বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দেখতে দেখতে পেরিয়ে গিয়েছে চার মাস। কিন্তু তারপরেও এখনও তিলোত্তমার বিচার অধরা। তদন্তের গতিও যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরই দাঁড়িয়ে আছে এখনও। এরই মধ্যে প্রকাশ্যে এলো আরজিকরের (RG Kar Case) তরুণীর ধর্ষণ-হত্যা কান্ডের সিএফএসএল অর্থাৎ সেন্ট্রাল ফরেনসিক ল্যাবের রিপোর্ট (CFSL Report)।
আরজিকরের (RG Kar Case) নির্যাতিতার ধর্ষণ-খুন নিয়ে সামনে এল সিএফএসএল রিপোর্ট
বারো পাতার ওই রিপোর্টে বলা হচ্ছে, যেখানে ২৪ ঘন্টা হাসপাতাল খোলা থাকে সেখানে সকলের নজর এড়িয়ে সেমিনার হলে প্রবেশ করা এবং অপরাধ করে বেরিয়ে যাওয়া কি আদৌ সম্ভব? আর সেটা কেউ জানতে পারবে না এমনটাই বা হয় কি করে? বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর সেমিনার হলে যে ম্যাট্রেসের উপর নির্যাতিতার দেহ পড়েছিল সেখানে ধর্ষণ এবং খুনের (RG Kar Case) সময় কোনো ধস্তাধস্তির চিহ্নও মেলেনি।
যেহেতু সেমিনার রুমে প্রতিরোধের কোন চিহ্ন নেই তাহলে কি খুন এবং ধর্ষণ অন্য কোথাও করে দেহ সেমিনার হলে ফেলে রাখা হয়েছিল? এখানেই উঠছে একাধিক প্রশ্ন। তাহলে কি ‘ক্রাইম সিন’ বদলানো হয়েছিল? এপ্রসঙ্গে জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত মাহাতো সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, ‘৪ ও ৫ নম্বর পয়েন্ট দেখে আমাদের যা মনে হচ্ছে ওই জায়গায় ম্যাট্রেসে কোনও ধস্তিধস্তির কোনও চিহ্ন নেই।’
এছাড়াও তিনি বলেছেন,’এটা আমার আগেও বলেছি। আর এখন সিএফএসএল রিপোর্টও সেটাই বলছে। প্রথমত সেমিনার রুমে কোনো ধস্তাধস্তির চিহ্ন নেই। তাছাড়া ওই সেমিনার রুমে কেউ ঢুকবেন আর সেটা কেউ দেখতে পাবেন না এই সম্ভাবনাও প্রায় নেই বললেই চলে।’ অনিকেত জানিয়েছেন এই বিষয়েও উল্লেখ করা হয়েছে নির্যাতিতার ওই CFSL রিপোর্টে।
ওই রিপোর্ট অনুযায়ী চিকিৎসকদের একাংশের দাবি ম্যাট্রেস পরিপাটি করে বিছানো। জলের বোতল। ল্যাপটপ। পরে কি এগুলোর পজিশন বদলানো হয়েছিল? তাছাড়া প্রশ্ন উঠছে অভিযুক্ত সঞ্জয় রায় সেমিনার রুমে ঢুকল অথচ সেটা আর কেউ জানল না এটা কীভাবে সম্ভব? আদৌ সঞ্জয় রায় কি একা ছিল নাকি, আরও কেউ ছিল। তরুণী চিকিৎসককে কি ওখানেই খুন করা হয়েছিল নাকি অন্য কোথাও? তাহলে কি তথ্য় প্রমাণ লোপাট করা হয়েছে?
আরও পড়ুন: এভাবেও অত্যাচার করতে পারেন স্ত্রী! ডিভোর্সের মামলায় বিরাট পর্যবেক্ষণ হাইকোর্টের
চলতি বছরের ৯ আগস্ট কলকাতার আরজিকর (RG Kar Case) হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিল্ডিং -এর চারতলার সেমিনার রুম থেকে উদ্ধার হয়েছিল তরুণী চিকিৎসকের রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ। এই ঘটনার ৯০ দিন পেরিয়ে গেলেও চার্জশিট পেশ করতে পারিনি সিবিআই। যার ফলে ইতিমধ্যেই তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ খুনের মামলায় জামিন পেয়েছে আরজিকরের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মন্ডল।
আরজিকর কান্ডের পর রাজ্যে আরও একাধিক নির্মম ধর্ষণ হত্যাকান্ড ঘটে গিয়েছে। তার মধ্যেই দুটি ঘটনায় দু’মাসের মাথায় অপরাধীদের ফাঁসির শাস্তি হয়েছে। অথচ আরজিকর কান্ডের মত এত বড় একটা ঘটনা নিয়ে এখনও উদাসীন সিবিআই। এই কারণে সিবিআই এর তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন নির্যাতিতার বাবা।
তাঁর কথায়, ‘খুবই দুঃখজনক ঘটনা। সিবিআই আগেও লিখে দিয়েছিল সন্দীপ ঘোষ এবং অভিজিৎ মন্ডলের বিরুদ্ধে ৯০ দিনের মধ্যেই যা করার করব। তদন্ত যে ঠিকমতো হয়নি তার প্রমাণ পাওয়া গেল। সিবিআই এর ওপর এবার হতাশ হচ্ছি। আমরা আদালতে যাব। আদালত ছাড়া তো আমাদের আর কোন রাস্তায় খোলা নেই’।