিস্তান তালিবানদের সঙ্গে যৌথ কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার জন্য সন্ত্রাসী হামলা রোধ করা এবং মহিলাদের শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের অনুমতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে আফগানিস্তানে তালিবানদের সমর্থন আদায় করতে চাইছেন।
এপ্রসঙ্গে ব্রিটেন, জাতিসংঘ এবং যুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তানের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত মালেহা লোধী বলেছেন, ‘পাকিস্তান তার প্রতিবেশী দেশে শান্তি থেকে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয় এবং সংঘাত এবং অস্থিতিশীলতার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’ সেইসাথে তাঁর আরও সংযোজন, ‘পাকিস্তান যদি তালিবানদের কার্যকরীভাবে শাসন করার পাশাপাশি অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর সাথে সংহতি স্থাপন করে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারে তবেই পশ্চিম সীমান্তে স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে। তবে তারা, যদি তা করতে অসমর্থ হয়, তবে আফগানিস্তান একটি অনিশ্চিত এবং অস্থিতিশীল ভবিষ্যতের সম্মুখীন হবে। যা পাকিস্তানের পক্ষে একেবারেই ভালো হবে না।’